Advertisement
Advertisement

বউদির শ্লীলতাহানিতে হাজতবাস, ফিরে প্রতিবেশীদের গঞ্জনায় আত্মঘাতী যুবক

মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ পরিবারের।

Youth commits sucide after allegedly molesting sister-in-law
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 21, 2018 12:20 pm
  • Updated:January 21, 2018 12:20 pm

ধীমান রায়: জামিনে মুক্তি মিলেছিল। কিন্তু অপমানের কাঁটা থেকে রেহাই মিলল না। পারিবারিক বিবাদের জেরে তুতো বউদির শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল এক যুবকের বিরুদ্ধে। মাস তিনেক সে কারণে হাজতবাসও হয়। জামিন পেয়ে ফেরার পর থেকে শুরু হয় পড়শিদের টিটকিরি-গঞ্জনা। শেষমেশ আত্মহননের পথ বেছে নিল ভাতারের যুবক নির্মল ঘোষ।

সবথেকে বড় সরস্বতী গড়ে নজর কাড়ছে মালদহ, দেখুন ভিডিও ]

Advertisement

বছর কুড়ির এই যুবকের মরদেহ আজ তার শোওয়ার ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। ভাতারের মাদারডিহি গ্রামের বাসিন্দা সে। পরিবারের অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল নির্মলকে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আসার পরেও তাঁকে ফের কেসের ভয় দেখানো হচ্ছিল। সঙ্গে সমানে চলছিল টিটকিরি-লাঞ্ছনা। তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

কী অপরাধ ছিল ওই যুবকের?

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ঘটনার সূত্রপাত মাস ছয়েক আগে। ভাতারের এরুয়ার অঞ্চলের মাদারডিহি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষক পতিতপাবন ঘোষের ছেলে নির্মল ঘোষ। বাড়ির পাশেই তার পোলট্রি ফার্ম। নির্মল চাষাবাদের পাশাপাশি মুরগিপালনের ব্যবসা নিয়েও থাকত। মৃতের বাবা পতিতপাবন বলেন, “আমাদের বাড়ির পাশেই আমার জ্যাঠামশাই শশাঙ্কশেখর ঘোষের বাড়ি। তার সঙ্গে আমাদের ছ’মাস আগে ঝামেলা হয়েছিল। তার জেরে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছিল।” জানা যায়, শশাঙ্কশেখরবাবু তাঁর বাড়ির কাছে কিছু মাটি জড়ো করে রেখেছিলেন। জড়ো করা মাটির পাশ দিয়ে নির্মলের পোলট্রি ফার্মে যাতায়াতের রাস্তাটি। জলকাদার কারণে নির্মল তিন চার ঝুড়ি মাটি নিয়ে রাস্তায় ফেলেছিল, তার গাড়ি ঢোকার সুবিধার্থে। আর বিনা অনুমতিতে মাটি নেওয়ার কারণেই তাদের সঙ্গে শশাঙ্কশেখরবাবুর পরিবারের ঝামেলা বাধে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রায় ছ-মাস আগে ওই ঝামেলা থেকে দুই পরিবারের সংঘর্ষ হয়। শশাঙ্কশেখরবাবু আহত হয়েছিলেন। তার জেরে নির্মল ও তার পরিবারের ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। মারধরের পাশাপাশি শশাঙ্কশেখরবাবুর নাত বউয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগও নির্মলের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতে পুলিশ মূল অভিযুক্ত নির্মলকে গ্রেপ্তার করে। তাকে তিনমাস জেলে কাটাতে হয়। তারপর জামিনে ছাড়া পেয়ে মাস দেড়েক আগে বাড়ি ফেরেন নির্মল।

চোর অপবাদ ঘোচাতে নিজের মেয়েকে খুন করল মা! ]

এরপর শুরু হয় অন্য কাণ্ড। পতিতপাবনবাবু জানিয়েছেন, বাড়িতে ফেরার পর নির্মলকে অনেকে টিটকারি দিচ্ছিল। আবার শশাঙ্কশেখরবাবুদের কয়েকজন আত্মীয় সাজা হওয়ার ভয়ও দেখাচ্ছিল। এ নিয়ে গত শুক্রবার ফের একপ্রস্থ ঝামেলা হয়। পতিতপাবন ঘোষের কথায়, “আমার ছেলে বারবার বলছিল মিথ্যা মামলায় আমায় ফাঁসানো হয়েছে। বাইরে মুখ দেখাতে পারছি না। আমার বিয়েও হবে না। এই হতাশার কারণেই আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।”

সরস্বতী পুজোয় ব্যাপক বিক্রি, আপেল কুল ফলিয়ে স্বনির্ভর ক্ষীরগ্রাম ]

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে একাই শুতে গিয়েছিল নির্মল। এদিন সকালে বারবার ডেকেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ  দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানাচ্ছে, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ছবি: জয়ন্ত দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ