Advertisement
Advertisement

Breaking News

রাজেশের গ্রামে ভিড়

ফিরল না শহিদ রাজেশের দেহ, শ্রদ্ধা জানাতে দিনভর গ্রামবাসীদের অপেক্ষাই সার

শুক্রবার রাজেশের দেহ ফিরতে পারে মহম্মদবাজারের গ্রামে।

Villagers of Mahammadbazar couldn't fulfil their wishes to pay tribute to martyr Rajesh Orang
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:June 18, 2020 9:18 pm
  • Updated:June 18, 2020 9:18 pm

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: অপেক্ষায় রইল পথ। জাতীয় পতাকা হাতে থমকে আবেগ। জাতীয় সড়ক থেকে বীরভূমের মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়া – লোকে লোকারণ্য। শহিদ রাজেশ ওরাংকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দিনভর অপেক্ষা। সেই কোন দূরের লাদাখ সীমান্তে চিন-ভারত যুদ্ধের শহিদ হওয়া রাজেশ ওরাংকে একবার চোখের দেখা দেখার আশায় কেউ ফুল হাতে, কেউ সমাধিক্ষেত্রের পাশে ডাঁই করে রাখা বালির স্তুপের ওপর ছিলেন অপেক্ষারত।

মহম্মদবাজারের এমন উপচে পড়া ভিড় কবে, কোন কালে হয়েছে স্মরণেই আনতে পারছে না গ্রামবাসীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধে নামতেই যেন দিনভরের অপেক্ষা খান খান হয়ে ভেঙে গেল। রাজেশের ভাই অভিজিত জানিয়ে দিলেন, সেনাবাহিনী এদিন আর শহিদের দেহ ফেরাতে পারছে না। তাই ফের শুক্রবারের অপেক্ষা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: চিন নয় ভারতই মাতৃভূমি, ড্রাগনের আগ্রাসনের তীব্র নিন্দায় বর্ধমানের ওয়াং পরিবার]

চিনা সেনার আক্রমণ থেকে দেশকে বাঁচাতে চেয়ে শহিদ হওয়া রাজেশের ঘর যেন তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। পাকা ঘরে প্লাস্টার না করে দেওয়ালে টাঙানো হয়েছে ফৌজি পোশাক পরা ছেলের ছবি। সঙ্গে শ্রদ্ধার বাণী – ভারত মাতার জয়ধ্বনি। ঘরের ভিতর ফুলে সাজানো ছেলের স্মৃতিপট। অন্দরে নির্বাক মা মমতা ওরাং, বাবা সুভাষ ওরাং। গেট পাহারায় ২ তরুণ। ওরা রাজেশের অভিন্নহৃদয় বন্ধু। একজনের বাড়ি সাঁইথিয়া। রাজেশের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে সটান চলে এসেছেন বন্ধুর পরিবারকে।

Advertisement

ছোট্ট উঠোন, তিল ধারণের জায়গা যেন নেই। পাশের গ্রাম শুকনা, শেওড়াকুড়ি, শংকরপুর থেকে মেয়েরা এসেছে হেঁটে শহিদের মা-বাবাকে দেখতে। ঘরের পিছনে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে চড়েছে রান্না। ছেলে শহিদ হয়েছে, এই খবর গ্রামে পৌঁছনোর পর গত দু’দিন ধরেই এখানে অরন্ধন। তৃণমূল বা বিজেপির নেতারা যে যেমন পারছেন, চাল-ডাল এনে গাঁয়ের মানুষদের ভোজনের ব্যবস্থা করেছে। শহিদের মৃত্যু এক সারিতে এনে দিয়েছে এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যদের। আর ছেলেকে কফিনবন্দি অবস্থাতেও না দেখতে পেয়ে মুখে দানা পর্যন্ত কাটেননি মা, বাবা।

[আরও পড়ুন: মেমারিতে প্ল্যাটফর্ম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বৃদ্ধাকে ধর্ষণের অভিযোগ, আরপিএফের ভূমিকায় প্রশ্ন]

এদিন রাজ্যের মন্ত্রী মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় শহিদের মা,বাবাকে শ্রদ্ধা জানান। সাঁইথিয়ার বিধায়ক নীলাবতী সাহা বললেন, রাজেশের সমাধিক্ষেত্রে আবক্ষ মূর্তি গড়ে দেবেন তিনি। এলেন বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল এবং বিজেপি নেতারা। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারী রাজেশের বাবার কাছে পৌঁছে দিলেন রাহুল গান্ধির লেখা শোকবার্তা। কিন্তু শহিদকে দেখার জন্য সাধারণ মানুষের গোটা দিনের অপেক্ষা নিভে গেল সন্ধের পর। শুক্রবার ফের নতুন করে শুরু হবে প্রতীক্ষার প্রহর গোনা। জাতীয় পতাকা হাতে, বাড়ি থেকে তুলে আনা ফুল নিয়ে, দেহ নিয়ে যাওয়ার শকট সাজিয়ে আবেগের শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার অপেক্ষা।

ছবি: সুশান্ত পাল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ