অরূপ বসাক, মালবাজার: অগ্নিকে সাক্ষী রেখে সারা জীবন একসঙ্গে চলার প্রতিজ্ঞা নেন নবদম্পতিরা। কিন্তু মালবাজার উত্তর কলোনির এই নবদম্পতি বাকি সবাইকে ছাপিয়ে গেলেন তাঁদের কর্মকাণ্ডে। বউভাতের দিনেই মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন নবদম্পতি সুকান্ত ঘোষ ও পৌলমী ঘোষ চৌধুরি। পেশায় অধ্যাপক ড. সুকান্ত ঘোষ কোচবিহার কলেজে পলিটিক্যাল সায়েন্সের অধ্যাপনা করেন। তিনি বলেন, ‘ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশনের জন্য মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকারের আজ স্বপ্নপূরন হল। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন আজ পূরন হল। আমার মৃত্যুর পর উওরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে জমা দেওয়া হবে আমার দেহ। যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাজে লাগবে।’ তাঁর অনুরোধ, উওরবঙ্গে অঙ্গ সংরক্ষণ ও প্রতিস্থাপন ব্যবস্থা চালু হোক। তাহলে দুঃস্থরোগীদের সুরাহা হবে।
[চাঁদার নামে জুলুম, এবার হেনস্তার শিকার খোদ সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়]
জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার উওর কলোনির ১০ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুকান্ত ঘোষ (৩৩) ও পৌলমী ঘোষ চৌধুরি (২৫)। বুধবার ২৪ জানুয়ারি ছিল তাঁদের বউভাত। বাড়িতে নিমন্ত্রিতদের ভিড়, সুস্বাদু পঞ্চব্যঞ্জনের সুবাসে ম ম করছে গোটা বাড়ি। তার মধ্যেই আত্মীয়-পরিজনকে সাক্ষী রেখেই এদিন মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেন তাঁরা। নববধুর বাড়ি জলপাইগুড়ির নিউটাউন পাড়ায়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক রাজা বৈদ্য এবং ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশনের কো-অর্ডিনেটর শুভময় দে। নবদম্পতিদের হাতে ব্লাড ডোনার অর্গানাইজেশন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে নজিরবিহীন মরণোত্তর দেহদানের পদক্ষেপের জন্য শুভেচ্ছা জানানো হয় ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
[আমার রাজ্যে পদ্মাবত মুক্তি পেলে খুশি হব, জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী]
অন্যদিকে, নববধূ পৌলমী চৌধুরি জানিয়েছেন, ‘ফেসবুক থেকে আমাদের পরিচয়। সাড়ে তিন বছর প্রেম। এরপর গত ২২ জানুয়ারি আমাদের বিয়ে হয়।’ বিয়ের আনন্দের চেয়েও এই মহৎ কাজ অনেক শান্তি দিয়েছে তাঁকে। বলেন, ‘আজ খুব ভাল লাগছে দেহদানে অঙ্গিকারবদ্ধ হতে পেরে। সবার এমন সুযোগ হয় কোথায়’।