Advertisement
Advertisement

সবার ভাল চাইত ছেলে, শহিদ জওয়ানের স্মৃতিতে শ্মশানে প্রতিক্ষালয় গড়ছেন বাবা

ছেলের স্মৃতিতে অসাধ্যসাধন অসিত কর্মকারের।

This step of Martyr’s father will move your heart
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 2, 2018 5:20 pm
  • Updated:September 17, 2019 1:49 pm

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: মাওবাদী হামলায় শহিদ হয়েছিল ছেলে। নিহত জওয়ান অরূপ কর্মকারের বাবা এবার সমাজের জন্য ব্রতী হলেন। সরকার থেকে পাওয়া টাকা দিয়েই স্থানীয় শ্মশানে প্রতিক্ষালয় গড়ে নজির সৃষ্টি করলেন বাবা অসিত কর্মকার। শুক্রবার  খোড়ে নদীর তীরে করিমপুর আনন্দপল্লিতে তিন হাজার স্কোয়্যার ফুটের ওপর এই প্রতিক্ষালয়ের ছাদ ঢালাই হল। খরচ পড়ছে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা। এতদিন সৎকার করতে শ্মশানে আসা মানুষদের ঝড়, বৃষ্টিতে সমস্যায় পড়তে হত। এবার সেই সমস্যার সমাধান হবে বলে স্থানীয় মানুষের বক্তব্য।

প্রসঙ্গত, ২৪ এপ্রিল ছত্তিশগড়ের সুকমা জেলায় মাওবাদী হামলায় নিহত হন জওয়ান অরুপ কর্মকার (২৫)। তরতাজা তরুণের এভাবে চলে যাওয়াটাকে কেউ মেনে নিতে পারেননি। সে সময় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উজ্জ্বল বিশ্বাসরা মৃত জওয়ানের করিমপুর অভয়পুরের বাড়িতে আসেন। করিমপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই নিয়ে জওয়ানের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধার্ঘ্যও নিবেদন করা হয়। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার কর্মকার পরিবারের হাতে টাকা তুলে দেয়। সেই টাকায় গত নভেম্বর মাসে এই প্রতিক্ষালয় গড়ার জন্য জমি খুঁজছিলেন শহিদ জওয়ানের বাবা অসিত কর্মকার। করিমপুর দুই পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে আনন্দপল্লির শ্মশান। পঞ্চায়েতের কাছে অসিতবাবু এই প্রতিক্ষালয় গড়ার জন্য জমির আবেদন করেন। পঞ্চায়েত তাতে সায় দেয়। প্রতিক্ষালয় করার অনুমতি দেয়। শুরু হয় প্রতিক্ষালয় তৈরির কাজ। সেই মতো ভিত, পিলার হয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার ছাদ ঢালাই হয়। এখানে মার্বেলের মেঝে হবে।

Advertisement

[থমথমে অভয়পুরের অপেক্ষা, ওই বুঝি তেরঙ্গায় মুড়ে এল অরূপের দেহ]

প্রতিক্ষালয়ের সামনে জওয়ানের কংক্রিটের পূর্ণ অবয়বের একটি মূর্তি বসানো হবে বলে জানিয়েছেন অসিতবাবু। এই মূর্তিটি গড়ছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার জয়ী শিল্পী সুবীর পাল। তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে এমন জওয়ানের মূর্তি গড়ার দায়িত্ব পেয়ে আমি খুশি।’ সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতার ওই মূর্তিটি গড়তে পেরে উচ্ছ্বসিত শিল্পী। অসিতবাবু বলেন, ‘আমাদের ভাল রাখার জন্য চাকরিতে যায় অরুপ। তারপর দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। ওর শান্তির জন্য ওর স্মৃতির উদ্দেশ্যে তাই আমি, ওর মা, দাদা এটা করলাম।’ অসিতবাবু আরও বলেন, রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছ থেকে যে টাকা আমরা পেয়েছি তার অধিকাংশ টাকাটা দিয়েই এই প্রতিক্ষালয় গড়া হচ্ছে। প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। অরুপের নামেই এই প্রতিক্ষালয় হচ্ছে। উল্লেখ্য, এই শ্মশানেই অরুপের সৎকার করা হয়। সেই কথা বলতে বলতে চোখ ভিজে আসে অসিতবাবুর। জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘ও ওখানেই আছে। তাই ওর আত্মার শান্তির জন্য শ্মশানে প্রতিক্ষালয় গড়ার কথা মাথায় আসে। কত মানুষ আসে এই শ্মশানে। এবার তাঁরা একটু জিরিয়ে নিতে পারবে।’ ঘটনা প্রসঙ্গে করিমপুর দুই পঞ্চায়েত উপপ্রধান রমেন ঘোষ বলেন, ‘আমাদের কাছে প্রতিক্ষালয় করার জন্য আবেদন করে। আমরা তার জন্য অনুমোদন দিই।’

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ