Advertisement
Advertisement
Woman allegedly killed her husband by the help of boyfriend

প্রেমিকের ছকে দেওয়া ব্লু প্রিন্টে স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে খুন! ১৬ দিনে জয়পুর হত্যাকাণ্ডের কিনারা

পুলিশের জালে গোয়ায় থাকা প্রেমিক।

Woman allegedly killed her husband by the help of boyfriend । Sangbad Pratidin

ছবি: সুনীতা সিং।

Published by: Sayani Sen
  • Posted:April 6, 2023 7:07 pm
  • Updated:April 6, 2023 7:08 pm

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ডিম-ভাতের সঙ্গে ২৫টা ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বেহুঁশ করা হয়। তারপর মাথায় বাটখারা দিয়ে মেরে স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে নিয়েছিলেন স্ত্রী। সুদূর গোয়া থেকে প্রেমিকের ছকে দেওয়া নকশা ফোনে শুনে স্বামীকে হত্যা করেছিল তার ঘরনি। পুরুলিয়ার জয়পুরে নিজের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দি স্বামীর মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে এই তথ্যই হাতে পেল পুলিশ। সেই সঙ্গে যে ছুরি ও ব্লেড দিয়ে গোপনাঙ্গ কাটা হয়েছিল, সেই ধারাল অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে সিম ও মোবাইল।

পাঁচ বছর ধরে চলা পরকীয়া ফাঁস হয়ে যাওয়াতেই প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে সরিয়ে দিয়ে প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল স্ত্রী। তাকে ধৃত প্রেমিকের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে ১৬ দিনের মধ্যে জয়পুর হত্যাকাণ্ডের কিনারা করে দিল পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। পুরুলিয়ার জয়পুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত প্রেমিকের নাম ক্ষেত্রপাল মাহাতো। তার বাড়ি জয়পুর থানার শিলফোড় গ্রামে। বেশ কিছুদিন ধরে সে গোয়াতে শ্রমিকের কাজ করত। মঙ্গলবার তাকে জয়পুরের কাঁঠালটাড় থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

Advertisement

এখন সে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। আগেই গ্রেপ্তার হওয়া স্ত্রী উত্তরা মাহাতোকে ১০ দিন পুলিশ হেফাজত শেষে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। তারপর এই খুনের মোটিভ-সহ যাবতীয় বিষয় সামনে আনে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরকীয়াতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্বামী। তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এই হত্যাকাণ্ড। যে অস্ত্রে স্বামীর গোপনাঙ্গ কাটা হয়েছিল সেগুলি উদ্ধার হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট এক্সপার্টের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তদন্তে কিছু কারিগরি প্রমাণ আমরা সংগ্রহ করছি।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে অস্ত্র! পুলিশি বাধায় রাস্তায় বসে বিক্ষোভ লকেটের, উত্তপ্ত বাঁশবেড়িয়া]

রাঙ্গুনিটার গ্রামের বাসিন্দা জুড়ন মাহাতো। চলতি বছরের ২০ মার্চ জুড়ন নিখোঁজ হয়ে যান বলে তার স্ত্রী উত্তরা মাহাতো এলাকায় রটিয়ে দেয়। একদিন পর ২২ মার্চ ছেলে অপূর্বকে নিয়ে জয়পুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে আসে উত্তরাদেবী। তার তিনদিন পর ২৫ মার্চ অপূর্ব পুলিশকে জানায় তাদের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বেরচ্ছে। এরপর জয়পুর থানার পুলিশ সেখানে গিয়ে ওই সেপটিক ট্যাংক থেকে দেহ উদ্ধার করে ছেলে অপূর্ব মাহাতো। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে মা তথা নিহত জুড়নের স্ত্রী উত্তরা মাহাতোকে ২৬ মার্চ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপরই চলে টানা জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশি জেরায় ভেঙে পড়ে উত্তরা। স্বীকার করে তার স্বামী জুড়ন তাদের পরকীয়া জেনে ফেলার কারণেই রোজ অশান্তি হত। তাই সে ও তার প্রেমিক ক্ষেত্রপাল বেশ কিছুদিন ধরে পরিকল্পনা করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ঝালদার হাটে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে জুড়ন। এমন গল্প বানানো হয় বলে জানিয়েছে ধৃত উত্তরা দেবী। ২০ মার্চ রাতে প্রেমিককে ফোন করে। রাতভর প্রমাণ লোপাটে উত্তরা দেবীকে সহায়তা করে যায় ক্ষেত্রপাল। উত্তরা দেবী কানে মাফলার জড়িয়ে সেখানে ফোন রেখে প্রেমিকের কথামতো নিহতের শরীরে নুন মাখিয়ে তা বস্তাবন্দি করে সেপটিক ট্যাংকে রেখে দেয়।

এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, উত্তরা মাহাতোর সঙ্গে একাধিক ছেলের সম্পর্ক ছিল। কল ডিটেলস থেকে সেই তথ্যও মিলেছে। যে সিম ও ফোনে উত্তরা দেবী তার প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলত তা ক্ষেত্রপালের ছিল। অন্যদিকে প্রেমিক ক্ষেত্রপাল মাহাতোর আলাদা পরিবার রয়েছে। ৪২ বছরের ক্ষেত্রপালের তিনটি মেয়ে ও একটি ছেলে আছে।

[আরও পড়ুন: তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই বর্ষবরণ বঙ্গে! গরম থেকে বাঁচতে কী পরামর্শ আবহাওয়াবিদদের?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ