Advertisement
Advertisement
লখনউ

লখনউয়ের অশান্তিতে গ্রেপ্তার মালদহের ৬! পুলিশকে খবরই দিল না উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন

CAA বিরোধী আন্দোলনে এখনও থমথমে লখনউ।

Uttar Pradesh police did not inform Maldah police about Lakhnow arrest
Published by: Sayani Sen
  • Posted:December 23, 2019 8:44 pm
  • Updated:December 23, 2019 8:44 pm

বাবুল হক, মালদহ: CAA বিরোধী আন্দোলনে জ্বলছে উত্তরপ্রদেশ। অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ধৃতদের তালিকায় রয়েছেন উত্তরপ্রদেশে কাজ করতে যাওয়া মালদহের ৬ শ্রমিক। পরিজনদের দাবি, ধৃতদের সঙ্গীদের কাছ থেকেই এ খবর পেয়েছেন তাঁরা। যদিও মালদহ জেলা পুলিশ সুপারের দাবি সোমবার পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও খবর তাঁর কাছে এসে পৌঁছায়নি।

কেউ রয়েছেন বছর দশেক। আবার কেউ পাঁচ বছর। উত্তর প্রদেশের লখনউয়ের তুলসি মার্কেটের একটি হোটেলে কাজ করতেন মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের ছয় শ্রমিক। কিন্তু এতদিন পর যে হঠাৎ এমন বিপত্তি ঘটে যাবে, সেটা কখনই ভাবেননি তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। এমনকী তাঁদের গ্রেপ্তারের খবর শুনে অবাক পড়শিরাও। হরিশ্চন্দ্রপুরের গ্রামে সোমবার ঘুরেফিরে এই বিষয়টি নিয়েই চর্চা চলেছে। ওই ছয় যুবকের পরিবারের পাশাপাশি গ্রামবাসীদেরও দাবি, “ওই ছেলেরা কখনও অশান্তি করতে পারেন না। ওরা হোটেলে কাজ করে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ওদের গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।”

নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনের প্রতিবাদে চলা আন্দোলনের জেরে অগ্নিগর্ভ উত্তরপ্রদেশ। হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে লখনউয়ের তুলসি মার্কেট থেকে মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের ছয় যুবককে গ্রেপ্তার করা হয় বলেই খবর। যদিও ওই রাজ‍্যের পুলিশের তরফে এবিষয়ে মালদহ জেলা পুলিশের কাছে সোমবার বিকেল পর্যন্ত কোনও বার্তা এসে পৌঁছায়নি, দাবি মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার। তিনি বলেন, “লখনউ পুলিশ থেকে কিছু জানায়নি। এখান থেকেও আমরা কোনও খবর পাইনি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: CAA বিরোধিতায় যৌথ আন্দোলনের ডাক, অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি মমতার]

উত্তরপ্রদেশে হিংসার ঘটনায় ধৃত ছ’জনেরই পরিজনেরা বলছেন, এলাকার আরও শ্রমিক সেখানে কাজ করতে গিয়েছেন। লখনউতে থাকা ধৃতদের সঙ্গীরাই ফোন করে তাঁদের পরিজনদের জানিয়েছেন। আর এই খবর শোনার পরই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ধৃতদের আত্মীয়স্বজনরা। যোগী আদিত্যনাথের সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, মালদহের ধৃত ছ’জন পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার সদস্য। ধৃতদের পরিবারের সদস‍্যরা ওই সরকারের এমন দাবি মানতে চাননি। প্রতিবেশীরাও অবাক হয়েছেন। এদিন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ডাঙ্গিলা ও জনমদোল গ্রাম থেকে জানা গিয়েছে, লখনউতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ডাঙ্গিলা গ্রামের খাইরুল হক, সালেমুল হক, সাগর আলি ও সঞ্জুর আলি। খাইরুল ও সালেমুল দুই ভাই। বাকি ধৃত দু’জন শাহ আলম ও আসলাম শেখের বাড়ি হরিশচন্দ্রপুরের জনমদোল গ্রামে। এই ছ’জন লখনউয়ের তুলসি মার্কেটের একই হোটেলে শ্রমিকের কাজ করতেন। তাঁদের বয়স ১৮ থেকে ২৪। খাইরুল ও তাঁর ভাই সালেমুল প্রায় ১০ বছর ধরে লখনউতে কাজ করেন। বাকিরা কেউ পাঁচ বছর, কেউ সাত বছর ধরে লখনউতে রয়েছেন। সেখানে থাকা অন্য শ্রমিকরা শনিবার রাতে ফোন করে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি বাড়িতে জানিয়েছেন। ধৃত সাগর আলির বাবা আরিফুল হক বলেন, “ওরা পেটের দায়ে ওখানে গিয়েছে। ওদের পাঠানো টাকায় কোনওরকমে সংসার চলে। ওরা কোনও সংগঠনের সঙ্গে জড়িত বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ওদের ফাঁসিয়েছে।”

Advertisement

Maldah-Worker's-Family

হরিশচন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলম বলেন, “এই রাজ্যের খেটে খাওয়া মানুষদের উত্তরপ্রদেশে জোর করে জেলে ঢোকানো হচ্ছে। এই ছেলেরা ওখানে রাজনীতি করতে গিয়েছে নাকি। দু’টো টাকা রোজগারের আশায় গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হরিশ্চন্দ্রপুরের ছেলেদের গ্রেপ্তার করেছে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ