স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কারখানায় অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ তুলে ভিন রাজ্যে চলে যাওয়ার হুমকি দিলেন এক শিল্পদ্যোগী। তাঁর অভিযোগের তির পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের দিকে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এভাবে চলতে থাকলে দুশো কোটি টাকার বিনিয়োগ গুটিয়ে ভিন রাজ্যে চলে যেতে বাধ্য হবেন। দ্রুত সমস্যার নিষ্পত্তি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই ব্যক্তি।
[ আরও পড়ুন: সাহিত্য মেলার মঞ্চে চটুল নাচ, বিভূতি স্মরণে অপসংস্কৃতির নজির বনগাঁয় ]
শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ির ‘গ্রিনজেন বায়ো প্রাইভেট লিমিটেড’-এর কর্ণধার শিল্পদ্যোগী রমাকান্ত বর্মন শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেন, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিং হোমের বর্জ্য বরাত নিয়ে তিনি প্রক্রিয়াকরণের কাজ করেন। অন্য কোথাও এটা হয় না। কারখানা এখনও চালু রয়েছে। কোনও কারণে কাজে বিঘ্ন ঘটলে মারাত্মক সংক্রমণ ছড়ানোর বিপদ রয়েছে। সেটা হলে দায়িত্ব পর্যটনমন্ত্রীকেই নিতে হবে। যদিও শিল্পদ্যোগীর অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে অস্বীকার করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আমি কোনও মন্তব্য করব না।” রমাকান্তবাবু জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তাঁর ভাই শশিকান্ত বর্মন ও সংস্থার এক সুপারভাইজার মণিকান্ত রায়কে অপহরণ করে আমবাড়িতে তুলে নিয়ে মারধরের ঘটনার পর ভয়ে ছিলেন। শঙ্কা ছিল তাঁকেও মারধর করা হবে। শুধুমাত্র সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শিলিগুড়িতে এসেছেন। তিনি ভরসা দিয়েছেন। এরপরই অভিযোগ করেন, ফুলবাড়িতে পর্যটনমন্ত্রী যে ভূমিকা নিয়েছেন শিল্পমহলে খারাপ বার্তা যাবে। সেখানে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় রেখে দুষ্কৃতীদের দিয়ে কারখানার দখল নিয়েছেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন পাশে দাঁড়িয়ে শিল্প গড়তে সাহায্য করছেন তখন পর্যটনমন্ত্রীর এমন উলটো ভূমিকা কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
[ আরও পড়ুন: অপরাধের বিচারে স্বয়ং মা, ঝাড়গ্রামের পুজোয় এবারের চমক ‘যমালয়ে জীবন্ত দুর্গা’ ]
জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে ফুলবাড়িতে গ্রিনজেন বায়ো প্রাইভেট লিমিটেড’-এর বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানাটি তৈরি হয়। উত্তরবঙ্গের আটটি জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের বর্জ্য ওই কারখানায় জমা হয়। ফুলবাড়ি ছাড়াও রমাকান্তবাবুদের কলকাতায় আরও একটি কারখানা চালু রয়েছে। আরও আটটি কারখানা তৈরির কাজ চলছে। সব মিলিয়ে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় দুশো কোটি টাকা। সেখানে এক হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ মিলবে। শিল্পদ্যোগী দাবি করেন, রাজ্যের অন্য কোথাও সমস্যা নেই। ফুলবাড়িতেও ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সমস্যা ছিল না। পর্যটনমন্ত্রী শেয়ার হোল্ডারদের হয়ে কারখানার কবজা করার চেষ্টা করছেন। তিনি জানিয়েছেন, সংস্থার ২০টি গাড়ি প্রতিদিন প্রায় চার টন বর্জ্য সংগ্রহ করে। সেগুলি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নষ্ট করতে হয়। না হলে এমন দূষণ ছড়াবে যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। রমাকান্তবাবু ওই পরিস্থিতির জন্য পর্যটনমন্ত্রীকে সরাসরি দায়ী করে বলেন, “সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দায় গৌতমবাবুকেই নিতে হবে। তাঁর দপ্তরের অধীন এই শিল্প নয়। কিছু বলার থাকলে পরিবেশমন্ত্রী বলবেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তিনি সেখানে অনধিকার চর্চা শুরু করেছেন। পুলিশকেও ব্যবস্থা নিতে দিচ্ছেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.