সুমিত বিশ্বাস, মানবাজার: ‘সিপিএমের হার্মাদরাই আজ বিজেপির ওস্তাদ৷’ জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায় বৃহস্পতিবার নির্বাচনী জনসভা করতে এসে গেরুয়া শিবির-সহ সিপিএমকে এভাবেই বিঁধলেন যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন বরাবাজার থেকে মানবাজার, জোড়া জনসভা থেকে বিজেপি ও সিপিএমকে তুলোধনা করেন তিনি৷ সেই সঙ্গে বিরোধীদের মনে করিয়ে দেন, আগামী ১৭ মে ব্যালট বক্স খুললেই চারদিক থেকে শুধু জোড়া ফুল বেরিয়ে পড়বে। সেদিনই হবে আবির খেলার দিন৷ এদিন দুটি জনসভাতে থেকেই সাংসদ তথা দলের জেলার পর্যবেক্ষক অভিষেক বলেন, “যারা সিপিএমে থেকে হতাশ হয়ে গিয়েছেন, তারাই আজ গায়ে গেরুয়া জড়িয়ে জয় শ্রীরাম বলছেন। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে যখন আমি এই জঙ্গলমহলে এসেছিলাম তখন এই গ্রামের কয়েকটি দেওয়ালে দেখে ছিলাম কাস্তে–হাতুড়ি আঁকা। সেই বাড়ির দেওয়াল গুলিতেই এখন দেখা যাচ্ছে আঁকা রয়েছে পদ্মফুল। একসময় যারা সিপিএমের হার্মাদ ছিল তারাই আজ বিজেপির ওস্তাদ৷’’ আর এই বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণ করে বাংলাকে বিভাজন করতে চাইছে৷ কিন্তু এই বাংলার সংস্কৃতি বা হিন্দু ধর্ম বিভাজন শেখায়নি৷ বরং হিন্দু ধর্মের নীতি হল অন্যধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল৷ এদিন মানবাজারের ইন্দকুড়ি রাইস মিল ময়দানে আবারও সেই কথা মনে করান সাংসদ অভিষেক৷
[কাস্তে-হাতুড়ি ছেড়ে হাতে পদ্ম খোদ রামচন্দ্র ডোমের ভাইয়ের]
তিনি বলেন, “২০১৪ সালের আগে রামনবমী ও মহাবীর জয়ন্তীতে এভাবে অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি৷ ভিন রাজ্যের সংস্কৃতিকে বিজেপি এখানে টেনে আনছে৷ কিন্তু এই বাংলা টাকা দিয়ে গেরুয়া হবে না৷ এই বাংলা সম্প্রীতির বাংলা৷’’
এদিন বরাবাজারের ইন্দটাঁড় ময়দান থেকে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েত ভোটে নির্বাচনী জনসভা শুরু করেন৷ তারপর ওই সভা শেষে মানবাজার আসেন৷ এদিন এই মানবাজারের ইন্দকুড়ি রাইস মিল ময়দান যেন ব্রিগেডের চেহারা নেয়৷ চারদিক শুধু কালো মাথার ভিড়৷ সেই উপচে পড়া জনসভা থেকেই দলের সর্বভারতীয় যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অতীতে জেলায় যে সকল এলাকায় আশানুরূপ ফল হয়নি সেই সব বুথে আমি নিজে গিয়ে প্রচার করব৷’’ এই জনসভা থেকেই আবারও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন গ্রামসভা থেকে পঞ্চায়েত সমিতি সহ জেলাপরিষদে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রার্থী৷ তাই ১৪ মে ভোটের দিন আসল ফুল ঘাস ফুলকে ভোট দিন৷ এই ভোটের বাজারে আর যে সব ফুল আছে তা নকল৷ এদিন দু’টি জনসভাতেই বিরোধীদের আক্রমণ করে সাংসদ অভিষেক বলেন, “ওরা ভোটকে ভয় পাচ্ছে৷ তাই শুধু আদালতে যাচ্ছে৷ ওরা ভোট বানচাল করতে চাইছে৷ আসলে যারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে থাকেন তারা ভোটে যান৷ আর যাদের সারা বছর দেখা পাওয়া যায় না তারা যান কোর্টে৷’’
[মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে সাঁওতালি ভাষায় গান লিখেই ভোটের আসর মাতাচ্ছেন লোকশিল্পী]
এদিন দুটি জনসভাতেই ছিলেন দলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো ও জেলা যুব সভাপতি সুশান্ত মাহাতো। মানবাজারে ছিলেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু ও দলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.