বিদিশা চট্টোপাধ্যায়: ‘আরিয়া’-র দ্বিতীয় মরশুমে (Aarya Season 2) প্রত্যাবর্তন করলেন সুস্মিতা সেন (Sushmita Sen) । গল্পের প্রেক্ষাপট এক থাকলেও, সিজন টু-র মুডবোর্ড আলাদা। প্রথম সিজনের মতো চমক, অপ্রত্যাশিত মৃত্যু, থ্রিলারের টানটান উত্তেজনা, কী হয়-কী হয় ভাব এই সিজনে পাবেন না। এই সিজন বরং আরও অনেক পারিবারিক, সম্পর্কের টানাপোড়েন, মাতৃত্বের উদযাপন। আরও একটু ঘরোয়া।
সিরিজের শুরুতে দেখা যায়, নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষী দিতে আরিয়া ফিরে আসে এবং শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসে। তার প্রোটেকশনও কেড়ে নেওয়া হয়। একদিকে তার নিজের ভাই ‘সংগ্রাম’, অন্যদিকে ‘শেখাওয়াতে’র মৃত্যুর বদলা নিতে মরিয়া তার বাবা, আবার তিনশো কোটি টাকা ফিরে পেতে তৎপর রাশিয়ার ড্রাগ মাফিয়ার দল— এই তিন পক্ষের সঙ্গে আরিয়ার লড়াই। তবে যেহেতু এই সিজন অনেক বেশি ইমোশনাল, তাই এই ওয়েব সিরিজের অনেকটা জুড়েই মায়ের দায়িত্ব পালনে আরিয়াকে দেখতে পাই। আরিয়া বেশি ব্যস্ত নিজের ছেলেমেয়েক সামলাতে কিংবা সংসারের অন্য দায়িত্ব পালনে।
এই ওয়েব সিরিজের গতি একটু কম। সেটা যাঁরা এনজয় করবেন ‘আরিয়া সিজন টু’ তাঁদের মন্দ লাগবে না। এবার আসি সুস্মিতা সেনের প্রসঙ্গে। তিনিই এই সিরিজের কেন্দ্রবিন্দু। তাই পোশাক, চাল-চলন, চিত্রনাট্যে প্রাধান্য পাওয়া- সবটাই মিস সেনের দিকে ঝুঁকে রয়েছে। তাঁর উপস্থিতি সবসময়ই উজ্জ্বল। কিন্তু এই উপস্থিতি এত পিচ পারফেক্ট যে মাঝে মধ্যে একটু অস্বস্তি হয়। আরিয়া বিধ্বস্ত হওয়া সত্ত্বেও মেকআপ পারফেক্ট। বাড়ির ভিতর হোক, বাইরে শত্রুর সঙ্গে মোকাবিলা, ঘুমোতে যাক কিংবা থানায় ইন্টারোগেশন— আরিয়া হিসেবে সুস্মিতা সেনের পোশাক, লুক, মেকআপ সবসময়ই আভিজাত্যপূর্ণ। যেন এইমাত্র কোনও বোর্ড মিডিংয়ের জন্য তৈরি হয়ে এসেছেন। হ্যাঁ, তাঁর অভিনয়, উপস্থিতি ভাল লাগে। কিন্তু প্রচণ্ড কঠিন পরিস্থিতিতেও এত অসম্ভব শান্ত, মার্জিত ভঙ্গি একটু চোখে লাগে।
সিরিজের শেষ দৃশ্যে আরিয়া যুদ্ধংদেহী মূর্তি ধারণ করে। এবং এই ইমেজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে গিয়েই আরিয়ার লাল পাড়-সাদা খাগড়া পরা অবতার আমরা দেখতে পাই। এবং এই পোশাক পরানো হবে বলেই যেন ‘হোলি’ উৎসবের উত্থাপন। নয়তো যে সর্বক্ষণ মিউটেড রং এবং সিম্পল সিলুয়েট পরে, সে হঠাৎ ভারতীয় পোশাক পরবে কেন! তবে ড্রামা অ্যাড করতে লাল রং প্রয়োজন তাই গল্পটাকে একটু টুইস্ট করা হয়। এইসব নজরে এলে একটু দিশাহীন লাগে।
গল্পের অন্যান্য প্রধান চরিত্রের ওপর আরও একটু ফোকাস করলে মন্দ হত না। বিশেষ করে এসিপি খান। এই সিরিজে এসিপি খানের বিশেষ করার কিছুই নেই। খানিকটা থাকতে হয় তাই থাকা। কিন্তু তবু শেষের দিকে বিকাশ কুমারের (এসিপি খানের চরিত্রে) তার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে কথোপকথন খুব সত্যি মনে হয়। মনে থেকে যাবে দৃশ্যটা। সিজন থ্রি আসারও সম্ভাবনাও রয়েছে। যদিও সিজন টু একটু হতাশ করে, তবে যাদের এই সিজন ভাল লেগেছে তারা সিজন থ্রি-র জন্য অপেক্ষা করতে পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.