Advertisement
Advertisement

ধূমপানের প্রলোভন দেখিয়ে বৃদ্ধকে খুন করে গয়না ছিনতাই, পলাতক যুবক

মাদুর দিয়ে মৃতদেহ মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে দেয় অভিযুক্ত।

Thief murders elderly man in Nadia
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:September 11, 2018 9:19 pm
  • Updated:September 11, 2018 9:19 pm

বিপ্লব দত্ত, কৃষ্ণনগর: বছর সত্তরের এক বৃদ্ধকে ঘরে ডেকে এনে খুনের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। মাদুর দিয়ে মৃতদেহ মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে বাড়ি থেকে চম্পট দেয় অভিযুক্ত। খবর পেয়ে দরজা ভেঙে খাটের নিচ থেকে  বৃদ্ধের মৃতদেহ করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের আগে ওই বৃদ্ধের গলার সোনার চেন ও সোনার আংটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নদিয়ার তাহেরপুর থানার বারাসত গ্রাম পঞ্চায়েতের খ্রিস্টান পাড়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।

[ছাত্রের ফেসবুকে ‘ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট’ পাঠিয়েছে মোমো! চাঞ্চল্য মহিষাদলে]

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত ওই বৃদ্ধের নাম বাদল মন্ডল (৭০)। তাহেরপুরের খ্রীস্টান পাড়াতেই তাঁর বাড়ি।  হৃদরোগে ভুগছিলেন বাদলবাবু । ধূমপানে ছিল নিষেধাজ্ঞা। যদিও বাড়ি থেকে বেরিয়ে  মাঝেমধ্যেই লুকিয়ে ধূমপান করতেন ওই বৃদ্ধ। সন্ধের পর বাড়ির কাছের রাস্তায় তাঁকে ধূমপান করতে  দেখেছেন এলাকার অনেকেই । রবিবার সন্ধেতেও ধূমপান করছিলেন বাদলবাবু। শেষবার তাঁকে দেখা গিয়েছিল সাত-আটটি বাড়ি দূরের বাসিন্দা রকি বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলতে। তারপরই নিখোঁজ হয়ে যান। রাতেও বাড়ি ফেরেননি। পরের দিনও বিকেল গড়িয়ে গেলেও, বাদল মণ্ডলের আর খোঁজ  পাওয়া যায়নি । সোমবার সন্ধের পর রকি বিশ্বাসের বাবা বাবু বিশ্বাস ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যান। তিনিই বাদল মণ্ডলের পরিবারকে জানান, তাঁর ছেলেই বৃদ্ধকে খুন করে বাড়ি থেকে পালিয়েছেন। এমনকী, মৃতদেহ যে রকি তার ঘরের খাটের নিচে রেখেছে, সে খবরও দেন। সঙ্গে সঙ্গে এই ঘটনার কথা জানানো হয় তাহেরপুর থানায়। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই বৃদ্ধকে মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে ও পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। তবে খুনের আগে ধস্তাধস্তি হয়েছিল সম্ভবত। মৃতের শরীরে কিছু কাটা-ছেঁড়ার দাগ রয়েছে। গলার সোনার চেন ও হাতের সোনার আংটিও ছিল না। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, বিড়ি বা সিগারেটের প্রলোভন দেখিয়েই ওই বৃদ্ধকে নিজের ঘরে ডেকেছিল রকি। এরপর তাঁর সোনার চেন ও আংটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে রকি। সম্ভবত বাধা দিতে গিয়েই ধস্তাধস্তি হয়। তখনই ভারী কিছু দিয়ে  রকি ওই বৃদ্ধের মাথায় আঘাত করে খুন করে বলে অনুমান। মাদুরে মুড়ে খাটের নিচে সারারাত রাখা ছিল মৃতদেহ। সোমবার সকালে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে পালায় রকি।

Advertisement

[বিএসএফ জওয়ানদের মারধরে যুবকের মৃত্যু, চাঞ্চল্য বাগদায়]

পুলিশ জানাচ্ছে, একসময় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করত অভিযুক্ত। তবে ইদানিং বিশেষ কাজকর্ম করত না। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এক ছেলে থাকে তার দাদু ও ঠাকুমার কাছে। অভিযুক্ত যুবক পালানোর পর দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালান স্ত্রী টিনা বিশ্বাস। রকির মা স্বপ্না বিশ্বাস জানিয়েছেন, “আমার বউমাই আমাকে পড়ে সব ঘটনা বলে।” মৃতের মেয়ে মেরি মণ্ডলের অভিযোগ, “আমার বাবাকে ধূমপানের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় রকি বিশ্বাস। রকির বউ মৃহদেহ দেখেও কেন চিৎকার করেনি তা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। আমার বাবার খুনির কঠোর শাস্তি চাই।” পুলিশ অবশ্য অভিযুক্তকে ধরতে না পেরে তার বাবা বাবু বিশ্বাস ও কাকা রবি বিশ্বাসকে থানায় ধরে নিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, বাবু বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রকির সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা চলছে। জেলা পুলিশ সুপার রুপেশ কুমার জানিয়েছেন, “ওই খুনের ঘটনায় রকির কাকা রবি বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রকিকে ধরার জন্য সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে।”

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ