ব্রতীন দাস: একটু বড় হওয়ার পর প্রিয়দীপ যখন দুনিয়াকে ঠিকমতো চিনতে শিখল তখনই বিখ্যাত বাবা চলে গেল কোমায়। যিনি সবই দেখেন, বোঝেন কিন্তু কিছু বলতে পারেন না। লন্ডনের কিংস কলেজে পড়াশোনার ফাঁকে বাবার খবর নিত প্রিয়দীপ। মায়ের জন্য ভোটের প্রচারেও এসেছে। রাজনীতির দুনিয়ার দরজাগুলো যখন এক এক করে প্রিয়দীপের কাছে খুলছে এমনই এক মুহূর্তে চলে গেলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আদরের একমাত্র সন্তান প্রিয়দীপ এখন তরুণ। বাবার মৃত্যুর তাঁর জীবনের যেন বদলে গিয়েছে। সেই বদলের কথা উঠে এল তার একটি ফেসবুকে পোস্টে।
প্রিয়দীপ বা সকলের মিছিল লেখেন, ”বাবা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং FIFA-তে ছিল। দুটি ক্ষেত্রেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তাই লোকজন প্রায় আমাকে নিয়ে ‘মজা’ করত যে আমার কাছে প্রচুর কালো টাকা আছে। কিন্তু, আমি গর্ব এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলছি আমার বাবা এক পয়সাও ঘুষ নেয়নি। বাবার সততা, আগ্রাসী ব্যক্তিত্ব এবং প্যাশন তাঁর উত্তরাধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছে। যার কিছুটা আঁচ আমি পেয়েছি বাবার শেষযাত্রায়…”। মিছিলের সংযোজন, ”যখন আমি সত্যি সত্যি চোখ খুললাম তখন বুঝলাম মানুষ কীভাবে (বাবার মৃত্যু নিয়ে) প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে। বিভিন্ন স্তরের মানুষরা এসেছেন। তাঁরা বাবাকে দেখার জন্য ঠেলাঠেলি করছেন। তাঁদের যন্ত্রণা, অসহায়তার বহিঃপ্রকাশ আমাকে বুঝিয়েছে বাবার গুরুত্ব কতটা। বুঝতে পেরেছি, আমার বাবার মৃত্যু তাঁদের মধ্যে কতটা প্রভাব ফেলেছে। সেই মুহূর্ত থেকেই আমি অনুভব করলাম, এই সব মানুষগুলো আমার নিকট আত্মীয়। তাঁদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আছে। এইসব মানুষগুলোর প্রতি আমি দায়িত্ব অনুভব করতে শুরু করলাম। কারণ অগনিত লোক আমার বাবাকে ভগবান ভেবে পুজো করে। রাজনৈতিক গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে বহু মানুষ তাকে ভালোবাসে। বাবা তাঁদের শ্রদ্ধা অর্জন করেছে। তাঁদেরকে প্রভাবিত করতে পেরেছে। বাবা কাজের মাধ্যমে নিজের ভাবমূর্তিকে অমর করে রেখেছে ।… বাবা আমি আজ প্রতিজ্ঞা করছি, আমি মায়ের যত্ন নেব এবং তোমার উত্তরাধিকারকে শুধু বহন নয়, তাকে উচ্চতার শিখরে পৌঁছে দেব। আমার বাবা মানুষের জন্য বাঁচত এবং মানুষের কথা ভেবে নিশ্বাস নিত। আমিও তাই করব…”
তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে লেখা বর্তমানে পড়ুয়া, ভবিষ্যতের রাজনীতিবিদ। মিছিলের ফেসবুক পোস্ট থেকে পরিষ্কার দাশমুন্সি বংশের উত্তরাধিকার তাঁর হাতে। কালিয়াগঞ্জের আরও এক প্রতিনিধি ভারতীয় রাজনীতির প্রিয় কথা শোনাতে নিঃশব্দে তৈরি হচ্ছেন।