বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: ২ বছরের কন্যাসন্তান-সহ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত এক বধূ। স্বামীর অত্যাচারে বাপের বাড়িতে আসার পরদিনই ঘর থেকে উদ্ধার হয় বধূ-সহ শিশুর দগ্ধ দেহ। মৃতার নাম রুমা দাস। ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য নদিয়ার কামগাছি উত্তরপাড়া এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দুবছরের শিশুসন্তান-সহ রুমা ঘরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। যদিও মৃতার পরিজনেরা রুমার স্বামীর বিরুদ্ধে অত্যাচার করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন তাহেরপুর থানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে রুমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে তাহেরপুর থানার পুলিশ।
জানা যায়, বছর পাঁচেক আগে পেশায় দিনমজুর লক্ষণ দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় রুমা দাসের। বিয়ের পর তাদের একটি পুত্র ও একটি কন্যাসন্তান জন্মায়। রুমার পরিজনদের দাবি, “বিয়ের কয়েকদিনের মধ্যেই রুমার সঙ্গে তার স্বামীর বিভিন্ন কারণে অশান্তি লেগেই থাকত। প্রায় প্রতিদিন রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়িতে ফিরে রুমাকে অত্যাচার, মারধর করত লক্ষ্মণ দাস।” তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সোমবার দুপুরে সোনার একটি কানের দুল নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গন্ডগোল চরমে ওঠে। ওইদিন স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করে মৃতার পরিবার।
মঙ্গলবার ওই গৃহবধূর মা আন্না সরকার নিজের বাড়িতে মেয়ে ও দু’বছরের নাতনিকে নিয়ে আসেন। যদিও রুমাদেবীর ছেলে থেকে যায় তার বাবার কাছেই। বুধবার সকালে, রুমার মা পরিচারিকার কাজে বেরিয়ে গেলে রুমার প্রতিবেশীরা তার ঘর থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখেন। স্থানীয়দের তৎপরতায় আগুন নেভানো সম্ভব হয়। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, “সেইসময় ওই ঘরের ভিতর থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় ছিল।” স্থানীয়রা দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। যদিও ততক্ষণে ঘরের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দুবছরের কন্যাসন্তান-সহ মারা যান রুমা।
[আরও পড়ুন:দুটো হাতই ভরসা, প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে বেঞ্চে শুয়ে মাধ্যমিক দিচ্ছে বাপি]
রুমার মাসি পার্বতীদেবী জানিয়েছেন, “সোমবারও রুমাকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুব মারধর করে। তাই মেয়েকে নিয়ে মঙ্গলবার রুমা বাপের বাড়ি চলে আসে। বুধবার কখন ঘরে আগুন লাগে তা আমরা প্রথমে বুঝিনি।” স্থানীয়রা তাহেরপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।