নন্দন দত্ত, সিউড়ি: জয়ঢাক বাজিয়ে দলের প্রচারে নামল তৃণমূল৷ ময়ূরেশ্বর দুই ব্লকের উলকুন্ডা পঞ্চায়েতে রবিবার রামনগর এলাকায় জয়ঢাক বাজিয়ে প্রচারে অংশ নেন কয়েক হাজার মানুষ৷
তবে, হঠাৎ কেন জয়ঢাক বাজিয়ে প্রচার? স্থানীয় পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের ধারনা, ১১ সদস্যের উলকুন্ডা পঞ্চায়েতে ছ’টি আসনে ইতিমধ্যে বিনা বাধায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল৷ ফলে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যাওয়ার কারণে এই জয়ঢাক বাজিয়ে প্রচার বলে জানানো জানানো হয়েছে৷
ছ’টি আসনে জয়ের পর আর বাকি পাঁচটি আসনে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির সরাসরি মুখোমুখি লড়াই। কিন্তু সেখানে বিরোধী প্রার্থীরা গরহাজির। তাই আগাম জয়ঢাক নিয়েই প্রচার শুরু৷ তৃণমূলের বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধান সামসুর আলম মল্লিক বলেন, ‘‘যারা মনোনয়ন না তুলে জেদ বজায় রেখেছে, তাদের মনোবাসনা এলাকার ভোটাররা পূরণ করে দেবে। তাই আমরা কার্যত পঞ্চায়েত দখল করেও বিজয় মিছিল নয়। ঢাকের প্রচার শুরু করলাম। যেদিন বিরোধীশূন্য করব সেদিন আমরা বিজয় মিছিল করব৷’’
বিধানসভা ভোটে চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ক’টি এলাকায় নির্বাচন হবে তার মধ্যে উলকুন্ডাতে সেই চড়াম চড়াম ঢাকের বাদ্যি নিয়ে প্রচারে নামল অনুব্রতর দল৷ উলকুন্ডা পঞ্চায়েতের রামনগর এলাকায় গোটা বাসস্ট্যান্ড জুড়ে রবিবার সকাল থেকে সেই ধ্বনি উঠল৷ যাকে ঘিরে প্রচারের উল্লাস করলেও বিজয়ের জয়ধ্বনি তুলল না কেউ৷ তৃণমূলের দখলে থাকা ময়ূরেশ্বর দুই ব্লকের উলকুন্ডা পঞ্চায়েতের ১১টি আসনের সব ক’টিতেই প্রার্থী দিয়েছিল বিরোধীরা৷
শনিবার নাম প্রত্যাহারের শেষ দিনে ছ’জন নাম প্রত্যাহার করে নেন৷ দুনো সংসদে রয়েছে দুটি আসন। যেখান থেকে পরপর দু’বার জয়ী হয়ে প্রধান হয়েছেন সামসুর আলম মল্লিক৷ ওই গ্রামেই তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নারায়ণ প্রসাদ চন্দ্রের বাড়ি। দুনো ছাড়াও বহড়া মালডিহা গ্রামের সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল। বাকি নির্বাচন হবে ২৫৭, ২৫৯,২৬০,২৬১ ও ২৬২ আসনে৷ ২৫৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিদায়ী উপপ্রধান অরুণ ভল্লা৷
অন্যদিকে, ২৬০ আসনে লড়ছেন কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সন্তোষ ঘোষ। বাকি তিনটিতে অধিকাংশ নতুন মুখ। তৃণমূলের দাবি, সব আসনে তারা বিপুল ভোটে জয়ী হবে৷ কারণ বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন করে ময়দান ছেড়ে পালিয়েছে। অন্যদিকে, ছয় প্রার্থী নাম প্রত্যাহার করে নিলেও বাকিদের এলাকায় প্রচারে দেখা যাচ্ছে না। এমনকি বিজেপির নেতা হরি মণ্ডলকেও বাড়িতে বা ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা প্রচারে গিয়ে প্রার্থীদের বাড়িতে ঢুকিয়ে দিয়ে আসব এমন পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু যেভাবে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করা হল তাতে এই জেলায় নির্বাচন প্রহসন৷ তাই আমরা প্রার্থীদের আত্মগোপনেই থাকতে বলেছি৷ ঠিক সময়ে আমরা প্রচারে বেরবো৷’’