Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘উড়তা পাঞ্জাব’: নেশার অন্ধকার থেকে আলোর যাত্রা!

ড্রাগস নিয়ে ছবি বললে লোকে যা যা দেখবে বলে আশা করে থাকে, সেই সবই এই ছবিতে সাজিয়ে-গুছিয়ে দেখানো হয়েছে। ব্যস, এই পর্যন্তই!

Movie Review of Udta Punjab
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 18, 2016 2:44 pm
  • Updated:June 18, 2016 2:44 pm

অনির্বাণ চৌধুরী: এত হইহই, এত রইরই, সে সব পেরিয়ে ঠিক কী প্রোডাক্ট দর্শকের হাতে তুলে দিলেন অভিষেক চৌবে?
ড্রাগের নেশা নিয়ে যুঝতে থাকা রকস্টার (শাহিদ কাপুর), ড্রাগস বিক্রি করতে গিয়ে ডিলারদের হাতে ধরা পড়ে নিয়মিত ধর্ষিতা হওয়া হকি চ্যাম্পিয়ন (আলিয়া ভাট), ডাক্তার (করিনা কাপুর খান) আর পুলিশের (দিলজিৎ দোসাঞ্জ) রাজ্যকে ড্রাগস্ মুক্ত করতে চাওয়ার চেষ্টা- মোটের উপর গল্প বলতে এই! অন্ধকার থেকে সূর্যোদয়ের দিকে যাত্রা!
কিন্তু এখানেই শেষ নয়!
‘হামার শুনবা না, তো গা*য়াঁ ফাট যায়ি!’
কেন?
ছবিটাই তো আসলে ওইরকম! ড্রাগস আর দর্শক- দুটো নিয়েই খেলা করেছেন দর্শক!

up1_web
আসলে ছবি দেখে সাফ বোঝা গিয়েছে, যাকে নিয়ে এত কিছু, সেই ড্রাগস ব্যাপারটা নিয়েই স্বচ্ছ কোনও ধারণা নেই অভিষেক চৌবের। না’ই থাকতে পারে! কিন্তু, ন্যূনতম গবেষণার প্রয়োজনটুকুও বোধ করেননি তিনি! এটাই এই ছবির সব চেয়ে বিরক্তিকর ব্যাপার!
অবাক লাগল দেখে- কোনটা কোকেন, কোনটা হেরোইন, সে সবের কিছুই কি জানেন না পরিচালক? কী ভাবে কোকেনের দর হেরোইনের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলেন তিনি, ভাবতে গেলে মাথা ঘুরে যায়!
ভুলের ফিরিস্তি দিতে গেলে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। কেউ কোনও দিন দেখেননি, নিয়মিত ড্রাগ নেওয়া লোকজনের স্বাস্থ্য এত ভাল হয় কী করে! যেমন ধরুন, টমি সিং! না কি স্টেট হকি চ্যাম্পিয়ন, ইংরেজি পড়তে পারা মেয়ে ডিলারদের ডেরায় ড্রাগস বিক্রি করতে যাওয়ার ভুল করবে?
যে ছবি ড্রাগস নিয়ে এত বড় বড় কথা বলতে চায় তার কাছ থেকে এটুকু বিশ্বাসযোগ্যতা কেন আশা করা যাবে না?

Advertisement

up2_web
বেনো জল আছে আরও! কোনও দিন শুনেছেন, ইন্টারনেট থেকে ড্রাগ ডিলারদের ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়? এই তদন্তের জায়গাটাও খুব বোকা বোকা। বিশ্বাসযোগ্যতাহীন, টিপিক্যাল বলিউডি একটা গল্প! এই গল্পই যদি ফাঁদতে হয়, তবে ছবির প্রচারে বাস্তব নিয়ে মাথা ঘামানো কেন?
অভিষেক চৌবের খুব সম্ভবত কেন, একেবারেই নেশা জিনিসটা নিয়ে কোনও ধারণা নেই! নেশা মানুষ কেন করে, বিশেষ করে গরিবরা কী ভাবে- সে দিকটা ছবিতে ধরার কোনও চেষ্টাই করেননি তিনি! স্রেফ দেখিয়েছেন, এক আইকন নেশা করে বলে তার ভক্তরাও মেতে উঠেছে! পুরো একটা রাজ্য শুধু এ কারণে মারাত্মক সব নেশা করতে পারে?
ছবিটা দেখতে বসে আপনার তাই বার বার নিজেকে প্রতারিত মনে হবে। মনে হবে, এ ছবিতে বাস্তব কিছুই নেই! ড্রাগস নিয়ে ছবি বললে লোকে যা যা দেখবে বলে আশা করে থাকে, সেই সবই এই ছবিতে সাজিয়ে-গুছিয়ে দেখানো হয়েছে। ব্যস, এই পর্যন্তই!
তাহলে, এই এত কিছু খারাপের মধ্যেও ছবিতে ভাল কী আছে?
ছবিটা যত্ন করে বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সিনেম্যাটোগ্রাফি সুন্দর, তা চোখকে আরাম দেবে। আর ভাল লাগবে অভিনয়।
সবাই আশা করেই রেখেছিলেন, শাহিদ কাপুর হায়দার-এর পর ফের একটা মাইলস্টোন তৈরি করবেন টমি সিংয়ের চরিত্রে। তাঁর হাই অকটেন পারফর্ম্যান্স সেই প্রত্যাশা পূর্ণ করবে। শাহিদকে দেখে বিশ্বাস করা শক্ত- ড্রাগস না নিয়েও নেশাখোরের জীবনযাপন এত সাবলীল ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি!

Advertisement

up3_web
তেমনই চমকে দেবেন আলিয়া ভাট। ছবিতে তাঁর সংলাপ খুব কম। কিন্তু, তুখোড় ডি-গ্ল্যামারাইজড্ লুক, এলোমেলো মেক-আপে চোখ আর সারা শরীর দিয়ে অভিনয় করে গিয়েছেন আলিয়া। তাঁর খুব স্বতস্ফূর্ত আর ঠিকঠাক বিহারি উচ্চারণ শুনলেও অবাক হতে হয়!
অবশ্য, করিনা কাপুর খানের এই ছবিতে তেমন কিছু করার ছিল না। কিন্তু, যেটুকু সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন, সেখানেও তিনি পুরোটা দিয়ে অভিনয় করেননি। করিনাকে এই ছবিতে খুবই দায়সারা মনে হয়েছে। নেহাত একটা চরিত্র আছে, তাই অভিনয় করতে হচ্ছে গোছের ব্যাপার!
তবে, করিনার এই খুঁত ঢেকে দিয়েছেন দিলজিৎ দোসাঞ্জ। তাঁকে দেখে মনেই হয়নি, তিনি অভিনয় করছেন। তাঁর আর করিনার যেটুকু রোমান্টিক দৃশ্য আছে ছবিতে, সেখানেই একমাত্র করিনা নিজের চরিত্রের প্রতি সুবিচার করেছেন। সেটা যতটা না নায়িকার কৃতিত্ব, তার চেয়ে বেশি দিলজিতের সঙ্গত!
সব মিলিয়ে তাহলে কী এল ‘উড়তা পাঞ্জাব’-এর খাতে? একবার দেখেই ভুলে যাওয়া! ব্যস! যে পরিচালক এর আগে ‘ইশকিয়া’ আর ‘দেড় ইশকিয়া’ উপহার দিয়ে মুগ্ধ করেছিলেন আমাদের, এবারে তাঁর কাছ থেকে এর বেশি আর কিছুই পাওনা হল না!
পরিচালনা: অভিষেক চৌবে
প্রযোজনা: অনুরাগ কাশ্যপ, একতা কাপুর, বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে, বিকাশ বহেল
কাহিনি ও চিত্রনাট্য: সুদীপ শর্মা, অভিষেক চৌবে
অভিনয়: শাহিদ কাপুর, আলিয়া ভাট, করিনা কাপুর খান, দিলজিৎ দোসাঞ্জ
২.৫/৫

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ