অর্ণব দাস, বারাসত: বেআইনি গ্যাস কারখানায় বড়সড় বিস্ফোরণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার কেঁপে উঠেছিল আমডাঙার উলুডাঙা। বিস্ফোরণের তীব্রতায় যে বাড়িতে কারখানা চলছিল, বাড়িটিই ভেঙেচুরে গিয়েছে। বরাতজোরে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। ৩৪ নং জাতীয় সড়কের পাশে বেআইনিভাবে গ্যাস কারখানা চালানোর নেপথ্যে কে বা কারা, সেই প্রশ্নে গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, পুলিশ সব জানে। তেমনই অভিযোগ শোনা গেল এবার স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের গলায়। বিধায়ক রফিকুর রহমান সরাসরি পুলিশকে দায়ী করে বললেন, ”আমডাঙার আইসি-র মতো দুর্নীতি পরায়ণ পুলিশ অফিসার আমি আগে দেখিনি। তাঁর মদতেই সব হচ্ছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ সত্য।”
কোনও রাখঢাক নয়, সরাসরি আমডাঙা থানার আইসির নাম করে বিধায়কের বক্তব্য, ”জাতীয় সড়কের পাশে এই যে দিনের পর দিন ধরে বেআইনি কারখানা চলছে, সেটা আইসির মদতেই। আমি বার বার এবিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছি। সব পুলিশের কথা আমি বলছি না। কিন্তু আমডাঙার আইসি রাজকুমার সরকারের মতো দুর্নীতিপরায়ণ অফিসার আমি আগে দেখিনি। শুধু কি গ্যাস ব্যবসা? এই এলাকায় হেরোইন, জুয়া, সাট্টা, তাসের মতো বেআইনি কারবারের রমরমা আইসি-র মদতেই।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে উলুডাঙার বিস্ফোরণের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়া জানিয়েছেন, “গোডাউনের মালিক, যার জমিতে গোডাউন ছিল সহ কারা সেখানে কাজ করত, এইরকম কয়েকজনের নাম পাওয়া গিয়েছে। তাদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” ধৃতের নাম সইদ কওসর বলে জানা গিয়েছে। তাকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বারাসত আদালতের বিচারক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২নম্বর জাতীয় সড়ক সংলগ্ন আমডাঙার উলুডাঙা গ্রামটি যথেষ্ট জনবসতিপূর্ণ। তার মধ্যেই কিছুটা ফাঁকা জায়গায় রয়েছে অস্থায়ীভাবে তৈরি একটি টিনের ঘর। অভিযোগ, সেখানে অবৈধভাবে বিগত দেড়-দু বছর ধরে ডোমেস্টিক সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বের করে বাণিজ্যিক সিলিন্ডারে ভরে চড়া দামে বিক্রি করা হত। বৃহস্পতিবার দুপুরেও চলছিল সেই কাজ। তখনই হঠাৎ সিলিন্ডারে আগুন লেগে গেলে ভেতরে থাকা কর্মীরা বিপত্তি বুঝে দৌড়ে পালায়। এনিয়ে স্থানীয় বিধায়ক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যদি প্রাণহানি ঘটে যেত, দায় কে নিত?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.