কেউ যাবেন রাশিয়ায়, কেউ শুটিংয়ে। কিন্তু টলিউডের মন পড়ে থাকবে আর্জেন্টিনা কিংবা ব্রাজিলে। কেউ আবার নিজের ঘরে নিজের মতো আয়োজনে ফুটবলে মজবেন গোটা একটা মাস। টলিপাড়ার ফুটবল ম্যানিয়ার হদিশ নিলেন নির্মল ধর, কোয়েল মুখোপাধ্যায় ও সোমনাথ লাহা। এই পর্বে ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত প্রসেনজিৎ, পরমব্রত, রাহুল, ঋত্বিক, আবির, অনির্বাণ।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়: ওয়ার্ল্ড কাপ দেখতে মস্কো তো যেতেই হচ্ছে। এবারের বাড়তি টান ছেলে মিশুক। ওর আগ্রহকেই প্রেফারেন্স দিয়ে এবারের ওয়ার্ল্ড কাপ সফর। শেষ পর্বের চার/পাঁচটা খেলা দেখার কথা ভেবেই শিডিউলিং করেছি। মিশুকের ফেভারিট মেসি এবং আর্জেন্টিনা। আমারও। তবে ব্রাজিলকেও পাশে রাখছি। ছোটবেলা থেকেই এই দু’টো দেশ প্রিয়। চাই ফাইনাল খেলুক এরাই। জিতবে কে বলতে পারব না, তবে পুরো ওয়ার্ল্ড কাপের খেলা দেখাটাই তো একটা বড় এক্সপিরিয়েন্স।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়: সমর্থন করি আর্জেন্টিনাকে। এটা বাবার থেকে পাওয়া। সেই ১৯৯০ থেকে। কিন্তু প্রতি ওয়ার্ল্ড কাপেই আমাদের কাঁদতে হয়। লাস্ট টাইম ফাইনালে একদম ভেঙে পড়েছিলাম। এবার তো মেসির লাস্ট ওয়ার্ল্ড কাপ! তাই চাই এবার অন্তত জিতুক। কিন্তু বাস্তব বলছে চান্সেস আর স্লিম। টিম হিসেবে এগিয়ে রাখার ফ্রান্স। ব্রাজিল আর জার্মানি। এরা সব সময়ই ভাল দল।
রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়: আমি বরাবরই আর্জেন্টিনার সমর্থক। আমার জন্ম ১৯৮৩ সালে। আর ১৯৮৬-এ মারাদোনার নেতৃত্বে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেছিল। আমার সব সময়ের অত্যন্ত প্রিয় ফুটবলার মারাদোনা। আর এখন তো বলা যায় আমি একজন মেসি ভক্ত। আর্জেন্টিনার কোনও খেলাই আমি মিস করতে চাই না। যদিও এবার আর্জেন্টিনা যখন গ্রুপের লিগের ম্যাচ খেলবে তখন আমি মুসৌরিতে ‘ব্যোমকেশ গোত্র’র শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকব। তবে তাও শুটিংয়ের ফাঁকেই চেষ্টা করব আমার প্রিয় দলের খেলা দেখার। বাকি ম্যাচ (গ্রুপ লিগ বাদে) গুলো কলকাতায় ফিরেই দেখব। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা মিস করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আর্জেন্টিনা ছাড়াও আমি স্পেন, বেলজিয়ামের খেলা দেখব। তবে আমার চোখ সবসময়ই থাকবে মেসির খেলার দিকে। আমি আমার বাড়িতে স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে বসে খেলা দেখি। আর্জেন্টিনা গোল করলে আমাদের সেলিব্রেশন এতটাই চরম পর্যায়ে পৌঁছায় যে তার জন্য আমাদের খেলা দেখার সময় সেই ঘরে শুধুমাত্র পুরুষরাই প্রবেশ করতে পারে।
[বিশ্বকাপ জ্বরে আক্রান্ত টলিপাড়া, পছন্দের খেলোয়াড় নিয়ে মুখ খুললেন নায়িকারা]
ঋত্বিক চক্রবর্তী: আমি ব্রাজিলের ফ্যান। কিন্তু কনট্রাডিক্টারি শুনতে লাগলেও আমার ফেভারিট ফুটবলার হল লিওনেল মেসি। তবে হ্যাঁ, ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার মধ্যে খেলা হলে আমি ঝুঁকে থাকব ব্রাজিলের দিকেই। মনে-প্রাণে চাইব, ব্রাজিলই জিতুক। আমার কাছে ফুটবল বিশ্বকাপ মানেই সেই অনেক রাত জেগে খেলা দেখার স্মৃতি। একটা বড় বাড়িতে বন্ধুবান্ধবরা মিলে জড়ো হতাম, তার পর দু’টো দলে ভাগ হয়ে যেতাম। এক দল ব্রাজিলকে সাপোর্ট করছে, এক দল আর্জেন্টিনাকে। ফলে একটা মাঠের ফিল তৈরি হয়ে যেত বাড়িতে বসেই। সেই সব এখন খুব মিস করি। ছোটবেলার ফুটবল বিশ্বকাপ একটা অদ্ভুত নস্ট্যালজিয়া। হ্যাঁ, উন্মাদনাটা এখনও আছে। এখনও আমরা বন্ধু-বান্ধবরা মিলে প্ল্যান করি, চল অমুক খেলাটা একসঙ্গে বসে দেখা যাক! সেটা একজিকিউটও হয়। এবারও বিশ্বকাপ খেলা দেখার প্ল্যান আছে। আমার ধারণা, ওই সময় আমার ছুটি থাকবে।
আবির চট্টোপাধ্যায়: আমি তো ছোটবেলা থেকেই মারাদোনার অন্ধ ভক্ত। তাই মনে প্রাণে আমি আর্জেন্টিনার সমর্থক। আর এখন আমার প্রিয় ফুটবলার লিওনেল মেসি। তবে এবার ফুটবল কতটা দেখতে পাব জানি না। কারণ মুসৌরিতে ‘ব্যোমকেশ গোত্র’র শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকব। ছবিটা যেহেতু পুজোয় মুক্তি পাবে আর শুটিং যেহেতু বেশিরভাগটাই মুসৌরিতে তাই অন্তত ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা শুটিং তো করতেই হবে। তবে তার মধ্যেও শুটিংয়ের ফাঁকে ওখানে খেলা দেখার চেষ্টা করব। নিশ্চয়ই ওখানেও টিভি থাকবেই। আর্জেন্টিনা ছাড়াও আমি স্পেন, আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়াম, পর্তুগাল-এর খেলা দেখার চেষ্টা করব। কারণ আমি মনে করি বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ডের মতো আন্ডারডগ(underdog) টিমগুলো যে কোনও মুহূর্তে যাবতীয় হিসাব নিকেশ ওলটপালট করে দিতে পারে। এমনিতে কলকাতায় থাকলে আমি বাড়িতেই খেলা দেখি। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খেলা যেহেতু ভারতীয় সময় অনুযায়ী মাঝ রাতে হয় তাই বাড়িতেই খেলা দেখি একা। এবারে মুসৌরিতে যদি খেলা দেখতে পারি তাহলে সবার সঙ্গেই দেখব। ওয়ার্ল্ড কাপ মিস করতে মন চায় না। আমি তো জার্মানিকে সহ্যই করতে পারি না। খালি আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দেয়। ফলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। তবে এবার আমি মেসির হাতে বিশ্বকাপটা দেখতে চাই।
অনির্বাণ ভট্টাচার্য: আমি ভীষণরকম ক্রীড়াপ্রেমী। ফুটবল তো আমার ফেভারিট খেলা। আমার মনে হয় ক্রিকেট আর ফুটবলের মধ্যে ফুটবলই একমাত্র খেলা যেটা এখনও তার নিজের মর্যাদা হারিয়ে ফেলেনি। আমি মনে প্রাণে আর্জেন্টিনার সমর্থক। মেসি আমার কাছে ঈশ্বরতুল্য একজন ফুটবলার। আমি লিওনেল মেসির অন্ধ ভক্ত। আর্জেন্টিনার জার্সির রং দেখেই আমি আর্জেন্টিনার সমর্থক হয়েছিলাম। আমার সব বন্ধুরা ব্রাজিলের সমর্থক ছিল। পরে আমি বুঝেছিলাম যে আমি দারুণ একটা দেশের ফ্যান। আমার জন্ম যেহেতু ১৯৮৬-এ তাই মারাদোনার স্বর্ণযুগের খেলা আমি দেখিনি। আমি অনেক পরে তাঁর খেলা দেখেছি। তাই আমি মেসি ভক্ত। আমার দু’টো ইচ্ছে ছিল। তার মধ্যে একটা ইচ্ছে পূরণ হয়েছে। শচীনের হাতে ক্রিকেট বিশ্বকাপ উঠেছে। এবার মেসির হাতে ফুটবল বিশ্বকাপটা দেখতে চাই। আর্জেন্টিনা ছাড়াও আমি ব্রাজিল আর জার্মানির খেলা দেখব। এখনও বিশ্বকাপের ক্রীড়াসূচি হাতে পেলে আমি আগে দেখি কবে কোন সময় আর্জেন্টিনার খেলা রয়েছে। রামোসের খেলা আমার ভাল লাগে। তবে শুটিং থাকলেও ওয়ার্ল্ড কাপ মিস করা যায় না। তাই সব খেলাতেই চোখ রাখব।
[পক্ষাঘাতকে হার মানিয়ে স্বপ্নপূরণের কাহিনি, প্রকাশ্যে ‘সুর্মা’র ট্রেলার]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.