Advertisement
Advertisement

নতুন সরকার, নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে চলেছেন ‘দিদি’

মন্ত্রীদের তালিকা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ইনিংস একেবারেই অন্য মেজাজে খেলতে চাইছেন মমতা৷ সমর্থন বেশি, ফলে দায়িত্বও বেশি৷ সেদিকে নজর দিয়েই এগোতে হবে আগামী পাঁচটি বছর৷

West Bengal: Mamata Banerjee and 41 ministers to take oath tomorrow
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 27, 2016 9:11 am
  • Updated:June 23, 2022 7:45 pm

কিংশুক প্রামাণিক: ১৮ জন নতুন মুখ মন্ত্রিসভায় এনে চমক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রী হবেন তা প্রচার শুরুর আগেই নন্দীগ্রামে গিয়ে ঘোষণা করেছিলেন৷ এমনকী, তৃণমূলে যোগ দেওয়া সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি, রেজ্জাক মোল্লাদেরও যে মন্ত্রী করবেন তা ভোটের আগেই স্পষ্ট ছিল৷ কিন্তু নতুন মন্ত্রিসভায় দুই ‘শোভন’কে যেভাবে ঠাঁই করে দিলেন তা আক্ষরিক অর্থে চমক৷ দীর্ঘ সংগ্রামের সঙ্গী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে গতবার বিধানসভার মুখ্যসচেতকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন৷ এবার তাঁর কাছে নেত্রী জানতে চান ওই পদেই থাকতে চান কি না৷ শোভনদেববাবু অনিচ্ছা প্রকাশ করায় তাঁকে এবার মন্ত্রী করে সম্মানিত করলেন মমতা৷ পাশাপাশি আরেক শোভন অর্থাত্‍ কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও মন্ত্রিসভায় নিয়ে এলেন৷ তাঁর মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জল্পনা শুরু হয়- তাহলে কি মেয়র পদে বদল হবে! মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং জানিয়ে দেন, কোনও বদল হচ্ছে না৷ কাজের স্বার্থেই কলকাতার দায়িত্বের সঙ্গে মন্ত্রীর দফতরও সামলাবেন ‘কানন’বাবু৷ মন্ত্রিসভায় আরও চমক বাংলার স্বনামধন্য ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লার অন্তর্ভুক্তি৷ এলেন সুগায়ক ইন্দ্রনীল সেনও৷

oath1_web
যে কায়দায় সবার অলক্ষ্যে প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছিলেন ঠিক সেইভাবেই মন্ত্রিসভাও গড়ে ফেলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ শপথের আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে তাঁর মন্ত্রীদের তালিকা পেশ করেন৷ পরে তা সাংবাদিকদের হাতে দেন৷ এতদিন কারও জানার উপায় ছিল না নেত্রী ঠিক কাকে কাকে মন্ত্রী করছেন৷ ফলে তাবড় নেতারাও টেনশনে ছিলেন৷ ভাবছিলেন শেষপর্যন্ত মন্ত্রী হবেন তো! ২১১-এর বিধায়ক দলে টেনশন হওয়াটা স্বাভাবিক৷ কিন্তু সন্ধ্যায় তালিকা প্রকাশ হতেই সিনিয়র নেতাদের কার্যত ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে৷ প্রথম সারির প্রায় কাউকেই নিরাশ করেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ অমিত মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ববি হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্রাত্য বসু, পূর্ণেন্দু বসু, স্বপন দেবনাথ, অরূপ রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, মলয় ঘটক, সাধন পাণ্ডে, শান্তিরাম মাহাতো, শশী পাঁজা, গৌতম দেব, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমেন মহাপাত্র, জাভেদ খানরা মন্ত্রিসভায় থাকছেন৷ উজ্জ্বল বিশ্বাসের নামটি তালিকাভুক্ত হয়নি সাময়িক ভ্রান্তির জন্য৷ ফলে আজ তিনি শপথ নিতে পারছেন না৷ পরে নেবেন৷

Advertisement

oath2_web
সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী-সহ ৪৩ জনের মন্ত্রিসভা পাচ্ছে রাজ্য৷ একটি পদ ফাঁকা থাকছে৷ আট মন্ত্রী নির্বাচনে হেরেছিলেন৷ এবার নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি আরও ন’জনের৷ বেচারাম মান্না, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, হায়দার আজিজ সফি, রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, রচপাল সিং প্রমুখের৷ মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের মন্ত্রী ছিলেন সুব্রত সাহা৷ এবার তাঁর জায়গায় মন্ত্রী করা হয়েছে জাকির হুসেনকে৷ যদিও এঁদের ক্ষেত্রে ‘বাদ’ শব্দটি বলা যাচ্ছে না৷ কারণ মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভা ছিল একরকম৷ দ্বিতীয়টি অন্যরকম৷ ফলে কাউকে বাদ নয়, পুরনো মন্ত্রিসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে৷ মন্ত্রিসভা গড়া হয়েছে নতুন সরকারের বিজয়ী বিধায়কদের মধ্যে থেকেই৷ যেহেতু তৃণমূল কংগ্রেস তাদের তালিকায় সব জেলা ও সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধিত্ব বজায় রাখে সেজন্য সব দিক বিবেচনা করেই সেরা তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে৷ মন্ত্রিসভায় নতুনদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হল প্রাক্তন পুলিশ কর্তা অবনী জোয়ারদার, ধনেখালি থেকে নির্বাচিত অসীমা পাত্র, গোয়ালপোখর থেকে নির্বাচিত গোলাম রববানি, হুগলির তপন দাশগুপ্ত, কোচবিহারের রবি ঘোষ, দক্ষিণ দিনাজপুরের বাচ্চু হাঁসদা প্রমুখ৷ মুখ্যমন্ত্রীর দুঃখ, তিনি মালদহ থেকে কাউকে মন্ত্রী করতে পারলেন না৷ কারণ সেখানে দলের কেউ জেতেননি৷

Advertisement

oath3_web
বস্তুত নতুন সরকার, নতুন চ্যালেঞ্জ৷ মন্ত্রীদের তালিকা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ইনিংস একেবারেই অন্য মেজাজে খেলতে চাইছেন মমতা৷ সমর্থন বেশি, ফলে দায়িত্বও বেশি৷ সেদিকে নজর দিয়েই এগোতে হবে আগামী পাঁচটি বছর৷ তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, যেভাবে নেত্রী এবার শুরু থেকেই সাংগঠনিক স্তরে কঠোর মনোভাব নিয়ে চলছেন, তার প্রভাব পড়বে মন্ত্রীদের পারফরম্যান্সেও৷ কারও আসন চূড়ান্ত নয়৷ ভাল কাজ, ভাল পুরস্কার৷ না পারলে তিরস্কার৷ আজ শপথের পর দফতর বণ্টনের প্রক্রিয়া শুরু হবে৷ তার আগে একথা বলেই দেওয়া যেতে পারে, ২৯৪টি আসনে তিনি যেমন প্রার্থী ছিলেন, তেমনই গোটা মন্ত্রিসভার মস্তিষ্ক তিনি নিজেই৷ একার শক্তিতে আরও পাঁচ বছর এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য৷ আজ রেড রোড থেকে শুরু হবে নতুন লক্ষ্যের পথ চলা৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ