সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বিরোধীদের উপর চাপ ছিল। চাপ রয়েছে বিক্ষুব্ধ বা গোঁজ প্রার্থীদের উপরও। কিন্তু পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকায় উলটপুরাণ ঘটছে। গোঁজ প্রার্থীদের হুমকির মুখে পড়েছেন তৃণমূলের কয়েকজন অফিসিয়াল প্রার্থী। এমনকী পার্টি অফিসে ডেকে তাঁদেরই ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় কয়েকজন নেতার মদতে অফিসিয়াল প্রার্থীরা আতঙ্কের মুখে পড়েছেন। দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তাঁরা।
[ স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই প্রার্থী, ঘরকন্না সামলাচ্ছেন আত্মীয়রাই ]
হাই কোর্টে মামলার জেরে ভোট প্রক্রিয়া আপাতত থমকে গিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য শাসকদলের বিরুদ্ধে চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী হুমকির জেরে বিরোধী প্রার্থীদের অনেকেই আত্মগোপন করে রয়েছেন বলে দাবি সিপিএম-বিজেপির। সিপিএম নেতা অচিন্ত্য মল্লিক অভিযোগ করেছেন, তাঁদের প্রার্থীদেরও মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে গ্রামে গ্রামে হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল। জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, “সিপিএম প্রার্থী খুঁজে পেয়েছেন নাকি কোথাও! কয়েকটা পরিবারের মধ্যে দলটা সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছে।ওরা তো কোনও নেতার স্ত্রী, ভাই, বোন, সবাইকে প্রার্থী করেছে। এই হাল দলটার। তাদের আবার হুমকি দিতে হবে নাকি মনোনয়ন তোলার জন্য?”
[ ভোটের বাজারে জোড়া লাগল পুরনো সম্পর্ক, স্বামীর ঘরে ফিরলেন স্ত্রী ]
তবে দলের অফিসিয়াল প্রার্থীকেই গোঁজ প্রার্থীদের হুমকি দেওয়া নিয়ে শোরগোল পড়েছে। বর্ধমান-১ ব্লকের বেলকাশ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ নম্বর আসনে নীলুফা বেগমকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। ওই আসনে আরও একজন গোঁজ প্রার্থী হয়েছেন। তৃণমূল সূত্রেই খবর, দলের ওই মহিলা প্রার্থীকে নাম প্রত্যাহার করার জন্য গোঁজ প্রার্থী ও তাঁদের অনুগামীরা চাপ দিচ্ছেন।গ্রামবাসীরা ওই মহিলা প্রার্থীর সমর্থনে রয়েছেন।কিন্তু ওই পঞ্চায়েতের এক পদাধিকারীর নেতৃত্বে গোঁজ প্রার্থীকে মদত দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।এমনকী পার্টি অফিসে ডেকে গ্রামবাসী ও তৃণমূলের ওই মহিলা প্রার্থীকে নাম তুলতে হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। বিষয়টি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের নজরে এনেছেন ওই প্রার্থী ও তাঁর অনুগামীরা। একইভাবে এই ব্লকের কয়েকটি আসনেও এমন ঘটছে বলে অভিযোগ করেছেন অফিসিয়াল প্রার্থীরা।
[ একই আসনে দুই সতীনের মনোনয়ন, বিপাকে স্বামী ]
জেলা তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ সাফ জানিয়েছেন, যাঁরা দলের নির্দেশ অমান্য করে মনোনয়ন জমা করেছেন তাঁরাই প্রত্যাহার করবেন। স্থানীয় নেতৃত্বকে সেই বিষয়ে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তবে দলের অফিশিয়াল প্রার্থীকে হুমকি দেওয়া হয়ে থাকলে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে। তৃণমূলের জেলা নেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত কেউ অমান্য করলে দল ছেড়ে কথা বলবে না। দলের সিদ্ধান্ত সকলকেই মানতে হবে।”