সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলে গেলেন উলুবেড়িয়ার তৃণমূল সাংসদ ও মহামেডান ক্লাবের সভাপতি সুলতান আহমেদ। সোমবার বেলা বারোটার একটু পরে রিপন স্ট্রিটের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। দ্রুত বেলভিউ নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ডাক্তাররা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। দলীয় সাংসদের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকস্তব্ধ তৃণমূল কংগ্রেসও। শোকের ছায়া নেমে এসেছে ময়দান ও ক্রীড়াজগতেও। কারণ রাজনীতির পাশাপাশি প্রায় চার দশক ধরে ক্রীড়াজগতের সঙ্গে তাঁর ছিল নিবিড় সম্পর্ক। তাঁর স্ত্রী ও দুই পুত্রকে সমবেদনা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সভাপতি হিসাবে মহামেডান ক্লাবকে গত আট বছর ধরে নতুন গতি এনে দিয়েছিলেন প্রয়াত সাংসদ। নারদ তদন্তে তাঁকে ইডি ও সিবিআই একবার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এরপর একাধিকবার তলব করলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি সিবিআই দফতরে হাজির হতে পারেননি। কিন্তু মহামেডান কর্তারা নথি নিয়ে বারবার তদন্তকারীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। এদিন দুপুরেই হাসপাতাল থেকে বাড়িতে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। দলের বহু সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী এবং অজস্র অনুগামী খবর পেয়ে বাড়িতে ছুটে আসেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন মহামেডানের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে উলুবেড়িয়ার তৃণমূলের বহু নেতাকর্মী। আজ রাত আটটা নাগাদ গোবরা কবরস্থানে তাঁর শেষকৃত্য হবে।
মৌলনা আজাদ কলেজে পড়ার সময় থেকেই ছাত্র পরিষদের লড়াকু কর্মী ছিলেন সুলতান। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে আমৃত্যু সামাজিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং মানবিক দায়িত্ববোধ পালনে তিনি ছিলেন অনন্য। বস্তুত এই কারণেই তিনি যুব কংগ্রেসের নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ‘কওমি তানজিম’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে এই কওমির মঞ্চ থেকেই তিনি আন্দোলন করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর হন। ওই বছরই কলকাতার ছ’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান হন। দু’বছর পর এন্টালি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রথমবার এবং ১৯৯৬ সালে দ্বিতীয়বার বিধায়ক হন। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে নেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের সঙ্গে সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। ২০০৯ সালে উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। নেত্রীর সুপারিশে ওই বছরই মনমোহন মন্ত্রিসভায় পর্যটন দফতরের প্রতিমন্ত্রী হন। ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বার সাংসদ হয়েছিলেন। আমৃত্যু দলের সংসদীয় কমিটির ডেপুটি লিডার ছিলেন সুলতান। ইসলামিয়া হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক, আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের সহ সভাপতি এবং মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য ছিলেন।
Shocked and deeply saddened at the passing of Sultan Ahmed sitting @AITCOfficial LS MP & my long term colleague. Condolences to his family
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) September 4, 2017
সুলতান আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে মহামেডানের খেলোয়াড় ও তৃণমূল বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া, ‘ক্লাবের খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল। আচমকা এই খবরে আমরা স্তম্ভিত। তাঁর নশ্বর দেহ ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হবে। আগামিকাল মহামেডানের ম্যাচ আছে। সূচিতে পরিবর্তন হতেও পারে।’