Advertisement
Advertisement

টার্নিং পয়েন্ট ‘অন্ধাধুন’! কী বললেন আয়ুষ্মান?

'ভিকি ডোনার'-এর আগে পাঁচবার অফার ফিরিয়েছিলেন।

Interview of Ayushmann Khurrana
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:October 27, 2018 5:04 pm
  • Updated:October 27, 2018 5:04 pm

একসঙ্গে বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে তাঁর দুই ফিল্ম। ‘অন্ধাধুন’। ‘বধাই হো’। এ মুহূর্তে বলিউডের হটেস্ট আয়ুষ্মান খুরানা-কে মুম্বইয়ে ধরলেন অহনা ভট্টাচার্য

আপনি টিপিক্যাল হিরোর চরিত্রে অভিনয় করেন না। এটা কি ইচ্ছাকৃত?

Advertisement

আমি থিয়েটারের লোক। স্ট্রিট প্লেও করেছি। তাই বাস্তব ঘেঁষা চরিত্র আমার বেশি পছন্দ। হার্ডকোর কমার্শিয়াল ছবিতে কাজ করতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু স্ক্রিপ্ট ভাল হতে হবে।

Advertisement

স্ক্রিপ্ট নিয়ে খুব চুজি বলতে হয়।

আমি বরাবরই খুব সিলেক্টিভ। ‘ভিকি ডোনার’ করার আগে অন্তত পাঁচটা ছবিকে না বলেছিলাম। কারণ আমার হারানোর কিছু ছিল না। তখন চাকরি করতাম। এমটিভি-তে ভিজে (ভিডিও জকি) ছিলাম। রোজগারও ভাল ছিল। তখন আমার মাথায় ছিল যে, একটু অন্য ধরনের ছবি করব। জানতাম আমি স্টার কিড নই, প্রথম ছবি না চললে শেষ হয়ে যাব।

চরিত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রেও কি আপনি এতটাই সিলেক্টিভ?

যদি কেউ ভাল স্ক্রিপ্ট শোনায় তা হলে আমি হ্যাঁ বলতে সময় নিই না। ‘বধাই হো’-র স্ক্রিপ্ট শুনেই হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম।

আর ‘অন্ধাধুন’-এর জন্য সম্মতি পেতে কত দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল পরিচালককে?

আমি নিজেই পরিচালককে (শ্রীরাম রাঘবন) ফোন করেছিলাম। বলেছিলাম, আপনার সঙ্গে কাজ করতে চাই। উনি আমায় বলেছিলেন, “তুমি তো কখনও সাসপেন্স থ্রিলার বা ডার্ক ছবি করোনি।” তখন বললাম, আপনি অডিশন নিন। পরের দিন অডিশনে দুটো সিন শুটও করি আমরা। রাঘবনের আমার কাজ পছন্দ হয়। তার পরই ছবিতে নিয়ে নেন।

আজকাল বেশির ভাগ অভিনেতা নিজেই অডিশন দিতে চাইছেন।

অন্যদের কথা বলতে পারব না। তবে আমি করেছি। আমার মনে হয় কাজের ক্ষেত্রে নিজের ইগোকে দূরে সরিয়ে রাখাই শ্রেয়। আপনি যদি নিজের অভিনয়-দক্ষতা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হন, তা হলে অডিশন দিতে অসুবিধা কীসের?

এটা চলতে থাকলে ভাল-ভাল সব চরিত্র অন্য কারও কাছে তো যেতেই দেবেন না! নিজেই আগেভাগে অডিশন দিয়ে রোল বাগিয়ে নেবেন।

(হাসি) মাঝে মাঝে এমনও হয় যে, চরিত্রটা খুব ভাল কিন্তু স্ক্রিপ্ট নয়। আমি মনে করি স্ক্রিপ্ট ভাল হওয়া খুব জরুরি। অনেক সময় অভিনেতা নিজেকে নিয়ে এতটাই অবসেসড হয়ে যায় যে মন করে গোটা ছবি জুড়ে সে-ই থাকবে। হয়তো সেই চরিত্রটাই সেরা। কিন্তু গোটা স্ক্রিপ্ট যদি ভাল না হয়, ছবি জমবে না। আমার করা কিছু ছবি যেমন ‘বরেলি কি বরফি’, ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’ বা ‘বধাই হো’, এগুলোয় চরিত্রাভিনেতারাও অসাধারণ কাজ করেছে। তাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল স্ক্রিপ্ট।

ছবির অফার ফিরিয়ে দিয়ে পরে অনুতাপ করেছেন কখনও?

অনুতাপ হয়নি। সত্যি কথা বলতে আজ অবধি যে সব ছবি আমি ফিরিয়ে দিয়েছি, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই চলেনি।

#MeToo নিয়ে তোলপাড় দেশ, এরই মধ্যে উঠে এল নারীশক্তির কথা ]

‘বধাই হো’ প্রসঙ্গে বলি, বাস্তবে আপনার সঙ্গে যদি এ রকম হত, মানে অনেক বেশি বয়সে যদি আপনার মা প্রেগন্যান্ট হয়ে যেতেন, তা হলে আপনি কী করতেন?

হা হা হা! আমি ছবিতে যে ভাবে রিঅ্যাক্ট করেছি ঠিক সে ভাবেই হয়তো করতাম। এই বয়সে কারও মা প্রেগন্যান্ট হয়ে যাওয়াটা তো জানা কথাই খুব এমব্যারেসিং! ভাবতাম কী দরকার ছিল এটা করার! মানে সেক্স করা যেতেই পারে কিন্তু তাই বলে এই বয়সে এসে বাচ্চা? আজকাল এ রকম পরিস্থিতি খুব একটা তৈরি হয় না। কিন্তু আগেকার দিনে হত, যখন লোকজনের দশ-পনেরোটা করে বাচ্চা হত।

গত বছর আপনার দুটো ছবি পরপর মুক্তি পেয়েছিল। এ বছরও তাই হল। দুটো ফিল্মের মধ্যে একটু সময়ের ব্যবধান থাকলে ভাল হত না?

হ্যাঁ সময়ের ব্যবধান তো থাকা উচিত। কিন্তু একই সঙ্গে ভাল রিলিজ ডেট পাওয়াটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রথম কোনও উৎসবের মধ্যে আমার ছবি মুক্তি পেল। যদিও ছুটির দিনে মুক্তি পাওয়া ছবি ভাল ব্যবসা করে, কিন্তু এখানে একটা কথা বলে রাখি। আপনি যখনই ফিল্ম রিলিজ করুন না কেন, আপনার ছবি যদি ভাল না হয়, সেটা কখনওই চলবে না।

নিজের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেন?

অবশ্যই। আমি নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি। কোথায় ভুল হয়েছে সেটা বোঝার চেষ্টা করি। সেটা যাতে দ্বিতীয়বার না হয় সেটা দেখি।

গত কয়েক বছরে আয়ুষ্মান খুরানা কতটা পাল্টেছেন?

(হাসি) আমি সেই একই মানুষ আছি। তবে এখন সিদ্ধান্ত নিতে শিখে গিয়েছি।

একটা কথা জানতে ইচ্ছে করছে। ইন্ডাস্ট্রিতে আপনার কোনও মেন্টর আছেন?

অবশ্যই! সুজিত সরকার এবং আদিত্য চোপড়া। সুজিত সরকার কাজের ব্যাপারে বেশ খুঁতখুঁতে আর আদিত্য চোপড়া আমার প্রতিটি ছবি দেখে নিজের মতামত দেন। এ ছাড়াও স্ক্রিপ্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমার স্ত্রী এবং ম্যানেজার, যিনি এই মুহূর্তে আপনার পেছনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, এই দু’জন আমাকে খুব সাহায্য করেন।

পরপর দুটো ছবি তো দিব্যি চলল, এর পর কী করবেন?

আপাতত এক মাসের জন্যে ছুটি নেব। তার পর দেখা যাক!

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কিছু করার কথা ভাবছেন?

ডিজিটালে এখনই কিছু করছি না। তবে এই মিডিয়ামে কাজ করতে আমি আগ্রহী।

কতটা ‘আনলিমিটেড’ ‘হইচই’ করলেন দেব? হলে যাওয়ার আগে জেনে নিন ]

আপনার ভাই অপারশক্তি খুরানাও বেশ ভাল কাজ করছেন। বাড়িতে দুই ভাই কাজ নিয়ে আলোচনা করেন?

হ্যাঁ, ছবি নিয়ে আলোচনা করি। একে অপরের মতামত নিই। ওর স্ক্রিপ্ট নির্বাচন আর টাইমিং আমার খুব ভাল লাগে। আমি ওকে নিয়ে খুব গর্বিত। ‘স্ত্রী’ ফিল্মটায় ও খুব ভাল কাজ করেছে। ও আস্তে আস্তে নিজের জায়গা তৈরি করে নিচ্ছে।

দুই ভাই একসঙ্গে পর্দায় মুখ দেখাবেন কবে?

ইচ্ছে তো আছে। একটা ভাল স্ক্রিপ্টের অপেক্ষায় আছি।

আজকাল মাল্টিস্টারার ছবি অনেক তৈরি হচ্ছে। এমন কেউ আছেন যাঁর সঙ্গে কাজ করতে আপনার ইচ্ছে করে?

অমিতাভ বচ্চন, আমির খান, শাহরুখ খান। একাধিক অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে আমার কোনও অসুবিধা নেই। এ রকম ছবিতে আমি কাজও করেছি। যেমন ধরুন ‘বরেলি কি বরফি’। তবে এই ধরনের ছবিতে যদি আমি কাজ করি, তা হলে চিত্রনাট্য আর আমার চরিত্রটা ঠিকঠাক হতে হবে।

বরুণ ধাওয়ানের অভিনয় জীবনে ‘বদলাপুর’ যে ভূমিকা পালন করেছে, আপনার কেরিয়ারের ক্ষেত্রে কি সেই ছবিটার নাম ‘অন্ধাধুন’?

একদম ঠিক বলেছেন। যেমন ‘এক হাসিনা থি’-র পর সইফ আলি খান সম্পর্কে দর্শকের ধারণা পালটে গিয়েছিল। ‘বদলাপুর’-এর পর বরুণ ধাওয়ানকে দর্শক নতুন ভাবে দেখল, তেমনই আমার ক্ষেত্রে সেই কাজ করেছে ‘অন্ধাধুন’।

আপনার ছবিগুলোর মধ্যে যদি একটা প্রিয় ছবি বেছে নিতে বলা হয়, কোন নামটা সবচেয়ে আগে মনে আসে?

‘দম লাগা কে হাইসা’। ওই ছবিটায় আমি যে ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম, বাস্তবের আমি একদম উলটো মানুষ।

এখনও পর্যন্ত বলিউডে আপনার জার্নি কতটা সহজ বা কঠিন?

সহজ একেবারেই না। আমার বেশ কিছু ছবি চলেনি। আমি আমার ব্যর্থতা থেকে শিখেছি, যেটা একটু আগেই বললাম। সাফল্য আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে ঠিকই, কিন্তু ওভার কনফিডেন্ট হয়ে গেলে মুশকিল।

আপনি তো একই সঙ্গে নায়ক এবং গায়ক। কোনও মিউজিকাল ছবিতে কাজ করতে চান?

সুযোগ পেলে আমি কিশোর কুমারের বায়োপিকে কাজ করতে চাইব। আমি ওঁর গানের খুব ভক্ত।

সত্য অন্বেষণে কতটা সফল সত্যান্বেষী? কেমন হল ‘ব্যোমকেশ গোত্র’? ]

আয়ুষ্মান আকর্ষণ

  • লুকস: তাঁকে দেখে হিরো কম, পাড়ার হ্যান্ডসাম ছেলে বেশি মনে হয়। ‘হাত বাড়ালে পাওয়া যেতেও পারে’ ব্যাপারটা তাঁর এক্স ফ্যাক্টর।
  • অভিনয়: শুধু বডি দেখানো বা নাচ বা চুমু খাওয়া তাঁর ইউএসপি নয়। অভিনয়টাও করতে পারেন। সেক্স অ্যাপিলের সঙ্গে ট্যালেন্টের এমন রোম্যান্স কি উপেক্ষা করা যায়?
  • গানের গলা: ‘পানি দা রঙ্গ দেখকে’ গানটা শুনে গায়কের প্রেমে পড়েননি, হেন মেয়ে বোধহয় নেই। এমনিতেই হাতে-গিটার পুরুষের প্রতি নারীহৃদয় দুর্বল হতে বাধ্য। আর গিটারের সঙ্গে ও রকম মধু-ডোবানো গলা? বুঝে নিন!
  • হটকে সিভি: স্পার্ম ডোনেশন থেকে ইরেকটাইল ডিসফাংশন- হেন বিষয় নেই যা স্বচ্ছন্দে সেলুলয়েডে তুলে ধরেননি।
  • রিয়েল লাইফ হিরো: সাত-আট বছরের প্রেম আর দশ বছরের বিবাহিত জীবন পেরিয়েও স্ত্রী তাহিরার প্রতি ডেডিকেটেড তিনি। তাহিরার স্তন ক্যানস্যার ধরা পড়ার পর যে ভাবে তাঁর পাশে থেকেছেন, দেখে শেখার মতো। সারা দিন ফিল্মের প্রোমোশন সেরে সারা রাত হাসপাতালে স্ত্রীর সঙ্গে কাটিয়েছেন আয়ুষ্মান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ