Advertisement
Advertisement

Breaking News

পঞ্চমুণ্ডির আসনে পূজিতা হন আউশগ্রামের খেপি মা

এই পুজো তিনশো বছরের পুরানো।

Story of Aushgram Kali Puja

আউশগ্রামের খেপিমা, ছবি: জয়ন্ত দাস।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:November 6, 2018 4:15 pm
  • Updated:November 6, 2018 4:48 pm

ধীমান রায়, কাটোয়া: আউশগ্রামের খেপি মায়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানান কাহিনী। খুবই জাগ্রত দেবীর পুজো এবার ৩০০ বছরে পড়ল। থিমের বাজারে প্রাচীনত্বের ছোঁয়া। কিন্তু, খেপি মায়ের প্রতি ভক্তি এতটুকু কমেনি। পঞ্চমুণ্ডির আসনের উপরে দেবীকে বসিয়ে পুজো করা হয়। পঞ্চমুণ্ডির আসন থাকে লোহার শিকলে বাঁধা কাঠের পাটতনে । এই সামান্য আয়োজনেই খুশি খেপিমা। ভক্তকে কখনও খালি হাতে ফেরান না, এমনটাই বিশ্বাস স্থানীয়দের। এই পুজোর বর্তমান সেবাইত বাহাদুরপুরের নায়ক পরিবার। 

জনশ্রুতি অনুসারে বর্ধমানের ভাল্কির ঘনজঙ্গলে এক সাধক বসবাস করতেন। তিনিই  জঙ্গলে খেপি মাকে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেছিলেন। সেই সাধকের বেশ কয়েকজন শিষ্যও ছিল। একদিন স্বপ্নাদেশে মৃত্যুর আগাম বার্তা পান সাধক। আর দেরি করেননি। প্রিয় শিষ্যকে ডেকে পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান। সেই শিষ্যর দিদির বাড়ি ছিল ভাল্কির জঙ্গল লাগোয়া এলাকা বাহাদুরপুরে। শিষ্য খেপি মাকে দিদির বাড়িতে নিয়ে যাওয়াই মনস্থ করেন। সেইমতো বাহাদুরপুরের নায়ক বাড়িতে এক গাছের তলায় দেবীকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে মাটির মন্দির তৈরি করে দেবীকে স্থানান্তর করা হয়। তবে যেখানে প্রথম দেবীর প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সেই গাছের তলায় এখনও রাখা হয় ঘট। দেবীর স্বপ্নাদেশে বাহাদুরপুরের মাটির মন্দিরে পঞ্চমুণ্ডির আসনের বন্দোবস্ত হয়। সেই আসনেই খেপি মায়ের পুজো হয়ে আসছে। তবে মাটির মন্দির এখন কংক্রিটে বদলে গিয়েছে। খেপি মার প্রতিষ্ঠাতা সাধকের দৌহিত্র রামময় মিশ্র নিজে দেবীর মন্দির তৈরির জন্য জমি দান করেন। ন’বিঘা জমিতে গড়ে ওঠে মন্দির।এই সম্পত্তি থেকে যা আয় হত তাতে  আগে ভালভাবেই পুজোর খরচ উঠে আসত। এছাড়াও প্রতিবছর কালীপুজোর দিন সকালে নায়ক বাড়িতে আসতেন রামময় মিশ্রের স্ত্রী। তাঁর সঙ্গেই থাকত পুজোর নানা উপাচার। রামময়বাবুর স্ত্রীর মৃত্যুর পর বেশ কয়েকবছর পুজো বন্ধ ছিল।পরে বাহাদুরপুরের নায়ক পরিবার খেপি মায়ের পুজোর দায়িত্ব নেয়।

Advertisement

[মায়ের মুখ পুড়িয়ে অ্যাসিড আক্রান্তদের সম্মান জানাল এই পুজো]

এই পুজোতেও রয়েছে কিছু বিশেষত্ব। কালীপুজোর রাতে প্রথম যে ছাগ বলি হয়, সেই মাংস সর্ষে বাটা দিয়ে রান্না করে দেবীকে প্রথম নিবেদন করা হয়।পুজোর নৈবেদ্যেও রয়েছে বিশেষত্ব। খেপি মার পুজোয় ১০৫ কেজি আতপ চালের নৈবেদ্য দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে দেবীর ভোগে থাকে পাঁচ কেজি চালের ভাত ও বিভিন্ন পদের রান্না। সঙ্গে থাকে বেসনের ফুলুরি, মুড়কি, নাড়ুর পাশাপাশি দুধের মিষ্টান্ন। এজন্য ১৫ সের দুধ লাগে। তারমধ্যে ১০ সের দুধ মেরে ক্ষীর করা হয়। তিন কেজি দুধের দই পাতা হয়। বাকি দু’কেজি দুধের সঙ্গে পাঁচ পোয়া আতপ চাল দিয়ে পায়েস রান্না হয়। সেই পায়েসের সঙ্গে ক্ষীর ও দই মিশিয়ে হয় ভোগ।

Advertisement

[সম্প্রীতির পুজো, রুবিনা বিবির তুলির টানেই এখানে চক্ষুদান হয় শ্যামা মায়ের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ