সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ৫০ মিনিটের তর্কেই বিপক্ষকে চুপ করিয়ে দিয়েছিলেন। আদালতে দাঁড়িয়ে জোর গলায় বলেছিলেন, ‘ওঁরা বলছেন আমরা ইতিহাস বিকৃত করেছি। ছবির নির্মাতাদের ইতিহাস বিকৃত করার কোনও অভিপ্রায় ছিল না, কিন্তু কখনও যদি তা হয় আমি এটা নিয়েও বিতর্ক করতে চাইব যে কেন শিল্পীকে ইতিহাস বিকৃত করার স্বাধীনতা দেওয়া উচিত।’ সেন্সরের শংসাপত্র সত্ত্বেও রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যে ‘পদ্মাবত’-এর উপর নিষেধাজ্ঞা আদতে সংবিধানকে ভঙ্গুর করে তুলেছে। হরিশ সালভের এ কথার সময় সর্বোচ্চ আদালতের এজলাসে ছিল পিন ড্রপ সাইলেন্স। প্রতিপক্ষের মুখেও যেন কথা সরছিল না। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রও এ ঘটনাকে সাংবিধানিক গণতন্ত্রের জন্য একটি অভিঘাত হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
[সঞ্জয়ের অনুরোধে ‘প্যাডম্যান’-এর মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দিলেন অক্ষয়]
রায় প্রযোজকদের পক্ষেই গিয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে ছবিকে সিবিএফসি শংসাপত্র দিয়ে দিয়েছে তা দেশের সমস্ত রাজ্যেই মুক্তি পাবে। আইনশৃঙ্খলার সমস্যা থাকলে তা দেখার দায়িত্ব রাজ্যেরই। নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন সিনেপ্রেমীরা। অবশেষে প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে ‘পদ্মাবত’। এরপরও হুমকির পালা অব্যাহত। প্রেক্ষাগৃহ জ্বালাবার হুমকি দিয়েই চলেছে কর্ণি সেনা। কয়েক জায়গায় ইতিমধ্যেই প্রেক্ষাগৃহ ভাঙচুর করা হয়েছে। আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে হরিয়ানার এক প্রেক্ষাগৃহে। কট্টরপন্থী সংগঠনের হুমকি থেকে রেহাই পেলেন না প্রখ্যাত আইনজীবীও। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে হরিশ সালভের অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘পদ্মাবত’-এর মুক্তির খাতিরে লড়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রবীণ আইনজীবীকে। তাঁর শারীরিক ক্ষতি করার কথা বলা হচ্ছে।
[হিসেবের পাশেই রবি ঠাকুরের পংক্তি, দেখেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের খেরোর খাতা?]
বলে রাখা ভাল, এই হরিশ সালভেই মাত্র এক টাকার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণ যাদবের মামলা লড়েছিলেন। খবর যখন প্রকাশ্যে এসেছিল সারা দেশ তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পোস্টে ভরে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়া। তাতে হয়তো কট্টরপন্থীদের অনেকেও ছিলেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ও যে পালটায় তাঁর প্রমাণ মিলল এই হুমকিতে। যে হরিশ সালভে কুলভূষণের মামলা লড়ার পর প্রশংসার পাত্র ছিলেন, আজ তাঁকেই হুমকি শুনতে হচ্ছে। তবে কর্ণি সেনার হুমকির এ বহর নতুন নয়। এর আগেও পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালির মাথা কেটে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। নায়িকা দীপিকার নাক কেটে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে পঙ্গু করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। দীপিকার মাথার দাম ১০ কোটি টাকা ধার্য হয়েছিল। হুমকির জেরে সঞ্জয়, দীপিকার বাড়িতে পুলিশি প্রহরা বসাতে হয়েছিল। তবে কর্ণি সেনাদের নিন্দার পাত্র হলেও সিনেপ্রেমীদের প্রশংসা পেয়েছেন হরিশ। অনেকেই তাঁকে সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য সাধুবাদ দিয়েছেন।
[প্রেম-যৌনতা-রহস্যের মোড়কে কতটা নজর কাড়ল ‘আবার শবর’?]