Advertisement
Advertisement

‘পরকীয়াকে শাস্তির বাইরে এনে ভালবাসাকেই মর্যাদা দেওয়া হল’

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে কী বললেন সঞ্জয় নাগ?

Director Sanjay Nag supports Extramarital affair
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:September 27, 2018 4:59 pm
  • Updated:September 27, 2018 4:59 pm

ভালবাসার বয়স হয় না। সম্পর্ক মানে না কোনও পিছুটান। তাই তো স্বামী বা স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও আরও এবার প্রেমে পড়ে মানুষ। ভালবাসে অন্য কাউকে। ভালবাসার রথ ফের ধ্বজা উঁচিয়ে যাত্রা শুরু করে। একসময় যাকে সাত পাকে বেঁধেছিল, তাকেই দ্বিতীয় ভালবাসার টানে ভুলতে বসে মানুষ। এটা কি অপরাধ? পরিচালক সঞ্জয় নাগের প্রতিক্রিয়া শুনলেন বিশাখা পাল।

সমাজ বলবে, অবশ্যই। বাড়িতে স্বামী বা স্ত্রী থাকলে অন্য কারওর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর মানে কী? একজন বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কি এসব সাজে? কিন্তু যারা এই পথের পথিক, তারাই জানে কী এর মাহাত্ম্য? কীসের টানে পরকীয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয় তারা। তালিকা করতে গেলে বোধহয় তা চিত্রগুপ্তের খাতাকেও হার মানাবে। সংসারে নিত্য অশান্তি, ছেলেমেয়ের ঘ্যানঘ্যানে আবদার, চাকরিক্ষেত্রে রাজনীতি… সব নিয়ে ক্ষুদ্র মস্তিস্ক তিতিবিরক্ত হয়ে ওঠে। সে খোঁজে একটু শান্তি। সেখান থেকেই বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হওয়া, তারপর বন্ধুত্ব, ধীরে ধীরে কখন যে ভাল লেগে যায়, মানুষ জানতেও পারে না। নিজের অজান্তেই সম্পর্কের সুতো তাদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। এই সম্পর্ক এতটাই একাত্ম যে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে মন চায় না। সমাজ এর একটা পোশাকি নাম দিয়েছে। ‘পরকীয়া’।

Advertisement

আর এখানেই ঘটে গন্ডগোল। পোশাকি নামের আড়ালে ঢেকে যায় ভাললাগার মুহূর্তরা। কয়েকঘণ্টা শান্তিতে কাটানোর বদলে তিক্ততায় ভরে যায় দিনের বাকি ঘণ্টাগুলি। তার মধ্যে আবার রয়েছে আইনের চোখ রাঙানির ভয়। পরকীয়া ছিল অপরাধ। ফলে শাস্তির একটা বিরাট আশঙ্কা ছিল। কিন্তু এবার সেই অশান্তির হাত থেকে মুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট। জানাল, পরকীয়া কোনও অপরাধ নয়। যে আইনের আওতায় পরকীয়া হত, সেই ৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করল তারা। ফলে এখন স্বাধীনতা ডানা মেলে ওড়ার পথে আর কোনও বাধা নেই।

Advertisement

আমার দুগ্গা: পুজো মানেই আমার কাছে ক্যাপ-বন্দুক ]

চিত্রপরিচালক সঞ্জয় নাগেরও তেমনই মত। sangbadpratidin.in-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, স্বাধীনতা তো মানুষের মৌলিক অধিকার। ভালবাসাও তাই। মানুষ কাকে ভালবাসবে, না বাসবে, সেটা তো আর আদালত ঠিক করে দিতে পারে না। সেটি সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সমাজ এখন অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। গোঁড়ামি ছাড়িয়ে মানুষ এখন আরও বেশি আধুনিক। এখন যদি সুপ্রিম কোর্ট এমন রায় দিতে না পারে, এখনও যদি পরকীয়াকে মানুষের স্বাধীনতার খাতায় না ফেলতে পারে, তাহলে তো অনেক দেরি হয়ে যাবে। ভালবাসা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। একে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রাখার দরকারটাই বা কি? আইনের চোখ রাঙানির কি এখানে খুব প্রয়োজন?

কিন্তু সমাজ? নীতিপুলিশ? তারা কি এসব মেনে নেবে? পরিচালকের কথায় সমাজ ক্রমাগত পরিবর্তনশীল। শিক্ষা এখন শুধু আর পুঁথিগত বিদ্যা নয়। মানুষের মজ্জায় ঢুকতে শুরু করেছে শিক্ষা। তার প্রভাব পড়ছে মানসিকতাতেও। সুপ্রিম কোর্টের রায় সেই মানসিকতাকে সমর্থন কর। তবে আজ বললে আজ কি আর মানসিকতা পালটাবে? আধুনিক আধুনিকারা এসব গ্রহণ করতে পারলেও অনেকে বেঁকে বসবে। আজ যেসব খাপ পঞ্চায়েত পরকীয়া করলে কঠিন শাস্তি তৈরি করে রাখে, তারা কি পিছু হটবে? মোটেই না। তবে আদালতের রায় তাদের ভিত নাড়িয়ে দিতে পারবে। মনে একটু হলেও ভয় ঢুকবে। এতদিন যারা ভালবাসতে চাইত, তারা আইনের ভয়ে থাকত। এখন খাপ পঞ্চায়েতের মনে ভয় ঢুকবে। এটা নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য।

আর বাচ্চারা? বাবা বা মাকে অন্য কারোর সঙ্গে প্রেম করতে দেখলে তাদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়বে না। সঞ্জয় নাগ জানালেন, একেবারেই পড়বে না। কারণ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আজকের নয়। ভারতীয় সংস্কৃতিতে বহুদিন ধরে এসব চলছে। বইয়েও তার প্রমাণ রয়েছে। ছোটরা এখন আধুনিক, অবুঝ নয়।

ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ঠগদের লড়াই দেখাল ‘ঠাগস অফ হিন্দোস্তান’-এর ট্রেলার ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ