৫ আশ্বিন  ১৪৩০  শনিবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

ব্যাপক ঝাঁকুনিতে কোল থেকে ছিটকে গেল ছেলে! সেই রাতের কথা মনে পড়লেই শিউরে উঠছেন সহেলি

Published by: Paramita Paul |    Posted: June 3, 2023 7:49 pm|    Updated: June 4, 2023 9:08 am

Woman from Barrackpore recalls the experience of Odisha Train accident | Sangbad Pratidin

অর্ণব দাস, বারাকপুর: বিকট আওয়াজ, সঙ্গে ব্যাপক ঝাঁকুনি। বগি উলটে কিছুক্ষণ পরই বন্ধ হয়ে গেল ট্রেনের আলো। করমণ্ডল এক্সপ্রেস করে চেন্নাই যাওয়ার সময় ঘটে ভয়াবহ ভুলতে পারবেন না ভাটপাড়া এবং ইছাপুরের বাসিন্দা-সহ মোট চার যাত্রী। তাঁদের তিনজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফেরার সময় একই অভিজ্ঞতার হয়েছে বারাসতের তিন যুবকেরও।

ভাটপাড়া পুরসভার শ্যামনগরের বাসিন্দা সঞ্জয় দত্ত এবং রবি বিশ্বাস কেরালায় রাজমিস্ত্রির কাজে যাচ্ছিলেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেন্নাই পৌঁছে সেখান থেকে অন্য ট্রেন ধরে গন্তব্যে পৌঁছনোর পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। সন্ধেয় বালেশ্বর থেকে ট্রেন ছাড়ার পর স্লিপার ক্লাস কামরায় দুই বন্ধু রাতের খাবার খেয়ে নেন। এরপরই ঘটে যায় ভয়াবহ সেই দুর্ঘটনা। যা মনে পড়লেই এখনও শিউরে উঠছেন তাঁরা।

[আরও পড়ুন: সঙ্গে চার্জশিটের কপি ও আইনের বই, জেল মুক্তির পথ খুঁজতে দিনরাত সেলে ‘পড়াশোনা’য় মগ্ন মানিক]

দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়েছিলেন দুজনেই। চোখ খোলেন বালেশ্বরের হাসপাতালে। ফোনে সঞ্জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,”খাবার খেয়ে হাত ধুয়ে এসে সবে বসেছি। তখনই বিকট শব্দে প্রচন্ড ঝাঁকুনি হয়। আমরা দুই বন্ধু ছিটকে পড়ি। মাথায় চোট লাগে। তারপর আর কিছু মনে নেই। সকালে বালেশ্বর হাসপাতালে চোখ খুলে দেখি আমার হাত ভেঙেছে, মাথায় সেলাই পড়েছে। বন্ধুর পা ভেঙেছে। এখন মেদিনীপুরের হাসপাতালে ভরতি রয়েছি।”

ইছাপুর কালীতলার বাসিন্দা সহেলি দে দত্ত তাঁর চার বছরের ছেলেকে নিয়ে একই ট্রেনে চেন্নাইয়ে যাচ্ছিলেন স্বামীর কাছে। তাঁরা ছিলেন এসি বি-৬ কোচে। বি-৭ কোচ পর্যন্ত দুর্ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে তাঁদের কোচ। সামান্য আহত হয়েছেন। কিন্তু রাতের সেই অভিজ্ঞতার ভুলতে পারছেন না কেউ। রাতেই তাঁর পরিবারের তরফে গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সহেলিদেবী এবং তাঁর ছেলে শনিবার বেলায় ইছাপুরের বাড়িতে ফেরেন। তাদের আত্মীয় প্রদীপ বসু বলেন, “প্রচন্ড ঝাকুনির পর ট্রেনের আলো বন্ধ হয়ে যায়। সহেলির ছেলে ছিটকে অন্যদিকে চলে গিয়েছিল। পরে সে ছেলেকে খুঁজে পায়। তার চোখের সামনে এখনো ভয়াবহ দুর্ঘটনার ছবি ভাসছে। এখনও ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি সহেলি। এদিন বেলা ১২টায় ওদের নিয়ে বাড়িতে ফিরি।”

[আরও পড়ুন: ‘আল্লাহকে দেখিনি, ফরিস্তার জন্য বাড়ি ফিরতে পেরেছি’, হাসপাতালে বলছেন ওয়াজনবি]

গোবরডাঙা পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলরাম সাহা একই ট্রেনে কেরালায় কাজে যাচ্ছিলেন। তিনিও আহত হয়েছেন। তাঁর মেয়ে সাথী সাহা বলেন, “ফোনে বাবা জানান, কোমরে এবং হাঁটুতে চোট লেগেছে। স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে।” বেঙ্গালুরু থেকে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে স্লিপার কোচে হাওড়ায় ফিরছিলেন বারাসতের বাসিন্দা মিলন আলি মণ্ডল, আদিত্য দাস এবং সুজন রায়। তাঁরা সেখানে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন। সামান্য আহত হলেও অল্পের জন্য রক্ষা পান তাঁরা। তবে চারিদিকে মৃত্যু আর রক্তের দাগ দেখে অচৈতন্য হওয়ার অবস্থা হয়েছিল তাদের। আদিত্য বলেন, “মৃত্যু চোখের সামনে থেকে দেখেছি। আমাদের কাছে যে কাগজপত্র, নথি, টাকা ছিল তা কিছুই খুঁজে পাইনি। বাসে করে আমরা বাড়িতে ফিরছি।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে