Advertisement
Advertisement
Durga Puja

Durga Puja: ঘরের ছেলে পল্টু নেই ৩ বছর, তবু প্রথা মেনেই চলছে জৌলুসহীন মিরিটির দুর্গাপুজো

মন ভাল নেই প্রণব মুখোপাধ্যায়ের গ্রামের।

Village of Pranab Mukherjee misses him during Durga Puja
Published by: Paramita Paul
  • Posted:October 10, 2023 4:52 pm
  • Updated:October 10, 2023 5:59 pm

দেব গোস্বামী, বোলপুর: পরনে সাদা ধুতি, গায়ে পাটবস্ত্র উত্তরীয়। সপ্তমীর সকালে কলাবউ স্নান থেকে শুরু করে অষ্টমীর মুখস্থ চণ্ডীপাঠ। গোটা গ্রামে পুজো চারদিন বিশেষ নিরাপত্তা বেষ্টনী। এই চিত্র সকলেরই ভীষণ চেনা। রীতি মেনেই প্রতি বছরের মতো এবারও দুর্গাপুজো হচ্ছে বীরভূমের মিরিটি গ্রামের মুখোপাধ্যায় বাড়িতে। কিন্তু প্রণব মুখোপাধ্যায় নেই। তাঁকে ছাড়া পুজো যেন অসম্পূর্ণ মিরিটির গ্রামে। তবে পুরোদমে চলছে পুজোর আয়োজন। সময়মতো তৈরি হয়েছে মায়ের মূর্তির কাঠামো, তাতে মাটিও চড়েছে। হয়ত এবারেও হবে সবই। কিন্তু শুধু থাকবেন না তিনি। থাকবে না নিরাপত্তার বহর। কারণ, দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির এবারেও শূন্যস্থানেই বিরাজ করবেন তিনি।

২০২০ সালের ৩১ অগাস্ট প্রয়াত হন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক নেতা ও দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। শুধু মুখোপাধ্যায় পরিবার নয়, সমগ্র মিরিটির মন ভারাক্রান্ত। পুজোয় তিনি আর নেই-ভেবেই ব্যথিত গ্রামের সকলে। স্বাভাবিকভাবেই এবারেও জৌলুষহীন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির গ্রামের বাড়ির দুর্গাপুজোর আয়োজন ।

Advertisement

[আরও পড়ুন: অভিমান ভুলে পূর্বপুরুষের ‘হত্যাকারী’ দুর্গার পুজোয় শামিল ‘অসুর’রা]

Gram Banglar Durga Puja

Advertisement

 

রাষ্ট্রপতি হন বা অর্থমন্ত্রী বা বিদেশমন্ত্রী- হাজারও ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতি বছর নিয়ম করে দুর্গাপুজোর সময় গ্রামে আসতেন প্রণববাবু। এলাকা মুড়ে ফেলা হত নিরাপত্তায়। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার বলয়ে হয়তো নিজেদের গ্রামকেই চিনতে পারতেন না বাসিন্দারা। চারটি দিন একেবারে বাড়িতে থেকে পুজো পরিচালনা করতেন। শুধু পরিচালনা নয়, পুরোহিতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নবপত্রিকা স্নান–সহ দুর্গাপুজোর সমস্ত রীতিনীতি নিজের হাতে পালন করতেন। জানা যায়, কেবল ১৯৭৮ সালে বন্যার জন্য দুর্গাপুজোয় তিনি আসতে পারেননি মিরিটিতে। সেবার ঘটপুজো হয়েছিল। তারপর থেকে প্রণববাবু কখনওই পুজো থেকে দূরে সরে থাকেননি। যতই প্রোটোকল থাক, পুজোর চারটে দিন একেবারে গৃহকর্তা হয়েই পুজোয় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। বছরের পর বছর ধরে প্রণববাবু নিজেই করে এসেছেন চণ্ডীপাঠ। কিন্তু সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। সেই গম্ভীর কণ্ঠের চণ্ডীপাঠ শুনতে শুধু আশেপাশের গ্রামের মানুষই নন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রথম সারির ব্যক্তিত্বদের আনাগোনার লাইন পড়ে যেত। সেসব আজ অতীত। মন ভারাক্রান্ত মুখোপাধ্যায় পরিবারসহ গ্রামবাসীদেরও।

[আরও পড়ুন: অনলাইন ভিডিওই যেন শিক্ষক! ছোট্ট হাতে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র]

প্রণব পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, “মুখোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গাপুজো ১২৮ বছরে পদার্পণ করল। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঠাকুরদা তারকনাথ মুখোপাধ্যায় এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। বংশ-পরম্পরায় পূজিত হয়ে আসছে দেবী উমা। বাবা প্রয়াত হবার পর বংশের পুজোর দায়িত্বভার পেয়েছি। তবে বাবার মত দক্ষতা অর্জন করতে পারিনি। এবারেও কর্তাহীন, প্রণবহীন দুর্গাপুজো। জ্ঞান হবার পর থেকেই বাবাকেই পুজো করে আসতে দেখেছি। শুধু কয়েকবার সরকারি কাজের জেরে এবং ১৯৭৮ সালের বন্যায় তিনি আসতে পারেননি মিরিটিতে। সেবার ঘটপুজো হয়েছিল। তারপর থেকে আমরা কখনই পুজো থেকে দূরে সরে থাকতে দেখিনি।” কিন্তু সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। পুজোয় তিনি নেই -ভেবেই ব্যথিত মিরিটি গ্রামবাসী।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ