পলাশ পাত্র, তেহট্ট: করিমপুরের দাঁড়ের মাঠ। সিপিএময়ের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের পৈত্রিক ভিটে। সেখানেই প্রার্থী দিতে না পেরে সেখানে বিজেপিকে সমর্থন করল সিপিএম। তাদের সমর্থনের তালিকা থেকে বাদ যায়নি নির্দলও।
[দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কত? সঠিক তথ্য নেই মন্ত্রীর কাছে]
তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে দলের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেছেন, “একটা ভোটও যাতে অন্য জায়গায় না পড়ে তার জন্য আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়েছি।” তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ ছিলই। কিন্তু সমস্যাটা বাধে ভোটের মুখে। হন্যে হয়ে প্রার্থী খোঁজা শুরু হয়। অনিলবাবুর বাড়ির এলাকায় থাকা ও তাঁর সংস্পর্শে আসা প্রাক্তন এলসিএস মানিক বিশ্বাস কয়েকমাস আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “অনিলবাবুর বাড়ির এলাকার বুথেও গত বিধানসভা ভোটে সিপিএময়ের লিড ছিল। কিন্তু আজ দম্ভ, কুৎসা আর সৎ মানুষের অভাব সেই দলটাকে এভাবে পিছনে ঠেলে দিয়েছে। আমরা এলাকার ২৭ জন পার্টি সদস্য প্রচুর কর্মী নিয়ে দল ছাড়ি।” তাঁর দাবি, “সে দলে আর লোক না থাকায় সংগঠন ভেঙে পড়েছে। তার জেরেই কোনও প্রার্থী দিতে পারেনি।”
পৈত্রিক ভিটেয় অনিলবাবুর নিজের বসতবাড়িটি ধসে গিয়েছে অনেককাল। পাশের ভিটেতে এখন বসত তাঁর আত্মীয়দের। স্থানীয় পিপুলবেড়িয়া পঞ্চায়েতে দুটি ও তার পাশের শিকারপুর পঞ্চায়েতের একটি বুথ নিয়ে দাঁড়ের মাঠ এলাকা। গত বিধানসভা নির্বাচনে করিমপুর আসনটি তৃণমূল জিতে নিলেও এই তিনটি বুথে শাসকদল পিছিয়েই ছিল। সেই ছবি বদলেছে। কিন্তু হারানো জমি পুনরুদ্ধারের লোক পায়নি অনিল বিশ্বাসের দল। তাঁর ভিটে-সহ গোটা পিপুলবেড়িয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি কোনওটিতেই প্রার্থী দিতে পারেনি তারা।
বাম রাজনীতির চাণক্য খোদ অনিল বিশ্বাসের এলাকায় সিপিএমের এই ‘রক্তাল্পতা’ নিয়ে একাধিক বক্তব্য উঠে এলেও বাস্তবে লাল পতাকা বওয়ার মানুষ কার্যত নেই। সে কথা অস্বীকার করছেন না খোদ বাম নেতারাও। এক রাজ্যনেতার আক্ষেপ, “একসময় যে মানুষটা হাতের তালুর মতো সংগঠন বুঝতেন করতেন, তাঁর হাতে গড়া মানুষরা আজ এই এলাকায় দলটাই করেন না।”
[নোট বাতিলের পর এবার আধারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিল গেটস]
১৬ আসনের পিপুলবেড়িয়ায় তৃণমূল সবকটিতে প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি দিয়েছে ১১টিতে। অতি উৎসাহে তৃণমূলের আরও ১৪ জন প্রার্থী হয়েছেন। মায়াবতীর দল বিএসপি আবার এখানে ১টি প্রার্থী দিয়েছে। মূল লড়াইটা হচ্ছে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির। এই পরিস্থিতিতেই বিজেপিকে সমর্থনের কথা জানিয়েছে জেলা সিপিএম। তৃণমূলের পিপুলবেড়িয়ার অঞ্চল সভাপতি রিকাত আলি খানের অভিযোগ, “উন্নয়নের বিরুদ্ধে সিপিএম, নির্দল ও বিজেপি এখানে জোট করে লড়ছে। বিজেপি ধর্মের রাজনীতি করছে। যেখানে হিন্দু এলাকা সেখানে বিজেপি আর যেখানে মুসলিম এলাকা সেখানে নির্দলের সঙ্গে জোট করেছে সিপিএম।”
সাংগঠনিক ব্যর্থতার কথা উড়িয়ে দিলেও বিজেপির সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেছেন, “আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়ছি। একটা ভোটও যাতে অন্য জায়গায় না পড়ে তার জন্য আমরা সবাইকে সঙ্গে নিয়েছি। নির্দলকেও সমর্থন করছি।” তাঁর কথায়, “সন্ত্রাসের কারণে প্রার্থী দেওয়া যায়নি। আমাদের একটাই লক্ষ্য তৃণমূলকে হারাতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.