সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: সন্ধে নামলেই জ্বলজ্বলে চোখ নিয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছে বড় আকারের জন্তু। অনেকেই নাকি শুনতে পাচ্ছেন বিকট আওয়াজ। মিলছে পায়ের ছাপ। লোকমুখে শোনা যাচ্ছে, এলাকার কুকুরদেরও নাকি আর দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, ওই জন্তুই কুকুরদের দিয়ে সারছে পেটপুজো। এমনই লোকমুখে ছড়ানো নানা কথার জেরে অজানা জন্তুর আতঙ্কে কাঁটা দুর্গাপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেনাচিতির প্রান্তিকা এলাকা। যদিও বনদপ্তর স্থানীয়দের দাবি নস্যাৎ করেছে। বাঘরোল আশেপাশে ঘুরছে বলেই জানিয়েছে বনদপ্তর।
দুর্গাপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বেনাচিতির প্রান্তিকা এলাকায় রয়েছে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের সেন্ট্রাল স্টোর। ওই এলাকার আশেপাশে বিস্তীর্ণ জলাভূমি। স্থানীয়দের দাবি, মঙ্গলবার গভীর রাতে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের সেন্ট্রাল স্টোর সীমানা পাঁচিলের উপর একটি বড় মাপের জন্তুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। দূর থেকে তার চোখ জ্বলতে দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা।
লোকমুখে রটে যায় ওই এলাকায় ঘোরাফেরা করছে ‘বাঘ’। অনেকের দাবি, রাতে নাকি গর্জনও শুনেছেন তাঁরা। আবার কেউ বলছেন, এলাকার সারমেয়রাই নাকি গায়েব হয়ে গিয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে যান স্থানীয়রা।
বুধবার ভোর হতে না হতেই দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের সেন্ট্রাল স্টোরের আশেপাশে ভিড় জমান তাঁরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে সিআইএসএফ। কিছুক্ষণের মধ্যে দুর্গাপুর থানার পুলিশ এবং বনবিভাগের কর্মীরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। আপাতত ওই এলাকায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। কাউকে সেন্ট্রাল স্টোরে ঘেরা এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
[আরও পড়ুন: হাতির হানা অব্যাহত বাঁকুড়ায়, বৃদ্ধকে শুঁড়ে তুলে আছড়ে মারল দলছুট দাঁতাল]
যদিও বাঘের আতঙ্কের কোনও কারণ দেখতে পাচ্ছেন না বনদপ্তরের আধিকারিকরা। দুর্গাপুর বনবিভাগের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, “পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। তবে কোনওভাবেই এটি বাঘের পায়ের ছাপ নয়। এটি আসলে বাঘরোল।”
তাই অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা বনবিভাগের। যদিও বাঘের আতঙ্কে কাঁটা স্থানীয়রা। বাড়ি থেকে বেরনোর আগেও দু’বার ভাবছেন তাঁরা।