Advertisement
Advertisement

স্বাধীনতা আন্দোলনে শহিদ একই গ্রামের ১৪ জন, তবুও নেই কোনও স্মৃতিফলক

ক্ষোভে ফুঁসছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর৷

West Midnapore village wants recognition for ‘Namak Satyagrah’ martyr
Published by: Tanujit Das
  • Posted:August 14, 2018 4:18 pm
  • Updated:August 14, 2018 7:05 pm

শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: এও যেন এক জালিয়ানওয়ালাবাগের কাহিনি৷ এক দিনে ইংরেজ পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়েছিলেন ১৪ জন স্বাধীনতা সংগ্রামী৷ কিন্তু নামমাত্র একটি শহিদ স্মৃতিস্তম্ভেই আত্মবলিদানের সাক্ষ্যবহণ করে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের চেঁচুয়া গোবিন্দনগর গ্রাম৷ প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসের দিন গ্রামের মানুষ শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শহিদদের স্মরণ করেন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ আজও সেই ঘটনা ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পায়নি। তৈরি হয়নি সরকারি উদ্যোগে কোনও স্মৃতিস্তম্ভ। কী ঘটেছিল এই গ্রামে?

[ভোজনরসিকদের জন্য সুখবর, দিঘায় উঠল ১০০ টন ইলিশ]

Advertisement

১৯৩০ সালের ছয় জুন দাসপুরের চেঁচুয়া গোবিন্দনগর গ্রামে ঘটে সেই রক্তস্নাত ঘটনা৷ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো দাসপুরেও মহাত্মা গান্ধীর ডাকে লবণ আইন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা৷ দাসপুরের শ্যামগঞ্জে রূপনারায়ণ নদের তীরে লবণ সত্যাগ্রহীদের শিবির স্থাপন করা হয়৷ যা কোনও মতেই মেনে নিতে পারেনি তৎকালীন ইংরেজ শাসকরা৷ ইংরেজ শাসকের নির্দেশে দাসপুরের পুলিশ নির্বিচারে অত্যাচার চালায়৷ দাসপুরের সোনাখালি, গোপীগঞ্জ, জোতঘনশ্যাম, শয়লা, চেঁচুয়া গোবিন্দনগর প্রভৃতি গ্রামে সত্যাগ্রহীদের উপর নেমে আসে চরম অত্যাচার৷

Advertisement

এদিকে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে গোটা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে৷ তার সঙ্গে যুক্ত হন চরমপন্থি যুগান্তর সমিতির সদস্যরা৷ তাঁরা বিলিতি দ্রব্য পোড়াতে লাগে৷ চেঁচুয়া গোবিন্দনগর গ্রামে প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার যে হাট বসত৷ সেই হাটেই পোড়ানো হত বিলিতি জামা কাপড় প্রভৃতি৷ এ খবর পেতে দেরি হয়নি ইংরেজ পুলিশের৷ দাসপুর থেকে চেঁচুয়া হাটে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী৷ সেদিনটা ছিল ১৯৩০ সালের তিন জুন৷ সেদিন দাসপুরের অত্যাচারী দারোগা ভোলানাথ ঘোষ ও তাঁর শাকরেদ অনিরুদ্ধ সামন্তকে কুপিয়ে খুন করে লাশ গুম করে দেন গ্রামবাসীরা৷ তারপরই মেদিনীপুরের তৎকালীন জেলাশাসক পেডির নির্দেশে চলে অকথ্য অত্যাচার৷ ছয় জুন চেঁচুয়া হাটে এক জমায়েতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ১৪ জন আন্দেলনকারীকে হত্যা করে ইংরেজ পুলিশ৷ কত যে আহত হয় তার কোনও হিসাব ছিল না৷ মাসের পর মাস পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে থাকে গ্রামের পর গ্রাম৷

[রাষ্ট্রপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পড়ুয়ার উত্তরে চোখ কপালে প্রশ্নকর্তার]

এই ঘটনা ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকান্ডের ঘটনাকেই মনে করে দেয়৷ কিন্তু সেই ঘটনা আজও ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পায়নি বলে ক্ষোভ দাসপুরবাসীদের৷ এমনকী হয়নি সরকারি উদ্যোগে কোনও শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ৷ যদিও চেঁচুয়া হাটে সম্প্রতি একটি শহীদ স্মৃতি পার্ক তৈরি করে দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ৷ জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র জানিয়েছেন, ঐতিহাসিক ঘটনাস্থলে একটি শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷

ছবিঃ সুশান্ত চক্রবর্তী

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ