Advertisement
Advertisement
মাওবাদী গল্প

মোবাইল হারানোর খবর চাপা দিতে মাওবাদী আতঙ্ক ছড়ায় যুবক! ঝাড়গ্রামের ঘটনায় প্রকাশ্যে নয়া তথ্য

এলাকায় পরপর মাওবাদীদের পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগে পুলিশ প্রশাসন।

Youth makes story on Maoist attack at Jhargram as he lost mobile himself
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:September 5, 2020 6:49 pm
  • Updated:September 5, 2020 6:54 pm

সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: বেড়াতে গিয়ে কোনওভাবে গাড়িতে মোবাইল হারিয়ে ফেলেছিল যুবক। বাড়ির চাপে পড়ে হারানোর ঘটনা সাজাতে গিয়ে মাওবাদী আতঙ্কের গল্প ফাঁদেন তিনি। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের (Jhargram) বেলপাহাড়ির ঢাঙ্গিকুসুম গ্রামে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়ে মাওবাদীদের মোবাইল লুঠের ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এল পুলিশের। এদিন ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভরত রাঠোর জানিয়েছেন, “ওই ছেলেটি কবুল করেছে, তার হাত থেকে মোবাইলটি খোয়া গিয়েছিল। বাড়িতে চাপ ছিল। তাই সে একটা গল্প তৈরি করে যে ওখানে মাওবাদীরা এসেছিল।”

তবে ঢাঙ্গিকুসুম গ্রামে পর্যটকদের উপর মাওবাদী হামলার ঘটনা যতই ভুয়ো হোক, এলাকায় যে তারা সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক পোস্টার উদ্ধারই তার প্রমাণ। সেই কারণে এদিন সেখানে যান রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। জেলা পুলিশের আধিকারিকদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এই জেলা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের সীমানায় বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে। পাশাপাশি, বেলপাহাড়ির মতো সীমান্ত এলাকার গ্রামের যে সব রাস্তাগুলি ঝাড়খণ্ডের দিকে গিয়েছে, সেই সব রাস্তাগুলির উপর নজরদারি বাড়তে বলা হয়েছে বৈঠকে। গোয়ান্দা বিভাগকে আরো শক্তিশালী হাওয়ার কাথাও উঠেছে বৈঠকে বলে পুলিশের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: আত্মঘাতী হতে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর জাগল বাঁচার ইচ্ছা, কী পরিণতি হল বধূর?]

স্বাধীনতা দিবসে মাওবাদীর নামে বেলপাহাড়িতে পোস্টার পড়ার দিন কুড়ি পর ফের পোস্টার উদ্ধার হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ। নতুন করে জঙ্গলমহলে ফের মাওবাদীদের তৎপরতা বাড়ছে বলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, পরপর পোস্টার পরার ঘটনায় মাওবাদীদের যোগাযোগ ঠিক কতটা রয়েছে এবং বেলপাহাড়ির মতো আন্তঃরাজ্য সীমানাগুলিতে কোনও তৎপরতা রয়েছে কিনা সেই বিষয় গুলি মূলত আলোচনায় উঠে আসে।

Advertisement

Mao-poster

এদিন বৈঠকের পর রাজ্য পুলিশের ডিজি জেলার পুলিশ সুপারকে নিয়ে বেলপাহাড়ির ঢাঙ্গিকুসুম গ্রাম যান। সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি শুধু জানিয়েছেন, “এসেছিলাম। তদন্ত চলছে।” ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভরত রাঠোর বলেন “ এডাব্লু এলাকার চিত্র, দপ্তর উন্নয়ন বিষয় সহ অন্যন্য বিষয় নিয়ে রিভিউ মিটিংএ এসেছিলেন।” পাশাপাশি বেলপাহাড়িতে পোস্টারিং নিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, “ আমরা কিছু লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। যারা পোস্টারিং করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও একেবারে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বেলপাহাড়ির ঢাঙ্গিকুসুম গ্রামে বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনার পরেই ওই এলাকা জুড়ে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর পক্ষ থেকে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে।

[আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির মারে জেরবার ভারতীয় রেল, অভিযোগ খোদ কর্মীদের]

দলমা, গালুডি, ঘাটশিলা, ধলমঙ্গল, চাকুলিয়ার দিকে তথা বেলপাহাড়ি এবং জমাবানি ব্লকের সীমানা এলাকাগুলিতে মাওবাদী নেতা অসীম মণ্ডল এবং মদন মাহাতো, জবা মাহাতোদের একটি দল সক্রিয় হয়েছে। বর্তমানে এদের কোনও স্কোয়াড না থাকলেও ১৫,১৬ জনের একটি টিম রয়েছে, যারা বেলপাহাড়ির দিকে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। তবে বর্তমানে জঙ্গলমহলে কোনও অনুন্নয়নের ইস্যু না থাকায় গ্রামে সেভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারছে না বলে মনে করা হচ্ছে।

ছবি: প্রতিম মৈত্র।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ