সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নন্দিতা-শিবপ্রসাদের সিনেমা মানেই বাস্তব সমাজের দলিল। নতুন ভাবনাচিন্তা কিংবা সমাজকে নতুন বার্তা দিতে পরিচালকদ্বয়ের জুড়ি মেলা ভার। আর সেই ভাবনায় ভর করেই ভিন্নস্বাদের সিনেমা উপহার দিয়ে বরাবর দর্শকদের মন কেড়ে এসেছেন তাঁরা। ‘আমার বস’-এর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। বৃদ্ধ মা-বাবাদের জন্য ‘ডে কেয়ার হোম’ খোলার ভাবনা ‘আমার বস’ সিনেমাটির গল্পের অন্যতম ইউএসপি। আগামী ৯ মে প্রেক্ষাগৃহে আসছে সেই ছবি। আর তার প্রাক্কালেই সুখবর দিল উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থা। ‘আমার বস’ দেখানো হবে রাজ্যসভায়।
আগামী ৩ মে, সকাল ১১টায় সংসদের গ্রন্থাগার ভবনের জিএমসি বালাযোগী অডিটোরিয়ামে দেখানো হবে ‘আমার বস’। মুক্তির আগেই যে সিনেমার সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক জুড়ল, তা বলাই বাহুল্য। এর আগে গোয়ায় আয়োজিত IFFI-তেও প্রশংসা কুড়িয়েছিল ‘আমার বস’। এই অবশ্য প্রথম নয়। এর আগে নন্দিতা-শিবপ্রসাদের পয়লা হিন্দি সিনেমা ‘শাস্ত্রী বিরুদ্ধ শাস্ত্রী’র স্ক্রিনিংও হয়েছিল সংসদে। উল্লেখ্য, ‘আমার বস’-এর সুবাদেই দীর্ঘ বাইশ বছর বাদে বাংলা সিনেমায় প্রত্যাবর্তন করতে চলেছেন রাখি গুলজার। শেষবার ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘শুভ মহরৎ’ ছবিতে গোয়েন্দা ‘রাঙা পিসি’র ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে তার পর দু’ দশক কেটে গেলেও সিনেপর্দায় তাঁকে দেখা যায়নি। ‘আমার বস’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য রাজি করিয়ে রাখিকে বাংলার পর্দায় ফেরানোর অসাধ্য সাধন করেছেন নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। যে ছবিতে এক প্রকাশনী সংস্থার রাগী বস অনিমেষ ওরফে শিবপ্রসাদের মা শুভ্রা গোস্বামীর ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে। পরিচালক নন্দিতার মন্তব্য, “কর্মক্ষেত্রে আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটাই। বৃদ্ধ মা-বাবাদের জন্য চিন্তাও কাজ করে। সেই ভাবনা থেকেই ‘ডে কেয়ার হোম’ খোলার কথা বলে এই ছবি। আমাদের স্বপ্নের ছবি আমার বস। কারণ রাখিদি এতবছর বাদে বাংলা সিনেমায় ফিরলেন।” শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জানালেন, “গতবছর ‘বহুরূপী’র শুটিং করায় রাজ্যসভায় ‘শাস্ত্রী বিরুদ্ধ শাস্ত্রী’র স্ক্রিনিংয়ে উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে এবার অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি পার্লামেন্টে আমাদের ছবির প্রদর্শনীর জন্য।”
নন্দিতা-শিবপ্রসাদের ফিল্মোগ্রাফির উপর চোখ রাখলে বোঝা যায় যে, তাঁদের প্রত্যেকেটা ছবিই সমাজের আস্ত বাস্তব দলিল। আর ইউএসপি? সিনেমার জটিল ব্যাকরণের ধাঁধায় না গিয়ে সহজ-সরল ন্যারেটিভই পরিচালকদ্বয়ের সম্বল। অতিনাটকীয়তা, কাকতালীয় বিষয়, যুক্তিবুদ্ধির মারপ্যাঁচ বর্জিত আবেগঘন দৃশ্যায়ণ। যা দেখে বক্সঅফিসের মার্কশিটেও ফুলমার্কস বসিয়ে এসেছেন দর্শকরা। খবরের কাগজে পড়া কোনও প্রতিবেদন হোক কিংবা লোকমুখে প্রচারিত কোনও গল্প, সেসবের মজ্জায় ঢুকে বরাবর কন্টেন্ট সাজিয়ে আসছেন নন্দিতা রায় এবং শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। উইন্ডোজ-এর প্রতিটি কাজে কন্টেন্টই আসল ‘কিং’। বাড়ির বা আশেপাশের গল্প যখন রুপোলি পর্দায় ম্যাজিক তৈরি করে, তা উপভোগ করতে যে দর্শকরা বারবার হলমুখো হবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তাই কলকাতা টু মফঃস্বল সব হলেই হাউজফুল বোর্ড ঝোলাতে সক্ষম তাঁরা বছর খানের ধরে। ‘আমার বস’-এর ক্ষেত্রেও যে তার অন্যথা হবে না, সোশাল মিডিয়ার সাড়া দেখেই তা বেশ আন্দাজ করা যাচ্ছে।
এই ছবির ট্রেলারে বিশেষ করে নজর কাড়ল বৃদ্ধ মা-বাবাদের জন্য ডে কেয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা। দেখা যায়, অনিমেষের অফিসের কর্মীরা সকলেই তাঁদের মা-বাবাদের নিয়ে চিন্তিত থাকেন। আর এমন কঠিন পরিস্থিতিতেই মুশকিল আসান-এর বুদ্ধি বাতলে দেন রাখি গুলজার। শুভ্রার পরামর্শেই ছেলে অনিমেষের প্রকাশনী সংস্থার অফিস হয়ে ওঠে বয়স্কদের জন্য ‘ডে কেয়ার হোম’। সামাজিক বার্তা দেওয়া সেই সিনেমারই এবার পার্লামেন্ট সফর হতে চলেছে। আগামী ৩ মে সংসদের লাইব্রেরি ভবনে স্ক্রিনিংয়ে উপস্থিত থাকবেন নন্দিতা রায়, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.