Advertisement
Advertisement

Breaking News

Durga Puja

দুর্গার অকাল বোধন আমতার গ্রামে, সরস্বতী পুজোর পরে পূজিত হন আঠারো হাতের দেবী!

কেন এই পুজোর শুরু হয়েছিল?

Villagers are celebrating Durga Puja in February at Amta
Published by: Subhankar Patra
  • Posted:February 4, 2025 9:19 pm
  • Updated:February 6, 2025 2:17 pm  

মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: বাংলার দিকে দিকে এখনও সরস্বতী পুজোর রেশ। সেখানে আমতার খোসালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কুরিট গ্রামের বাসিন্দারা নিচ্ছেন দেবী দুর্গার অকাল বোধনের প্রস্তুতি। আজ, মঙ্গলবার রাতে গ্রামে দেবীর আগমন হয়েছে। সাধারণত এই গ্রামে অন্য পুজো হয় না, এই পুজোই গ্রামের বড় উৎসব। স্বাভাবিকভাবেই চারপাশে সাজসাজ রব। 

কুরিট গ্রামের তারাময়ী আশ্রমে পূজিত মা দুর্গার রূপ আলাদা। দেবী এখানে অষ্টাদশ ভুজা, মহালক্ষ্মী কাত্যায়ণী রূপে পূজিতা হন। দুর্গাপুজোর মতোই সপ্তমীতে কলা বউয়ের স্নান, অষ্টমীতে পুজো, নবমীতে যজ্ঞ এবং দশমীর পুজোর পর একাদশীতে বিসর্জন হয়। দূরদূরান্ত থেকে লোকেরা এই অকাল বোধনে শামিল হন।

Advertisement

এবারে পুজো ৪৬তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। পুজো কমিটির সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত কোলে এবং সদস্য অভিষেক সাধুখাঁ বলেন, বাংলার দুর্গতিনাশের জন্য যেমন প্রতি বছর বসন্তকালে দেবী দুর্গার পুজো হয়। তেমনই কুরিট-সহ আশপাশের এলাকারও সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে এই অষ্টাদশ ভুজা মহালক্ষ্মী কাত্যায়ণী দুর্গাপুজোর শুরু। হালকা শীতে মাইকে গ্রামের প্রতিটি ঘরে ভেসে যাবে দুর্গামন্ত্র। তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে পরিবার ও গ্রামের মঙ্গল কামনা করবেন সবাই।

কিন্তু কেন এই পুজোর শুরু হয়েছিল?

কুরিট, বড়মোহরা, কোটালপাড়া, বলাই মাঝি, বলরামপুর গ্রাম মূলত কৃষি প্রধান গ্রাম। কথিত আছে, গ্রামবাসীরা এক সময়ে বিশ্বাস করতেন প্রকৃতি তাঁদের সঙ্গ দেয় না। গরমে বৃষ্টি না হওয়া, বর্ষায় অতিবৃষ্টির জেরে প্লাবন-সহ নানা প্রকার প্রাকৃতিক বিরূপতায় এখানকার বাসিন্দারা নাজেহাল হয়ে যাচ্ছিলেন। বারবার ক্ষতির মুখে পড়ে এলাকার মানুষের নাভিশ্বাস উঠছিল। কীভাবে এই প্রাকৃতিক বিরূপতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায় তা নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই থেকেই এই পুজোর শুরু।

এই পুজো উদ্যোক্তাদের অন্যতম তমালকুমার কোলে। তিনি বলেন, “আমরা বালি এলাকার বাসিন্দা তান্ত্রিক বিশ্বনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, কাত্যায়ন ঋষি বহু আগে খরা বন্যার হাত থেকে বাঁচার জন্য অষ্টাদশ ভুজা মহালক্ষ্মী কাত্যায়ণী দুর্গাপুজো করেছিলেন। তিনি নির্দেশ দেন কুরিট এলাকার শ্মশানে এই পুজো করার জন্য। তারপর ১৯৭৯ সালে এখানে এই পুজো শুরু হয়। প্রতিবছর সরস্বতী পুজোর পরদিন থেকেই এই পুজো শুরু হয়। এই অকালবোধনে দেবী দুর্গার গোটা পরিবার লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ এখানে উপস্থিত থাকে। এছাড়া এখানে ঋষি কাত্যায়নের মূর্তি থাকে। তিনিও পূজিত হন।” তিনি আরও জানান, “এই এলাকায় দেবী চণ্ডী থাকার ফলে দুর্গাপুজো হয় না। তাই এই অষ্টাদশ ভূজা মহালক্ষ্মী কাত্যায়ণী দুর্গাপুজোর অপেক্ষায় থাকি। এলাকার ছেলেরা যারা দেশ-বিদেশে কাজ করেন, তাঁরাও ছুটি নিয়ে এই সময় বাড়িতে আসে।”

এদিকে এই পুজো উপলক্ষে এলাকা কার্যত মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়। বসে মেলা।  পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে শুরু করে খাবারের দোকান, সব থাকে সেখানে। ঢল নামে দর্শনার্থীদের। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement