Advertisement
Advertisement
Kiff 2023

KIFF 2023: বৃষ্টিভেজা নন্দন চত্বরে হাজির মাঙ্কিম্যান! তাক লাগালেন আজব কীর্তিতে

ব্যাপারটা কী?

KIFF 2023: Documentary Langur The Man Monkey will be screened at the Kolkata Film Festival। Sangbad Pratidin
Published by: Biswadip Dey
  • Posted:December 7, 2023 7:19 pm
  • Updated:December 8, 2023 1:58 pm

বিশ্বদীপ দে: বৃষ্টিভেজা বিকেল। চলতি বাংলায় যাকে বলে আবগারি আবহাওয়া। সেসব উপেক্ষা করে ভিড় জমে গিয়েছে নন্দন চত্বরে। ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল চলছে যে। চলচ্চিত্রপ্রেমী মানুষেরা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। আচমকাই দেখা মিলছে সিনে তারকাদের। এমন অবস্থায় আচমকাই হইহই। পেল্লাই এক হনুমান হাজির ২৯তম চলচ্চিত্র উৎসবে (KIFF 2023)! একবার রেলিংয়ে বসছে। একবার বেঞ্চে বসা তরুণীর পাশে বসে দাঁত খিঁচোচ্ছে। অবাক লোকজন। ব্যাপারটা কী?

কানাঘুষো শোনা গেল ইনি নাকি মাঙ্কি ম্যান। মানুষ হয়েও হনুমান সেজে থাকেন। আসলে এই সবই পরিকল্পিত। জ্যাকি ওয়াধভি নামের এই ২৯ বছরের যুবক গুজরাটের (Gujarat) বাসিন্দা। তিনি সত্যিই ভালোবাসেন হনুমানের বেশে ঘুরে বেড়াতে। এটাই তাঁর পেশা। আর তাঁকে নিয়েই তৈরি হয়েছে প্রায় আধঘণ্টার একটি গুজরাটি তথ্যচিত্র ‘লাঙ্গুর দ্য ম্যান মাঙ্কি’। পরিচালক হায়দার খান। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে তথ্যচিত্রের প্রতিযোগিতা বিভাগে রয়েছে ছবিটি।

Advertisement

Advertisement

[আরও পড়ুন: মর্মান্তিক! পায়ুদ্বারে নল ঢুকিয়ে অত্যাচার, মৃত্যু কিশোরের]

কোথায় দেখা পেলেন জ্যাকি ওরফে হনুমান-মানুষের (Monkey Man)? জবাবে হায়দার জানালেন, ”আমি মুম্বইয়ের আন্ধেরিতে থাকি। একদিন অনেক রাতে বাড়ি ফিরছি। এমন সময় রাস্তায় ওকে দেখতে পাই। প্রায় পাঁচ-ছটা কুকুর তাড়া করেছিল। ও হাত নেড়ে নেড়ে তাড়ানোর চেষ্টা করছিল। আমি প্রথমে ভাবলাম, এটা কী? তার পর বুঝলাম মানুষ। ডাকলাম কাছে। প্রথমে ভয় পাচ্ছিল। খানিক পরে জানাল, কেউ মজা করে ওকে বলেছিল মুম্বইয়ে শো করতে হবে। ও সেজেগুজে চলে এসেছে। ভোর ৬টায় ফেরার ট্রেন। পুলিশ স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তার পর থেকে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে কুকুরের তাড়া খাচ্ছে।”

হায়দারই বাড়িতে নিয়ে আসেন জ্যাকিকে। সেই পরিচয়। এবার তাঁকে নিয়েই তৈরি করেছেন আস্ত তথ্যচিত্র। কাজটা সহজ ছিল না। কেবল আশ্চর্য মানুষটিকে ফলো করা। তার পর লেখা। তিন-চারটে খসড়া পেরিয়ে তবে মনের মতো চিত্রনাট্য তৈরি হয়। কিন্তু জ্যাকি এমন সাজে থাকতে চান কেন? উনি কি সুপারহিরো হতে চান নাকি? জবাবে হায়দার বলছেন, ”না না সেসব কিছু নয়। খুব কম বয়সে ওর বাবা মারা যান। মা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। জ্যাকি ভাবনগর থেকে জুনাগড় চলে আসে। সেখানে ঠেলাগাড়িতে সবজি বিক্রি করত। রাতে এক বাবাজির আশ্রমে থাকত। সেখানে গুচ্ছ হনুমানও থাকত। ওদের দেখতে দেখতে একসময় তাদেরই নকল করতে থাকে ও। দেখে বাবাজি বলেছিলেন, বেটা, তুই এটাই কর। তুই তো সব সময় দুঃখী থাকিস। কিন্তু এটা করলে আনন্দ পাস। ব্যাস, সেই থেকে শুরু। আজ ইনস্টাগ্রামে ওর প্রায় সাড়ে চার লক্ষ ফলোয়ার। বিবিসি ওকে নিয়ে খবর করেছে।”

[আরও পড়ুন: টাটা থেকে আম্বানি, শচীন থেকে অমিতাভ! রাম মন্দিরের উদ্বোধনে চাঁদের হাঁট]

একটাই দুঃখ ছিল জ্যাকির। মা ছেলের এমন পেশা মেনে নিতে পারেননি। কোনও যোগাযোগই রাখতে চাননি। জ্যাকি কেবল চাইতেন, মা তাঁকে একবার জড়িয়ে ধরুন। এবং সেটা এই বেশেই। সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। ছেলের এমন জনপ্রিয়তা দেখে তিনিও সব মেনে নিয়েছেন। আপাতত জ্যাকি মগ্ন তাঁর ‘হনুমানের স্বপ্ন’ নিয়ে। কলকাতায় এসেও তিনি দারুণ খুশি। এই প্রথম বিশ্ব তাঁকে বড় পর্দায় দেখবে। স্বভাবরসিক যুবক জানাচ্ছেন, ”এখন একটাই ইচ্ছে। শিগগিরি প্রকাশ পাক ছবির সেকেন্ড পার্ট।” বলার সময় তাঁর মুচকি হাসি বুঝিয়ে দেয়, না-মানুষ হনুমানরা তাঁকে শিখিয়ে দিয়েছে, জীবন যেমন তাকে সেভাবেই গ্রহণ করতে। তাহলেই একদিন সে ঠিকই প্রাপ্তির ঝুলি ভরিয়ে দিতে শুরু করে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ