সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে জোট প্রচেষ্টা নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ করতে গিয়ে সাপ-বেজি, কুকুর-বিড়ালের সঙ্গে তুলনা করে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। অবশ্য পরিস্থিতি বুঝে পিছু হটেছেন তিনি। নিজেকে শুধরে নিয়ে বলেছেন, “মোদি ঝড়ে ভয় পেয়ে এখন ভোটে লড়তে কাছাকাছি আসছে ভিন্ন মতাদর্শের বিভিন্ন দল।” তবু বিতর্ক এড়ানো যায়নি। সমালোচিত হয়েছেন শাহ।
এদিকে, শাহের মন্তব্যের পালটা দিতে গিয়ে কলকাতায় তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “মানুষ ঠিক করবে কে সিংহ আর কে ইঁদুর আর কে সাপ। এরা ইতিহাস জানে না। এরা জানেই না যে সিংহকে ইঁদুর বাঁচিয়েয়েছিল। বিজেপি দেশে স্বর্ণযুগ আনবে বলছে। আসলে আনবে দেশের কালো দিন। দেশের স্বর্ণযুগ আনার জন্য আমরা লড়ছি। ওরা বিজেপির কথা বলুক। ২০১৯-এ বিজেপি ফিনিশ। ভারতে স্বর্ণযুগের সূচনা হবে। সেটা আমরাই করব। ওরা আকাশকুসুম স্বপ্নই দেখতে থাকবে।” ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘কদর্য ভাষা। আমরা রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে বিরোধী হতেই পারি। কিন্তু শাসক দলের সভাপতির কাছ থেকে আমরা কি ন্যূনতম সৌজন্যটুকুও আশা করতে পারি না।’
Sickening language used. Of course we are political rivals, can we expect such language from the national president of the party in power ? Basic courtesy ? Too much to ask for ? : Derek
— AITC (@AITCofficial) April 6, 2018
শাহ বলেন, “বিজেপির স্বর্ণযুগ এখনও আসেনি। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশায় বিজেপির সরকার হলেই তা আসবে। এও বলেন, বিজেপি ১০ জনকে নিয়ে শুরু হয়েছিল, এখন তার সদস্য ১১ কোটির বেশি।” বস্তুত, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকাতে বিরোধী দলগুলি জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় নেমেছে। একদিকে, কংগ্রেস একটি সব অ-বিজেপি ও অ-এনডিএ দলকে নিয়ে যেমন বিরোধী জোট গঠনের চেষ্টায় রয়েছে, তেমনই দেশের সমস্ত আঞ্চলিক দলকে নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনেরও সলতে পাকানোর কাজ চলছে। লোকসভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা নিয়ে বিরোধীদের ঐক্য দেখা গিয়েছে। বৃহস্পতিবারই ১৮টি বিরোধী দলের সাংসদরা সংসদ চত্বরে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে ধরনা কর্মসূচিতে একত্রিত হন। সেখানে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং সভাপতি রাহুল গান্ধীও উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার বিজেপির ৩৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এক সমাবেশে শাহ বিরোধীদের তীব্র আক্রমণ করেন। সংসদের অধিবেশন চলতে না দেওয়ার জন্য তিনি বিরোধীদের বিরুদ্ধেই আঙুল তোলেন। বলেন, “প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, বিড়াল, কুকুর, সাপ, বেজি সবাই জোট বাঁধছে।” দেশে ‘মোদি হাওয়া’ বইছে, তা থেকে নিজেদের বাঁচাতেই তারা জন্তু-জানোয়ারদের মতো একজোট হতে চাইছে বলে কটাক্ষ করেন বিজেপি সভাপতি। তিনি বলেন, “প্রচার করা হচ্ছে, সব বিরোধী দলের জোট হওয়া উচিত। প্রবল বন্যার সময় সাপ, বেজী, বিড়াল, কুকুর, এমনকী চিতা, সিংহও উঁচু গাছে চড়ে বসে যাতে জল বাড়তে বাড়তে তাদের কাছে না পৌঁছয়!”
শাহ জোরের সঙ্গে দাবি করেন, মোদি সরকার সমাজের সব অংশের জন্যই অনেক কাজ করেছে। বিজেপি ফাঁপা প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরিবর্তে যে কাজ করেছে, তার ভিত্তিতেই ২০১৯-এর ভোট জিততে চায়।” দলিত ইস্যুতে তিনি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করে বলেন, “রাহুল গান্ধী ও অন্যরা বলছেন, আমরা তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণ বানচাল করছি। আমরা কোনওভাবেই সংরক্ষণ নীতি বাতিল করছি না। রাহুল, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার জেনে রাখুন, বিজেপি কখনওই সংরক্ষণ নীতি বাতিল করবে না। আপনারা সংরক্ষণ তুলে দিতে চাইলেও বিজেপি কখনই অনুমোদন করবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.