টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার পথে দুষ্কৃতীদের হামলায় মৃত্যু হল বিজেপি নেতার। অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই হামলা চালিয়েছে। মৃতের নাম অজিত মুর্মু(৪০)। তিনি বিজেপির বাঁকুড়া জেলার রানিবাঁধ দক্ষিণ মণ্ডল কমিটির সম্পাদক। তাঁর বাড়ি রানিবাঁধ ব্লকের পুনসা গ্রামে। পুনসা গ্রাম পঞ্চায়েতের সংসদ আসনের জন্যই বুধবার মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন অজিত মুর্মু। তাঁর গন্তব্য ছিল রানিবাঁধ বিডিও অফিস।
[দখল হটাতে গিয়ে আক্রান্ত আরপিএফ, রণক্ষেত্র ধুবুলিয়া স্টেশন]
জানা গিয়েছে, বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে মিছিল করে যাওয়ার সময় আচমকাই কয়েকজন দুষ্কৃতী পথ আটকায়। এগোতে না পেরে পথেই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আইসি-সহ রানিবাঁধ থানার পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশের সামনেই দুষ্কৃতীরা চড়াও হয় বিজেপি কর্মীদের উপরে। লাঠি, টাঙি, বল্লম, রড দিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু করে। মারামারি দেখেও উপস্থিত পুলিশকর্মীদের মধ্যে কোনওরকম হেলদোল দেখা যায়নি। প্রায় নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিল পুলিশ, এমনটাই অভিযোগ। এদিকে মারধরের জেরে গুরুতর আহত হয় প্রায় ১২ জন বিজেপি কর্মী। তড়িঘড়ি আহতদের রানিবাঁধ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মণ্ডল সম্পাদক-সহ চারজনের অবস্থার অবনতি হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা যখন আহত অজিত মুর্মুকে পরীক্ষা নীরিক্ষা করছেন, তখনই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনাটি ঘটে সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাথা ও অন্ত্রে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন অজিতবাবু। এই আঘাতের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
স্বামীর মৃত্যুতে কান্নায় বেঙে পড়েছেন স্ত্রী উর্মিলা মুর্মু। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। তাঁদের বছর আটেকের একটি শিশুপুত্রও রয়েছে। সূত্রের খবর, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পেশায় কৃষক অজিত মুর্মু ২০১৫ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। গোটা ঘটনায় শাসক তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে জেলা বিজেপি। তবে সেই অভিযোগ মানতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিকে দলের মণ্ডল সম্পাদকের মৃত্যুর খবর পৌঁছেছে কলকাতায়। বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তরফে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় ও সঞ্জয় সিংয়ের নেতৃ্ত্বে পাঁচজনের একটি প্রতিনিধি দল রানিবাঁধে আসছে।