Advertisement
Advertisement

শারদীয়া নয়, লক্ষ্মী-নারায়ণ পুজোয় আনন্দে মাতেন এই গ্রামের বাসিন্দারা

একই পাটাতনে তৈরি করা হয় লক্ষ্মী ও নারায়ণের যুগল প্রতিমা।

This Bankura village worships goddess Lakshmi instead of Durga
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:October 23, 2018 5:59 pm
  • Updated:October 23, 2018 6:03 pm

দেবব্রত দাস, খাতড়া: এই গ্রামে দুর্গাপুজো নেই। তাই দুর্গাপুজোর আনন্দ মিটে যায় লক্ষ্মীপুজো। তবে শুধু লক্ষ্মী নন, সঙ্গী নারায়ণ। লক্ষ্মী-নারায়ণ যুগলের প্রতিমা মূর্তির পুজো হয় খাতড়ার ডোমনাশোল গ্রামে। দুর্গোৎসবের আমেজ অনেকটাই ফিরে আসে লক্ষ্মীপুজো। একটা পুজো মিলিয়ে দেয় গোটা গ্রামকে।

[মাটি নয়, শিক্ষক শিল্পীর হাতযশে তৈরি হল পঞ্চশস্যের লক্ষ্মী]

Advertisement

খাতড়া থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে ছোট্ট গ্রাম ডোমনাশোল। প্রায় ১৪০ টি পরিবারের বসবাস। তারমধ্যে গোয়ালা, বাউরি সম্প্রদায়ের লোকজনের সংখ্যায় বেশি এই গ্রামে। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গ্রামেরই একটি মন্দিরে লক্ষ্মীনারায়ণের পুজো হয়। একশো বছরের বেশি পুরানো এই পুজো। গ্রামের সব সম্প্রদায়ের মানুষের একমাত্র বড় উৎসব এই লক্ষ্মীপুজো। শতাব্দী প্রাচীন এই পুজোর প্রস্তুতিকে ঘিরে ডোমনাশোল গ্রামে এখন তাই সাজো সাজো রব। হবে নাই বা কেন। রাত পোহালেই যে পুজো শুরু হয়ে যাবে।

Advertisement

কীভাবে সূচনা হয়েছিল শতাব্দী প্রাচীন এই লক্ষ্মীপুজোর? ডোমনাশোল গ্রামের বাসিন্দা গুরুপদ মণ্ডল বলেন, “আশপাশের গ্রামে দুর্গাপুজো হয়। কিন্তু আমাদের গ্রামে দুর্গাপুজো হয় না। বাবা, ঠাকুরদার কাছ থেকে শুনেছি যে আমাদের পূর্বপুরুষরা এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। তবে এককভাবে কেউ এই পুজো করেননি। আমাদের পূর্বপুরুষরা গ্রামে একটা পুজো হোক এই ইচ্ছেতেই এই পুজো শুরু করেছিলেন। সেই থেকে এই পুজো বংশ পরম্পরায় গ্রামের মানুষ মিলিতভাবে করে আসছেন।” গুরুপদবাবু বলেন, “লক্ষ্মী ও নারায়ণ যুগল প্রতিমা একই পাটাতনে তৈরি করা হয়। তাদের দুই পাশে দু’টি পরি বা সখি থাকে। প্রায় ৬ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট প্রতিমার পুজো করা হয়। গ্রামের একটি পুকুর থেকে যে আয় হয় তার থেকে পুজোর খরচ কিছুটা ওঠে। বাকি টাকা গ্রামের মানুষ চাঁদা তোলা হয়। পুজোর দিন গ্রামের নতুনবাঁধ নামক একটি পুকুর থেকে ঘট আনা হয়। অষ্টমাঙ্গলিক আচার অনুষ্ঠানের পর বিসর্জন দেওয়া হয় নতুনবাঁধে। পুজো চলাকালীন মন্দিরের সামনে গ্রামের ছেলে মেয়েদের অভিনীত একটি যাত্রানুষ্ঠান হয়। পুজোর বাজেট প্রায় ৪০ হাজার টাকা।”

পুজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা শিক্ষক মণিকাঞ্চন মণ্ডল বলেন, “আমাদের গ্রামের এই পুজো একশো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। শুনেছি, আমাদের পূর্বপুরুষ অবিনাশ মণ্ডল, নকুল মণ্ডল, ইন্দ্র মণ্ডল-সহ অনেকে এই পুজো শুরু করেছিলেন। পুজো খুবই ধুমধামের সঙ্গে হয়। বছরভর গ্রামের মানুষ এই পুজোর অপেক্ষায় থাকেন। পুজোকে ঘিরে গ্রামের মানুষ আনন্দোৎসবে মেতে ওঠেন।” ডোমনাশোল গ্রামে দুর্গাপুজো নেই। লক্ষী আরাধনাকে ঘিরেই তাই দুর্গাপুজোর আনন্দ পান এই গ্রামের মানুষ। দুর্গোৎসবে দূর থেকেই ঢাক, বাদ্যির আওয়াজ ভেসে আসে এই গ্রামে। লক্ষীপুজোর জৌলুস আর আনন্দ ভুলিয়ে দেয় দুর্গোৎসব না থাকার বেদনাকে।

[ পুলিশি প্রহরায় সিন্দুক থেকে ‘মুক্তি’, পুজো নিতে আসেন জামুড়িয়ার স্বর্ণলক্ষ্মী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ