Advertisement
Advertisement

‘বিদ্যার প্রশংসা শুনে ধন্যবাদ জানাতে ভুলে গিয়েছিলাম’, ‘পাতাল লোক’ নিয়ে অকপট স্বস্তিকা

'পাতাল লোক' দেখে স্বস্তিকাকে ফোন করেন বিদ্যা বালান।

Swastika Mukherjee gets phone call from Vidya Balan after Patal Lok
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:May 19, 2020 7:19 pm
  • Updated:May 19, 2020 7:46 pm

‘পাতাল লোক’ মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের ফোনটা বেজেই চলেছে। সবচেয়ে অবাক করে দিয়ে, স্বয়ং বিদ্যা বালান ফোন করে তাঁর প্রশংসা করেছেন। স্বভাবতই দারুন খুশি অভিনেত্রী। ‘পাতাল লোক’-এ কাজ করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর কাছে। শুনলেন বিদিশা চট্টোপাধ্য়ায়

বিদ্যা বালানের ফোন পেয়ে কতটা অবাক হয়েছেন?
স্বস্তিকা: আমাকে সেদিন রাতে ফোন করেছিলেন। আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। কিন্তু যখন নিজের নামটা উচ্চারণ করলেন আমি এতটাই হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম যে কী বলব বুঝে উঠতে পারিনি। ইমোশনালি চার্জড আপ হয়ে গিয়েছিলাম। কথাগুলো কানে ঠিক যেন ঢুকছিল না। বিদ্যা এত প্রশংসা করছিলেন যে তখন আর আমি ঠিক করে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ পর্যন্ত বলতে পারিনি। পরে মেসেজ করে ধন্যবাদ জানাই।

Advertisement

এটাই কি আপনার পাওয়া সবচেয়ে বড় কমপ্লিমেন্ট?
স্বস্তিকা: বাবা মায়ের কথা বাদ দিলে, বিশেষ করে বাবার কথা বাদ দিলে, বলতে পারেন এটাই সবচেয়ে বড় কমপ্লিমেন্ট। আসলে আমার বাবা আমার কেরিয়ারের ব্যাপারে প্রচণ্ড সাপোর্টিভ ছিলেন। কাজের ব্যাপারে বাবা সব সময়ে খোঁজ নিতেন। দিল্লিতে ‘পাতাল লোক’-এর শুটিং এর সময় বাবা প্রত্যেক দিন ফোন করতেন। একদিনও মিস হয়নি। এবং প্রতিদিনই বাবার একটাই প্রশ্ন ছিল, ‘পার্টটা মন দিয়ে করছিস তো? পরিচালক কী বলছে? ঠিক হচ্ছে তো?’ এর অন্যথা হয়নি একদিনও। বাবা একবারও জানতে চায়নি কত টাকা পাচ্ছি, কে পরিচালক, কোন প্রোডাকশন হাউজ, কোন প্ল্যাটফর্ম। শুধু জানতে চাইত আমি আমার পার্টটা ঠিক মত করছি কিনা। আজ সবাই আমার কাজের প্রশংসা করছে, বাবা থাকলে খুবই খুশি হতেন।

Advertisement

patal lok swastika

‘কাস্টিং বে’র পক্ষ থেকে অভিনেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায় এই চরিত্রের জন্য আপনাকে যোগাযোগ করেন?
স্বস্তিকা: হ্যাঁ, কিন্তু প্রসিত এবং ওর টিম খুবই সাহায্য করেছে আমাকে। ওরা যখন প্রথম যোগাযোগ করে তখন সদ্য মুম্বই থেকে কলকাতা ফিরেছি। এখান থেকে অডিশন টেপ পাঠাই। তারপর আবার মুম্বই গিয়ে প্রসিতের তত্ত্বাবধানে অডিশন দিই। ডলি মেহেরার মত কস্টিউম, মেকআপ সব কিছু সমেত। প্রসিত এবং ওর ডিওপি নিজেরা দাঁড়িয়ে থেকে আমাকে গাইড করেন। ওরা সত্যি ভীষণভাবে আমাকেই চেয়েছিলেন। আর আমিও এমন একটা চরিত্র যে কুকুর এত ভালোবাসে ছাড়তে চাইনি।

ডিপ্রেশনের শিকার এমন চরিত্রে আপনি আগেও অভিনয় করেছেন। ‘টেক ওয়ান’ খুবই উল্ল্যেখযোগ্য। এই চরিত্রের সঙ্গে কানেক্ট করতে সবচেয়ে সাহায্য কে করেছে?
স্বস্তিকা: সাবিত্রী। আমার মনে হয় ওটাই সবচেয়ে বড় যোগাযোগ। আমি নিজে কুকুর ভালবাসি। স্ট্রে-ডগস নিয়ে এনজিও’র সঙ্গে কাজ করি। আমাদের পরিবারটা যখন আরও বড় ছিল, আমাদের বাড়িতে এগারোটা নেড়ি ছিল। আমার বোন তো কুকুরের বাচ্চা ডেলিভারিও করেছে নিজে হতে। আমার বাড়িতে আছে ফুলকি। সেও রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা। লোকে যখন ‘পাতাল লোক’ দেখছে , প্রত্যেকের মুখে একই কথা, সাবিত্রীর সঙ্গে ডলির বন্ডিং। আসলে আমি নিজে জানি, আমাকে বিশেষ কিছু করতেই হয়নি। ফুলকিকে যেভাবে ডাকি, সাবিত্রীকেও সেভাবেই ডেকেছি।

নীরজ কবির সঙ্গে ‘ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বক্সি’র পর আবার কাজ করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা?
স্বস্তিকা: এটা আমাদের রিইউনিয়নের মত। আমি আর নীরজ হাসাহাসি করছিলাম ব্যোমকেশে আমাদের অপূর্ণ প্রেম, এখানে অপূর্ণ বিয়ে। কিছুতেই মিল হচ্ছে না (হাসি)। জোকস অ্যাপার্ট, নীরজ খুবই দক্ষ অভিনেতা সেটা আর আলাদা করে বলার কিছু নেই। এবং সব মহিলারাই আমার সঙ্গে একমত হবেন যে নীরজ খুবই অ্যাট্রাকটিভ, ভীষণ হট। কিন্তু কাজের সময় সেসব মাথায় রাখলে চলে না। কিন্তু বাকিরা যেটা জানেন না সেটা হল নীরজ দুর্দান্ত একজন মানুষ। ওর সঙ্গে কাজ করা খুবই আরামদায়ক। আমাদের ঘনিষ্ঠ দৃশ্যের সময় আমাকে খুবই সাহায্য করেছে, কারণ আমি সেদিন খুব এক্সসটেড হয়ে গিয়েছিলাম। দিল্লির প্রচণ্ড ঠান্ডায়, দুই ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাত প্রায় দেড়টা- দুটো নাগাদ শুটিং আরম্ভ হয় সেদিন। আর বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে শুট করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ওই শটটা ১১ বার দিতে হয়েছে। একটা সময় আমি বিছানাতেই শুয়ে পড়েছিলাম প্রায়। শটের মাঝখানে নীরজ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল, পিঠ টান করে দিচ্ছিল। আর আমরা প্রচুর আড্ডা মেরেছি। ওর অভিনয়ের জার্নি খুব সোজা নয়। সেসব শুনতে শুনতে অনেক শেখাও হল আমার। আর আমরা ইউনিটের সবাই একসঙ্গে খেতাম। এবং সত্যি কথা বলতে কি, এখানে প্রত্যেক অভিনেতাকে ওরা এত যত্ন করেছে, সম্মান দিয়েছে, বলার নয়। দিস ইজ ওয়ান থিং টলিউড শুড লার্ন ফ্রম বম্বে। অভিনেতাদের সম্মান এবং যত্ন খুব প্রয়োজন। যত ভালই স্ক্রিপ্ট লেখো না কেন, অ্যাক্টর যদি ডেলিভার করতে না পারে, তাহলে গোটাটাই মাটি।

swastka patal lok

আপনি বলছেন কলকাতায় অভিনেতাদের যথেষ্ঠ সম্মান করা হয় না?
স্বস্তিকা: আমার বলতে কোনও দ্বিধা নেই। কলকাতায় অভিনেতা, অভিনেত্রীদের একদমই প্রাপ্য সম্মান করা হয় না। একদমই দেওয়া হয় না। কিছু ইউনিট বাদ দিলে, কলকাতায় অ্যাক্টরদের সুবিধে, যোগ্য সম্মান দেওয়া হয় না।

এরপর কোন ছবিতে দেখা যাবে আপনাকে?
স্বস্তিকা: বেশ কিছু ছবি রেডি হয়ে আছে। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য আটকে গিয়েছে। মুকেশ ছাবড়া পরিচালিত ছবি ‘দিল বেচারা’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ৮ মে। এছাড়া নবনীত রঞ্জন পরিচালিত ছবি ‘তাবুলা রাসা’ রেডি। এই হিন্দি ছবি ধারাভির বাচ্চাদের নিয়ে একটি জুভেনাইল হোমের গল্প বলে। রজত কাপুরও রয়েছেন। কে কে মেননের সঙ্গে ‘লাভ অল’ ছবিটি করেছি। এই ছবির প্রেক্ষাপট ব্যাডমিন্টন। অর্জুনের ‘গুলদস্তা’ ছবিটা করেছি।

এরপর বাংলা ছবির ব্যাপারে কী চুজি হবেন স্বস্তিকা?
স্বস্তিকা: নিজেকে রিপিট করতে চাই না। কলকাতায় আমি এত ধরনের চরিত্রে কাজ করে ফেলেছি যে আমি কী চুজ করব জানি না। এমন কিছু যা আগে করিনি এমন চরিত্র পাওয়া মুশকিল। আর শুধু ছবি করার জন্য করতে চাই না।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ