বিচ্ছেদের পর কেমন আছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়? মুম্বই থেকে ধরা দিলেন মোবাইলে। এপারে শম্পালী মৌলিক।
মুম্বইয়ে কী করছেন?
– একটা টিভিসি শুট করলাম। ওটারই ডাবিং চলছে।
বেশ রোগা হয়েছেন, ফের নিজের যত্ন নেওয়া শুরু করেছেন মনে হচ্ছে…
– থ্যাংক ইউ। (হাসি)
জিম করছেন?
– না। জিম করি না। আমি যোগা করি। ডায়েট করি।
আর আছেন কেমন?
– ভাল আছি। কাজের মধ্যে আছি।
বিবাহ বিচ্ছেদের পরেও ‘ভাল আছি’ বলতে পারছেন?
-নিশ্চয়ই। ভাল তো যে কোনও সময়, যে কোনও মুহূর্তে থাকতে হবে। জীবনে অনেকরকম পরিস্থিতি তো আসবেই। সবটা তো মসৃণ হবে না। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেই ভাল থাকতে হবে।
কিছুদিন আগে দেখলাম, রাজ সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যানাউন্স করেছেন আপনাদের বিচ্ছেদের কথা। কী এমন ঘটেছিল যে, এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল দু’জনকে?
– সেটা খুবই পার্সোনাল বিষয়। এটা থাক। আমি কমেন্ট করতে চাই না।
আপনাদের মধ্যে যোগাযোগ আছে?
– না, এই মুহূর্তে নেই।
আপনি হ্যাপি, সিঙ্গল হওয়ার পর?
– দেখুন, আমার একটাই কথা মনে হয়, যে কোনও জিনিস যদি শেষ হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে সেটায় চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতেই হয়। বয়ে বেড়ানো ভাল না। কোনও জিনিস যদি পচে যায়, গন্ধ বেরয় ফেলে দেওয়াই ভাল। তবে আমি বলব না আমাদের মধ্যে পচা গন্ধ বেরনো কিছু হয়েছিল, তা নয়। কিন্তু দু’জনেরই মনে হয়েছিল এটা বয়ে না বেড়ানোই ভাল।
বুঝলাম। আজ ঋতুপর্ণ ঘোষের জন্মদিন। যাঁর সঙ্গে আপনার অন্যতম সেরা কাজ ‘অবহমান’—এ…
– আমার এখনও ঋতুদার কথা উঠলেই মনে হয়, একটা জনার-এর ফিল্ম শেষ হয়ে গেল। সেটাই সারাক্ষণ খোঁচা দিতে থাকে মনের ভিতরে। ওই ধরনের ছবি হয়তো আর হবে না। আমি জানি না ভবিষ্যতে এমন কেউ উঠে আসবেন কি না, যিনি ওই ধরনের ছবি বানাবেন। এটা একটা ফাঁকা জায়গা তৈরি করেছে।
‘আবহমান’-এই আপনার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্তি। সেই অভিনেত্রীর কাছে সেরকম সিনেমার অফার আসছে না কেন?
– জানি না। হয়তো লোকে ভাবছে আমি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি বলে, সেইরকম রোল না হলে আমি করব না (হাসি)। এটাও সত্যি, ভাল পছন্দসই রোল না হলে আমি করি না, সবাই জানে। হয়তো সেরকম রোল—ও আসছে না। সেটাই ভাবতে হবে।
আপনাকে শেষ টেলিভিশনে পেয়েছে দর্শক ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালি’—তে। শেষ ছবি রিলিজও বেশ কয়েক বছর আগে। এটা নিয়ে কখনও আক্ষেপ হয় না? সিনেমা থেকে দূরে সরে গেলেন কেন?
– আক্ষেপ করে কী হবে? সত্যি যদি ভাল কাজ না থাকে, ভাল কাজ না আসে আমার কী করার আছে। অপেক্ষা করতে হবে। আক্ষেপ নেই, অপেক্ষা আছে। নিশ্চয়ই ভাল কাজ আবার আসবে।
আপনি কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ‘মেঘে ঢাকা তারা’-র মতো ছবিতে কাজ করেছেন। কাজের সূত্রে ওঁর সঙ্গে আপনার এখনও যোগাযোগ আছে। আপনি কখনও ওঁকেও নিজে থেকে বলতে পারেন না ছবিতে নেওয়ার জন্য?
– (হাসি)…কমলদা আমার সঙ্গে কাজ করেছেন, আমি যতদূর জানি আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে পছন্দ করেন। সেরকম কাজ থাকলে কমলদা নিশ্চয়ই আমাকে বলবেন।
অতি সম্প্রতি কমলেশ্বরের সঙ্গে একটা অডিও প্লে করলেন, সেটা নিয়ে জানতে চাই।
– এটা খুব ইন্টারেস্টিং কাজ। বেসড অন কাশ্মীর। অতটা সরাসরি না হলেও, কাশ্মীরের সমস্যার প্রাসঙ্গিকতাটা আছে এখানে। একটা টেলিফোনিক কনভার্সেশনের মধ্যে দিয়ে এটা উঠে আসে। ‘মঞ্জু’ আর ‘সুভাষদা’ বারাসতের ছেলেমেয়ে। যেটা আমি আর কমলদা করেছি। সুভাষদার একটা দুর্বলতা ছিল মঞ্জুর প্রতি। তারপরে সুভাষদার পোস্টিং হয়ে যায় কাশ্মীরে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের যোগাযোগ। স্মৃতিচারণ দিয়ে শুরু হয়ে, সেটা কাশ্মীরে চলে যায়। অত্যন্ত লিরিকাল এই লেখাটা। যেটা আগে বলছিলাম, ঋতুদার ছবিগুলো অত্যন্ত লিরিকাল। যেটা আর এখনকার ছবিতে পাই না। অনেকদিন পর অময়ের লেখার মধ্যে একটা লিরিকাল ফ্লেভার পেলাম। খুব ভাল স্ক্রিপ্ট আর কনসেপ্ট।
কীভাবে শুনতে পাবে লোকজন?
– ইউটিউবে শুনতে পাবে। ‘নো সলিউশন’ সার্চ দিলেই শোনা যাবে। আর চ্যানেলটার নাম ‘রায়বাহাদুর’।
সিরিয়ালের অফার আসছে?
– আসছে। কিন্তু আমি এখন একটু ব্রেক নিয়েছি টেলিভিশন থেকে। যেটা আমি করে থাকি (বলেই সেই চেনা হাসিতে ফোন রাখলেন অভিনেত্রী)।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.