নির্মল ধর, মিগুয়েল দ্য আলেন্দে: উৎসবের নাম গুয়ানাজুয়াতো আন্তর্জাতিক ফিল্ম উৎসব। অথচ উৎসবটি হচ্ছে প্রতিবেশি শহর সান মিগুয়েল দে আলেন্দেতে। প্রথম পাঁচদিন (২৪ তারিখ পর্যন্ত) এখানে। পরের চারদিন (২৫ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত) গুয়ানাজুয়াতোয়। আনলে মেক্সিকো দেশটার ঠিক মাঝখানে গুয়ানাজুয়াতো রাজ্যটি। এই রাজ্যেরই প্রায় যমজ শহর সান মিগুয়েল। দুটি শহরেই সিনেমাহলের সংখ্যা এক হাতে গোনার মতো। লাতিন আমেরিকার অন্যতম বড় দেশ মেক্সিকো। ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার পরেই তৃতীয় স্থান। বছর বাইশ আগে বছর পাঁচিশের এক তরুণী সারা হল শুরু করেছিলেন নিজের শহর গুয়ানাজুয়াতোয়। প্রায় একা হাতেই সারা এই উৎসবের পরিধি ও চরিত্র বাড়িয়ে সত্যিকারের আন্তর্জাতিক করে তুলেছেন। প্রথম দিকে যা ছিল শুধু মেক্সিকান সিনেমার চৌহদ্দিতে আবদ্ধ।
[ আরও পড়ুন: ধর্ম আর সিনেমা মিলেমিশে রয়েছে মেক্সিকোয় ]
সম্ভবত এই প্রথম এই প্রতিবেদক একজন ভারতীয় সাংবাদিক বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে এলেন এই গুয়ানাজুয়াতোয়। শুনলাম বছর সাত আগে ভারতীয় সিনেমাকে ‘ফোকাস’ করে এই উৎসব হয়েছিল। এখনও কোনও চলচ্চিত্র সাংবাদিক আসেনি। যাই হোক, দুদিন আগে শহরের কেন্দ্রীয় চত্বরের ইগলেসিয়াস নামের গীর্জার এক চত্বরে সাজানো মঞ্চে উৎসবের উদ্বোধন হল। বাজি ফাটল অনেক। কিন্তু মঞ্চে বক্তাদের মুখ তেমন ফুটল না। প্রবীণ মেক্সিকান অভিনেতা হোসে কার্লোস রুইয়ের উজ্জ্বল সম্বর্ধনার পর দেখানো হল তাঁরই ছবি সোলার। খুবই কাছাকাছি আরও তিন জায়গায় ছবি দেখানোর ব্যবস্থা। যেমন থিয়েত্রো অ্যাঞ্জেলা পারলতা, এল নির্গোমান্ডে কালচারাল সেন্টার, মিউনিসিপ্যাল প্যালেস সাল সেগুয়েন্দো। ফলে দ্য সান মিগুয়েল। মেক্সিকান ছবির প্রতিযোগিতার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রেরও প্রতিযোগিতা রয়েছে। ছোট ও বড় দৈর্ঘ্যের দুই বিভাগেই। দশটি মেক্সিকান ও আটটি অন্য দেশের ছবি দেখানো হচ্ছে। না, কোনও ভারতীয় ছবি নেই।
ভারতীয় ছবি না থাকলে কি হবে, ড্যানি বয়েল, নিকোলাস পেজের মতো পরিচালকদের ছবি রয়েছে। তাঁরা নিজেরা আসছেনও। জাপান-কোরিয়া-চিন-মালয়েশিয়াও বাদ নেই। এবারের উৎসবে ফোকাস ‘শতবর্ষে ফিলিপিনো সিনেমা’। নতুন, পুরনো মিলিয়ে সাতখানি ছবি থাকছে এই বিভাগে। ওদেশের প্রধান জনপ্রিয় পরিচালক কিদলাত তাহিমিকের দুটো ছবি দেখানো হবে। আন্তর্জাতিক একাধিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত থাকলেও সবার নজর কাড়ছেন অস্কার পাওয়া ‘রোমা’ ছবির মেক্সিকান নায়িকা ইয়ালিৎসা আপারিচিও। ইয়ালিৎজা সেরা নায়িকার অস্কারও পেয়েছেন। সুতরাং মাতামাতি তো হবেই। এই উৎসবের সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে সব হলর দরজা সবার জন্য খোলা। কোনও দর্শনী নেই। ইতালি-পর্তুগাল-আমেরিকা থেকে আসা ট্যুরিস্টরাও ঢুকে পড়ছেন হলে। কোনও বাধা নেই। প্রেক্ষাগৃহ ‘পূর্ণ’ না হওয়া পর্যন্ত অবারিত দ্বার। এখনও উৎসব আর কোথাও দেখেছি বলে মনে পড়ে না।
[ আরও পড়ুন: এবার এষা গুপ্তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের দিল্লির হোটেল ব্যবসায়ীর ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.