অরূপ বসাক, মালবাজার: জঙ্গল থেকে নিয়ে আসা মাশরুম খেয়ে পরপর তিনজনের মৃত্যু। মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে মালবাজার এলাকার বনদপ্তরের সামসিং রেঞ্জের কুম্পাউন্ড বস্তিতে। মৃতদের নাম শ্যাম রাই(৬৩), আশা মায়া রাই(৬০) ও খালি ভুজেল। মাশরুমের তরকারি খাওয়ার ১০-১২ ঘণ্টা পর থেকেই তাঁদের বমি শুরু হয়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই মৃত্যু হয় তিনজনের। জঙ্গল থেকে নিয়ে আসা নিরীহ মাশরুম যে মৃ্ত্যু ডাকতে পারে, তা বোঝেননি বনবস্তির বাসিন্দারা। গোটা ঘটনায় এখন ওই মাশরুমকেই দুষছেন তাঁরা। এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বস্তিবাসী ইউসুফ ভাই জানান, বস্তির বাসিন্দা যুবক অন্তিম রাই মাশরুম নিয়ে এসেছিলেন। বস্তি লাগোয়া জঙ্গলেই তিন মাশরুম দেখতে পান। অভাব অনটেনর সংসারে দু’বেলা সবজির চিন্তা করতে হবে না ভেবে বাড়িতে নিয়ে আসেন সেই মাশরুম। বুধবারই জঙ্গলে গিয়েছিলেন অন্তিম। প্রতিবেশী খালি ভুজেলের বাড়িতে বেশ যত্ন করে মাশরুম রান্না হয়। দুই পরিবারের লোকজন আয়েশ করে সেই মাশরুমের তরকারি দিয়ে রাতের খাওয়াদাওয়া সারেন। তরকারির ভাগ থেকে বঞ্চিত হয়নি বাড়ির পোষ্য বিড়ালটিও। আচমকাই পরের দিন সকাল থেকে বমি করতে থাকেন বাড়ির কর্তা শ্যাম রাই। প্রথমে হজমের গোলমাল ভেবে কেউ বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাননি। তবে বারবার বমি করায় সকলেই চিন্তিত হয়ে পড়েন। তড়িঘড়ি শ্যাম রাইকে স্থানীয় মাল সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। ভরতির কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। এরমধ্যে বমি শুরু হয়েছে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী আশা মায়া রাইয়ের। তাঁরও শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পৌঁছনোর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এরমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রতিবেশী খালি ভুজেল। তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হলে শনিবার রাত এগারোটা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত রাই দম্পতির ছেলে অন্তিমবাবুই জঙ্গল থেকে মাশরুম তুলে এনেছিলেন। এদিকে পোষ্য বিড়ালটিরও মৃত্যু হয়েছে।
তবে রাই দম্পতি বা প্রতিবেশী খালি ভুজেল নয়। রান্না করা মাশরুম খেয়ে অসুস্থের তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। অসুস্থ হয়ে বাগডোগরার কাছে একটি নার্সিংহোমে ভরতি আছেন চেতন রাই(৩২) ও অমিত রাই(২৪)। গোটা ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.