নতুন জামার গন্ধ। পুজোসংখ্যার পাতায় নয়া অভিযান। পুজোর ছুটির চিঠি। ছোটবেলার পুজোর গায়ে এরকমই মিঠে স্মৃতির পরত। নস্ট্যালজিয়ায় রুদ্রনীল ঘোষ।
ছোটবেলা পুজো শুরু হত জামা গোনা দিয়ে। পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া জামাগুলি খাটের উপর সাজিয়ে ফেলতাম। তারপর সেগুলো পরার দিন ঠিক হত। শুধু দিন নয়, সকাল কোনটা পরব, বিকেলে কোনটা- প্ল্যানিং হয়ে যেত অনেক আগেই। আবার কার ক’টা জামা হয়েছে, কার কম, কার বেশি, এনিয়ে ঝগড়া চলত পিঠোপিঠি ভাইবোনেদের মধ্যে।
[ আমার দুগ্গা: বিজয়া মানেই লোভনীয় সব মিষ্টি-নাড়ু ]
তবে ওই সময়, নিজের পছন্দমতো একা ঠাকুর দেখার স্বাধীনতা ছিল না। বাবা-মা যেখানে নিয়ে যেত, সেখানেই যেতে হত। “হয়তো বুবাইকে বললাম, দুপুরে থাকিস, ওই প্যান্ডেলে যাব। ঠিক তখনই বাবা বললেন, ওখানে না, ওমুক প্যান্ডেলে চল, ওখানে পিসি-পিসেমশাই আছে। মোদ্দা কথা, স্বাধীন ভারতেও ঠাকুর দেখার ক্ষেত্রে পরাধীন ছিলাম। তবে বন্দুকে ক্যাপ ফাটানো খুব এনজয় করতাম। আরেকটু বড় হয়ে পুজোর অনুভূতিতে জুড়ল ভাল লাগা। যাকে বলে ‘জেন্ডার অ্যাট্রাকশন’। ওপাড়ার কোনও মেয়েকে ভাল লাগা, তার সঙ্গে সময় কাটাতে চাওয়া, রাতে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া। মানে জীবনে প্রেম আসা শুরু পুজোর মধ্য দিয়েই।
আমার বড় হওয়া হাওড়াতে। সেখানে হাওড়া-জগাছা বারোয়ারি সর্বজনীন দুর্গোৎসবের সঙ্গে যুক্ত ছিল বাড়ির বাবা-কাকারা। এরপর আমরা। চাঁদা তোলার দায়িত্বও কাঁধে এল। সেই সময় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করার চেয়েও বড় ছিল চাঁদা তোলা। এত বছরের পুজোয় আমার উপলব্ধি হল, লাল-নীল টুনির আলোয় পাড়ার টুনটুনিকেও সায়রা বানুর মতো দেখতে লাগে।
[ পুজোয় শহর ছেড়ে পালাতে চাইছেন বেণুদা, ঋত্বিক! কেন? ]