সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: ঝড়ের তীব্রতায় মন্দিরের চূড়া ভেঙে দুর্ঘটনা। এর জেরে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। প্রায় ২০জন আহত হয়েছেন। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জয়পুর থানার অমরাগোড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকারোল গ্রামের শ্মশানে। সেই শ্মশানেই রয়েছে প্রাচীন শ্মশানকালীর মন্দির। প্রতি বছরের মতো এবারের চৈত্র সংক্রান্তিতেও সেখানে পুজোর আয়োজন করা হয়। মন্দির সংলগ্ন ফাঁকা জায়গাতেই অস্থায়ী মণ্ডপ তৈরি করে পুজোর আয়োজন হয়েছিল। আচমকাই সন্ধ্যার পরে ঝড় শুরু হয়। এলোমেলো হাওয়ার দাপটে চারিদিকে যখন গাছ ভেঙে মাথায় পড়ার ভয়, তখন পুণ্যার্থীরা মন্দির চত্বরেই আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই সময় আচমকাই অস্থায়ী মণ্ডপের দড়ির সঙ্গে বাঁধা মন্দিরের চূড়া হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় এক নাবালকের। মৃতের নাম অভিজিৎ মাজি(১০)। মন্দিরের চূড়া ততক্ষণে ধ্বংসাবশেষের চেহারা নিয়েছে। আহত ২০ জনকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
[স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই প্রার্থী, ঘরকন্না সামলাচ্ছেন আত্মীয়রাই]
আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে স্থানীয় বিবি ধর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাকিদের উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। চিকিৎসা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই উলুবেড়িয়া হাসপাতালে মৃত্যু হয় আরও একজনের। মৃতের নাম নমিতা রায়(২০)। এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন প্রিয়াঙ্কা দলুইয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাতেই তাঁকে কলকাতার এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। এখন বিবি ধর হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন কাজল রয়। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে রয়েছেন নির্মল দলুই, বুলা রায়, স্মৃতি দলুই, দিবাকর রায়, ঋজু মাজি, সুজিত বাগ।
পুজো দিতে এসে এহেন মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা পরিষদ সদস্য রমেশ পাল জানিয়েছেন, এটি নিছকই দুর্ঘটনা। যদিও স্থানীয়দের দাবি, প্রাচীন শ্মশানকালীর মন্দিরের জীর্ণ অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে কোনওরকম সংস্কার হয় না। হাওয়ার দাপটে মণ্ডপের সঙ্গে টেনে বাঁধা দড়ির টাপ সহ্য করতে না পেরেই ভেঙে পড়েছে মন্দিরের চূড়া। তার জেরেই এই দুর্ঘটনা। প্রতি বছরের মতো এবারেও কালীপুজোর আয়োজন হয়েছিল মন্দির চত্বরে। তবে প্রাচীন মন্দিরের পাশেই তৈরি হয়েছিল অস্থায়ী মণ্ডপ। সেখানেই হচ্ছিল পুজো। মণ্ডপের ম্যারাপ বাঁধার সময় দড়ি টান টান রাখতে কালীমন্দিরের চূড়ার সঙ্গে বাঁধা হয়েছিল। এদিক ঝড় শুরু হতেই এলোমেলো হাওয়ার দাপটে অস্থায়ী মণ্ডপের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়ে। আচমকাই টেনে বাঁধা দড়ি ছিড়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মন্দিরের চূড়া। সেই অভিঘাতে অস্থায়ী মণ্ডপ ভেঙে পড়ে। মণ্ডপের নিচে চাপা পড়েন অনেকেই। চূড়ার আঘাতেও বেশ কয়েকজন আহত হন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক নাবালকের।