টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: গত কয়েক বছরে নেতাদের বিলাসবহুল বাড়ি, ঘরে ঘরে বুলেট-সহ চার চাকা গাড়ি হল কী করে? এই ইস্যুতেই এখন ভোটের পারদ চড়েছে বাঁকুড়ার ওন্দা বিধানসভার পুলিশোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় খাতায় কলমে বিরোধী বামফ্রন্ট আর বিজেপি। তবে তারা এখনও খাতা খুলতে না পারলেও তৃণমূল প্রার্থীদের টক্কর দিতে তৃণমূল কংগ্রেসেরই একাংশ কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে নির্দল প্রার্থী সেজে।বিগত পাঁচ বছরে দুর্নীতির ইস্যু নিয়ে ভোটের ময়দানে তারা।
[অনলাইনে টিকিট কাটার আগে রেলের নয়া নিয়মগুলি জেনে রাখুন]
পুলিশোল গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসন সংখ্যা ২১। ইতিমধ্যেই ৫টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা। বাকি ১৫টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের টক্কর দিতে লড়াই হবে নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে। গত ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই পুলিশোল গ্রাম পঞ্চায়েতে বামফ্রন্ট ১১, নির্দল ৩ আর বাকি ৭টি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা। খাতায় কলমে এখনও পর্যন্ত বিরোধী দলনেতা তৃণমূল কংগ্রেসের আব্দুল সাত্তার সাহেব। প্রথমে প্রধান ছিলেন সিপিএমের মাধুরী রায়। পরে তিনি পদত্যাগ করায় আরএসপি সদস্যকে তৃণমূল শিবিরে নিয়ে এসে প্রধানের পদে বসানো হয়। অভিযোগ, তারপর থেকেই দুর্নীতির আখড়া তৈরি হয়েছে এই পুনিশোল গ্রামপঞ্চায়েত।
অভিযোগ, গত পাঁচ বছর মৌরসিপাট্টা চালিয়েছেন বিরোধী নেতা আব্দুল সাত্তর ও তাঁর অনুগামীরা। অন্যদিকে সংখ্যালঘু এই পুলিশোল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই ৩টি পঞ্চায়েত সমিতির আসন রয়েছে। অভিযোগ, ৩টি পঞ্চায়েত সমিতি আর ২১টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের এই এলাকায় উন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও কাজের কাজ হয়নি। অথচ, এই গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যুক্ত নেতানেত্রীদের আর্থিক উন্নতির বহর বেড়েছে কয়েক গুণ। অন্তত এমনটাই অভিযোগ পুলিশোল অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি আবুল হোসেন মল্লিকের। তিনি বলেন, “বাপরে কী ডানপিটে ছেলে! ১০ বছরে যা পেয়েছে সব গিলে নিয়েছে। গত পাঁচ বছরে যে সমস্ত তৃণমূল নেতারা বিলাসবহুল বাড়ি তুলেছেন, ঘরে ঘরে গাড়ি তুলেছেন কী করে? এই প্রশ্ন তুলে আমরা মানুষের কাছে যাব ভোট চাইতে।”
[শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবিতে ধর্মতলায় অনশনে কংগ্রেস, মিছিলে বামেরা]
উল্লেখ্য, পুলিশোল এলাকার দেওয়াল লিখনেও এই জায়গা করে নিয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ। তবে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ মানতে নারাজ এই পুনিশোল অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি রেজাউল হক মণ্ডল। তাঁর দাবি, সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। তাঁরাও ভোটপ্রচারে বাড়ি, গাড়ির ইস্যু তুলবে। তবে প্রশ্ন নয়, অভিযোগের উত্তর দেবেন তারা। তবে কী সেই উত্তর সেই অপেক্ষাতেই রয়েছে পুলিশোল অঞ্চল।