ছবি: সুনীতা সিং
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সমস্ত উন্নয়নমূলক প্রকল্প থেকে বঞ্চিত গ্রাম। তাই শুক্রবার গ্রামের বাসিন্দা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিলেন, দীর্ঘদিনের এই বঞ্চনার কোনও সদুত্তর না মিললে গ্রামে কোনও রাজনৈতিক প্রচার, মিটিং-মিছিল করতে দেবেন না। প্রয়োজনে ভোট বয়কটের হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা। পুরুলিয়া (Purulia) দু’ নম্বর ব্লকের ঘোঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের কোলবাঁধ গ্রামের এমন সিদ্ধান্তে চাপে পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি।
সিদ্ধান্ত জানিয়ে গ্রামে দেওয়াল লিখনের পরই খবর কানে গিয়েছে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, “ওই গ্রামের বাসিন্দাদের কথা শুনতে আমি নিজে যাব। প্রয়োজনে আমার সঙ্গে প্রশাসনের টিম থাকবে। যা সমস্যা আছে ধাপে ধাপে সব মেটানো হবে।” প্রায় ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এই গ্রামে ভোটার সংখ্যা প্রায় দেড় হাজারের কাছাকাছি। প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ দিনমজুর। তাঁরা জানেন না কেন তাঁদের গ্রাম বঞ্চিত। তাই জবাব চাইতেই দেওয়াল লেখা হয়েছে। দেওয়াল লিখনের শিরোনামে লাল কালিতে লেখা হয়েছে ‘গণদাবি’। এরপরই গ্রামের নাম, ভোটার সংখ্যা, অধিকাংশ মানুষ কোন পেশায় যুক্ত তা উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কেন বঞ্চিত তাঁরা সদুত্তর চেয়ে লেখা, ‘প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের পক্ষে সকল গ্রামবাসী’। দেওয়ালেই তুলে ধরা হয়েছে আবাস যোজনা, পানীয় জল, রাস্তা ঢালাই, বনসৃজন, একশো দিনের কাজ, অর্ধনির্মিত জুনিয়র স্কুল, শ্মশান ঘাট, কবর স্থান, গার্ডওয়ালের দাবি।
এদিন পুরুলিয়া দু’নম্বর ব্লকের বিডিও বিজয় গিরি বলেন, “পুরুলিয়া দু’ নম্বর ব্লকের কোনও গ্রামে আবাস পায়নি এটা বোধহয় ঠিক নয়। তবু বিষয়টা আমি দেখছি।” বিধানসভা ভোটের আগে এইভাবে দেওয়াল লিখন করে গ্রামে রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল বন্ধ করে দেওয়ার বার্তায় তোলপাড় জেলার রাজনৈতিক মহল। লোকসভা নির্বাচনেও এই ব্লকের একটি গ্রামে ঠিক এরকমই হয়েছিল। ভোট প্রচারে যেতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিল শাসক থেকে বিরোধী সব দলকে। ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিল গ্রাম। এবার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার আগেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.