সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রসগোল্লা কার? বাংলার না ওড়িশার? দীর্ঘদিন ধরে চলা সেই তর্কে দাঁড়ি পড়েছে সম্প্রতি। রসগোল্লা বঙ্গেরই, গোহারান কলিঙ্গ জানিয়ে দিয়েছে জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা জিআই কর্তৃপক্ষ। আর রসালো মিষ্টান্নর জিআই রেজিস্ট্রেশন পশ্চিমবঙ্গের ঘরে ঢুকতেই আপাতত নবীনচন্দ্র দাশের অমোঘ সৃষ্টিতে মজে বঙ্গবাসী। তবে তাতেও বিতর্ক রয়েছে। কলকাতার নবীন দাশ না ফুলিয়ার হারাধন ময়রা, রসগোল্লার আবিষ্কর্তা কে তা নিয়েও রয়েছে বিস্তর তর্ক। কিন্তু তার আগে এই তথ্য জানা আছে কি, দেশের সর্বপ্রথম জিআই রেজিস্ট্রেশন পায় বঙ্গেরই এক অনন্য সম্পদ। শুনতে অবাক লাগলেও ঘোর বাস্তব। প্রথম জিআই নথিভুক্ত বস্তু ছিল বিশ্ববিখ্যাত দার্জিলিং চা। স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এই ভূবনমোহিনী চা ২০০৪ সালে জিআই রেজিস্ট্রেশন পায়। শুধু দার্জিলিং চা-ই নয়, এমন বহু অমূল্য সম্পদ রয়েছে বাংলার ভাঁড়ারে যা দেশের মানচিত্রে এক স্বতন্ত্র জায়গা করে নিয়েছে।
[ওড়িশাকে হারিয়ে রসগোল্লার অধিকার পেল বাংলা]
দার্জিলিং চা বা হাল আমলের রসগোল্লা শুধু নয়, বাংলার এমন ১৩টি বিখ্যাত জিনিস পেয়েছে জিআই রেজিস্ট্রেশন। নকশি কাঁথা, শান্তিনিকেতনের চামড়ার দ্রব্য, লক্ষ্মণভোগ আম, খিরসাপাটি বা হিমসাগর আম, মালদার ফজলি আম, শান্তিপুরের তাঁত, বালুচরী শাড়ি, ধনিয়াখালি শাড়ি, জয়নগরের মোয়া, বর্ধমানের সীতাভোগ ও মিহিদানা, গোবিন্দভোগ ও তুলাইপাঞ্জি চালের মতো জিনিসগুলিও রয়েছে জিআই রেজিস্ট্রশনের তালিকায়। সুতরাং শুধু রসগোল্লা নিয়ে লাফালাফি করলেই হবে না, বাংলার গর্বের এই জিনিসগুলিও বিশ্ববন্দিত। তবে রসগোল্লা জাতে উঠতেই এখন বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে স্থানীয় মিষ্টান্নগুলির জিআই-য়ের জন্য দাবি জোরাল হয়েছে। যেমন কাটোয়ার ক্ষীরের পান্তুয়া ও রানাঘাটের ছানার পান্তুয়া, চন্দননগরের জলভরা তালশ্বাস, কৃষ্ণনগরের সরভাজা-সরপুরিয়া, শান্তিপুরের নিখুতি, বহরমপুরের ছানাবড়া, শক্তিগড়ের ল্যাংচা, মালদার রসকদম্বের জন্য জিআই ট্যাগের দাবি উঠেছে। সেগুলি আদৌ বিবেচ্য হবে কিনা তা সময়ই বলবে। তবে বাংলার ভাঁড়ারের এই অমূল্য সম্পদগুলি যে অতুলনীয় তা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।