বেতবোনায় প্ল্যাকার্ড হাতে দুর্গতরা। নিজস্ব চিত্র
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে হিংসার আগুন জ্বলেছিল মুর্শিদাবাদে। সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন জায়গায় অশান্তিতে ঘরছাড়া হয়েছেন বহু মানুষ। সেখানেই হাজির জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল। আজ শনিবার বেতবোনায় মহিলা কমিশনের সদস্যরা পৌঁছন। সব হারিয়ে প্রতিনিধি দলের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুর্গতরা। হাড়হিম করা অভিজ্ঞতার কথা শোনান মহিলারা। এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্প চাই। না হলে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফেরা যাবে না। সেই দাবিও তোলা হয়েছে প্রতিনিধি দলের কাছে।
আজ শনিবার সামশেরগঞ্জের বেতবোনায় পৌঁছয় জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান বিজয়া রাহাতকারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল। তাঁদের আসার আগেই ওই এলাকায় ভিড় করেছিলেন ঘরছাড়া দুর্গতরা। বিজয়া রাহাতকার ও অন্যান্য প্রতিনিধিদের দেখে মাটিতে শুয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুর্গতরা। কীভাবে হামলা চলেছে? ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতে থাকেন তাঁরা। ওই এলাকায় বহু বাসিন্দার ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভেঙে, পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে এলাকায় তৈরি আশ্রয় শিবির, ক্যাম্পে ঠাই হয়েছে দুর্গতদের। এখন এলাকায় বিএসএফ, কেন্দ্রীয় বাহিনী, পুলিশ রয়েছে। বাহিনী চলে গেলে তারপর কী হবে? সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। ওই এলাকায় বিএসএফ ক্যাম্প তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে ক্যাম্পের জন্য ওই এলাকায় দুর্গতরা তাঁদের বাড়িও ছেড়ে দেবেন। সেই কথাও এদিন কমিশনের প্রতিনিধিদের কাছে বলতে শোনা গিয়েছে।
দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই বিষয় সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছে। এখান থেকে ফিরে গিয়ে দিল্লিকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হবে। সেই কথা কমিশনের তরফে দুর্গতদের বলা হয়েছে। বিএসএফ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকায় আছে। সে কথা বলেও আশ্বস্ত করা হয়েছে। এদিন প্ল্যাকার্ড হাতে কমিশনের সদস্যদের সামনে জড়ো হয়েছিলেন দুর্গত মহিলারা। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার আবেদনও জানানো হয়। প্রসঙ্গত, এই বেতবোনা এলাকায় প্রবল হিংসার আগুন দেখা গিয়েছিল।
সামশেরগঞ্জের জাফরাবাদে ‘খুন’ হয়েছিলেন সম্পর্কে বাবা-ছেলে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাস। সেই ঘটনায় এখনও অবধি মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও মৃতের পরিবারের দাবি, প্রচুর লোক ওই হামলার সময় জড়ো হয়েছিল। পরিকল্পনা করেই কি ওই খুন? সেই প্রশ্নও তুলেছে ওয়াকিবহাল মহল। এদিকে মুর্শিদাবাদ জুড়ে হিংসার জন্য এখনও অবধি প্রায় ২২০ জনের উপর ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা মঙ্গলবার পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ মালদহ, বীরভূমের উপদ্রুত এলাকায় বন্ধ ছিল। গুজব না ছড়ানোর জন্য রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনের থেকে বার বার বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.