সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহালয়া মানেই পুণ্য প্রভাতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় মহিষাসুরমর্দিনীর আগমন বার্তা শোনা। আকাশবাণীর দৌলতে আট থেকে আশি, সবাই তাঁর গলার ভক্ত। তবে একবার এর বদল ঘটেছিল। ১৯৭৬ সালে। সেই ঘটনাই উঠে আসছে ‘মহালয়া’ ছবিতে। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ছবির ট্রেলার।
পরিবর্তন সবসময়ই চান মানুষ। আর এই চাহিদার ফাঁদে পড়ে অনেক সময় পুরনো, দুর্মূল্য সম্পদ রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় তারা। কিন্তু সবসময় পুরনো মানেই বস্তাপচা নয়। প্রমাণ করেছিল সেসময়ের বাঙালি শ্রোতা। আকাশবাণীতে তখন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের জয়জয়কার। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চাইল বদলাক সুর, তাল, লয়। বদলাক আওয়াজ। আর তখন বাংলা ছবির স্বর্ণযুগ চলছে। বাজারে তখন একটাই নাম – উত্তম কুমার। যে শিখরে তিনি তখন অবস্থান করছিলেন, তার আশপাশেও ঘেঁষতে পারেনি কেউ। তাই বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের পরিবর্তে আনা হল উত্তম কুমারকে। তাতে কি কিছু লাভ হল?
[ গ্র্যামি ২০১৯-এ নারীদের আধিপত্য, অনুষ্ঠানে রহমানের নজরকাড়া উপস্থিতি ]
এদিকে তাঁর পরিবর্তে যে উত্তমকুমার ভাষ্যপাঠ করবেন,আগেই জেনেছিলেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র। আঘাত লাগল তাঁর সম্মানে। সেসময় অনেকেই এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারেননি। এক মুহূর্তের জন্য হেসে উঠেছিলেন মহানায়ক নিজেও। কিন্তু ওটুকুই। মার্কেটিংয়ের জন্য কর্তৃপক্ষ বদলাতে চেয়েছিল ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। আর তাঁকে করতেও হয়েছিল। কিন্তু বেতারে মহিষাসুরমর্দিনীর ভাষ্যপাঠে তিনি ডাহা ফেল করে যান। বাঙালি তাঁকে কোনওভাবেই বীরেন্দ্রকৃষ্ণের জায়গায় মেনে নিতে পারেনি। সেবার অকালবোধনের আগে এই একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তুলকালাম হয়েছিল বাংলায়। বাঙালির আবেগে আঘাত লেগেছিল। উত্তমকুমার যত মহানায়কই হোন না কেন, তিনি যে মহিষাসুরমর্দিনীর ভাষ্যপাঠের জন্য একেবারেই ঠিক ব্যক্তি নন, তা তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছিল জনগণ।
সেই গল্পই এবার উঠে আসবে বড়পর্দায়। ছবির নাম ‘মহালয়া’। ছবিতে বীরেন্দ্রকৃষ্ণের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। উত্তমকুমারের ভূমিকায় দেখা যাবে যিশু সেনগুপ্তকে। এছাড়া রয়েছেন সপ্তর্ষি রায়, কাঞ্চন মল্লিক, রুদ্রনীল ঘোষ, শুভময় চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতারা। ছবিটি পরিচালনা করেছেন সৌমিক সেন। প্রযোজনার দায়িত্ব সামলেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ১ মার্চ মুক্তি পাবে ছবিটি।
[ ‘বদলা’ নিয়ে পর্দায় ফিরছেন অমিতাভ-তাপসী ]