শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: এক উঠোন। এক হাঁড়ি। প্রার্থী চারজন। বাবা, ছেলে, বউমা ও কাকিমা। একই পরিবারে চার দলের চার প্রার্থী। একই উঠোনে উড়ছে চার রাজনৈতিক দলের ঝান্ডা। এবারের নির্বাচনে ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারের রায় পরিবার এখন নজর কাড়ছে। পরিবারের চার প্রার্থীই এখন আলোচনার বিষয়। বাবা তৃণমূল প্রার্থী। ছেলে আরএসপি প্রার্থী। ছেলের বউ বিজেপি। আর কাকিমা এসইউসিআই প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়বেন। একই পরিবার থেকেই চার রাজনৈতিক দলের চারজন প্রার্থী। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই চিত্রই দেখা যাবে ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডার অঞ্চলে। গোটা গ্রাম জুড়ে এখন একটাই আলোচনা কে জিতবেন!
[২৩ কিমি বাইক চালিয়ে মনোনয়ন জমা, পুরুলিয়ায় চমক পূর্ত কর্মাধ্যক্ষর]
ময়নাগুড়ি ব্লকের চূড়াভাণ্ডার অঞ্চলে ১৭/১৭৩ নং বুথে পঞ্চায়েত নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। কারণ রায় পরিবারের এই চার প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা। বাড়ির এক ছেলে নব্যেন্দু রায় আরএসপির প্রার্থী হিসেবে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর মুখে বামতত্ত্ব। তাঁর বউদি সোনি রায় বিজেপির প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। তিনি বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের গল্প। বাবা শিবেশ্বর রায় তৃণমুলের প্রার্থী হয়েছেন। আর কাকিমা এসইউসিআই প্রার্থী। এই বুথটি দীর্ঘদিন ধরেই বামেদের দখলে রয়েছে। তবে এবার চিত্রটা কী হবে তা নিয়ে কিন্তু ধোঁয়াশা রয়েছে। এই পরিবারের সঙ্গে গোটা গ্রামের সুসম্পর্ক রয়েছে। ফলে কোন ভোট কোথায় পড়বে সেটা কেউই হলফ করে বলতে পারবে না। নব্যেন্দু রায়, জানালেন তিনি আগাগোড়া বামপন্থী। তাই তিনি বামেদের প্রতিনিধি হয়েই নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন। তাই বলে পরিবারের সম্পর্কে কোনও ছেদ পড়েনি। তবে নিজেদের মধ্যে দলের নীতি ও ভাবাদর্শ নিয়ে আলোচনাও হয়। পরিবারে কোন আঁচ আসবে না, বলেই জানালেন বিজেপি প্রার্থী সোনি রায়। রাজনীতির সঙ্গে পরিবারের বিষয়টা কোনভাবেই মেলানো চলবে না বলেই মনে করেন নব্যেন্দুর বাবা তথা তৃণমুল প্রার্থী শিবেশ্বর রায়। তাঁর মতে, প্রত্যেকের আলাদা আলাদা মতাদর্শ থাকতেই পারে। তাই তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে কাকিমা ঝরনা রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এসইউসিআই দলের হয়ে। জলপাইগুড়ি জেলার চূড়াভাণ্ডারের এই বুথের একই পরিবারের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে কেন্দ্র করে জল্পনা এখন তুঙ্গে।
[সেজেগুজে সাড়ম্বরে চলেছেন মহিলা প্রার্থী, বিয়েবাড়ির লোক ভেবে ভ্রম বাসিন্দাদের]
তবে যেই জিতুন না কেন পরিবারের সদস্যদের দাবি, মাংস ভাত দিয়ে পারিবারিক পিকনিক করতেই হবে। সদস্যদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রেখেই শান্তিপূর্ণ ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করাটাই রায় পরিবারের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এমনটাই জানিয়েছেন এই চার প্রার্থী।