আদালতে ধৃত দুই অনুপ্রবেশকারী। নিজস্ব চিত্র
অর্ণব দাস, বারাসত: ওপার বাংলার গাজিপুর জেলার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম এদেশে এসে নাম ভাঁড়িয়ে হয়েছিলেন নারায়ণ অধিকারী। বাবার নাম গিয়াস মিঞার পরিবর্তে করা হয়েছিল নগেন অধিকারী। থাকছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের দক্ষিণ কাজিপাড়ার বাসিন্দা শেখ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে। এই রফিকুলেরও আদপে বাড়ি বাংলাদেশের মাদারিহাট এলাকায়।
দুজনেরই সন্দেহজনক গতিবিধির খবর পেয়ে নজরে রাখছিল পুলিশ। শেষে শনিবার রাতে দুজনকেই বামনগাছি চৌমাথা সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। বারাসত এলাকা থেকে এর আগেও বাংলাদেশিদের এদেশের পরিচয়পত্র বানিয়ে দেওয়ার অভিযোগে সমীর দাস সহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ফের দুই বাংলাদেশির বারাসতে গ্রেপ্তারের খবর জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত নুরুল বিগত তিন সাড়ে তিন বছর ধরে বারাসতের দক্ষিণ কাজিপাড়ার রফিকুলের বাড়িতে ভাড়া থাকার নামে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
এই সময়কালেই তিনি নারায়ণ নামে জাল আধার কার্ড, প্যান কার্ড ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বানিয়ে ফেলেন। সেগুলিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। রফিকুল আবার বিগত প্রায় ২০ বছর ধরে থাকছিলেন এদেশে। প্রথমে তিনি দত্তপুকুর এলাকায় থাকলেও পরে দক্ষিণ কাজিপাড়ায় বাড়ি তৈরি করেন। ভারতীয় মহিলাকে বিয়ে করে পাকাপাকিভাবে এদেশে থাকতে শুরু করেছিলেন। পেশায় অটোচালক হলেও দুজনের জীবনযাত্রা নিয়ে অনেকেই হতবাক হতেন। লক্ষাধিক টাকার আইফোন ব্যবহার করতেন তিনি। কীভাবে এত টাকা হাতে আসত? সেই প্রশ্ন প্রতিবেশীদের মধ্যেও এসেছিল। গতিবিধি নিয়ে এলাকার মানুষদের সন্দেহও হয়।
এরই মধ্যে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উত্তাল পরিস্থিতিতে অনুপ্রবেশকারীদের ধরপাকড় শুরু হলে এই দুজনেও গতিবিধির উপরও নজর রাখতে শুরু করে পুলিশ। শেষে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, বাংলাদেশি দালালের মাধ্যমে নুরুল ওপার বাংলার ক্লাইন্ট জোগাড় করত। তারপর মোটা টাকার বিনিময়ে রফিকুলের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের এদেশের ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে দিতেন। ধৃত দুজনের সঙ্গে বারাসত থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার চারজনের কোনও যোগ রয়েছে কি? এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত? সেসব খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.