সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনি জাতীয় পুরস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী। দিকে দিকে বেড়েছে তাঁর গানের চাহিদা। মঞ্চে মঞ্চে শ্রোতাদের মুগ্ধ করে চলেছেন তিনি। সেই তাঁকেই প্রতারিত হতে হল অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের হাতে। সম্প্রতি মালদহের এক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে তিক্ত অভিজ্ঞতাই হল শিল্পী ইমন চক্রবর্তীর।
জানা যাচ্ছে, ৪ জুন মালদহ শিল্পী সংস্কৃতি মঞ্চ আয়োজিত উত্তরবঙ্গ সাহিত্য সংস্কৃতি উৎসবে গান গাওয়ার কথা ছিলো ইমনের। অনুষ্ঠানের জন্য যা পারিশ্রমিক চেয়েছিলেন ইমন, তা মেনে নিয়েই রাজি হয়েছিলেন আয়োজকরা। সেই মতো ৫০০০ টাকা অ্যাডভান্সও করেছিলেন তাঁরা। কথা ছিল উদ্যোক্তারাই ট্রেনের টিকিট পাঠাবেন। কিন্তু তা না পাঠানোয় শেষমেশ নিজেই গাড়ির ব্যবস্থা করেন শিল্পী। কিন্তু যতই অনুষ্ঠানের দিন এগিয়ে আসে, তাঁর সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ করেননি উদ্যোক্তারা। অবশেষে অনুষ্ঠানের আগের দিনও উদ্যোক্তাদের কোনও উচ্চবাচ্য না দেখে অনুষ্ঠান বাতিল করেন ইমন। কিন্তু তারপর ফেসবুকের বন্ধুদের মারফত তিনি জানতে পারেন যে, ওই মঞ্চে ঘোষণা করা হয়, জঙ্গিপুরের কাছে ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে রয়েছেন তিনি। এবং তার কিছু পরে আয়োজকদের তরফ থেকে জানানো হয়, টাকা নিয়েও অনুষ্ঠানে আসেননি ইমন।এই অভিযোগ শোনার পরই অপমানিত বোধ করেন ইমন। ফেসবুকে তাঁর ফ্যানদের কাছে সত্যি কী কী ঘটেছিল জানাতে মধ্যরাতেই লাইভে আসেন তিনি। জানান আদতে কী ঘটেছিল।
[ফুটবল বনাম বক্সিং, টলিপাড়ার বক্স অফিসে জমেছে খেলা]
ইমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক-কে তিনি জানান, “বেশ কিছুদিন আগেই মালদহ শিল্পী-সংস্কৃতি মঞ্চের তরফ থেকে যোগাযোগ করা হয় আমার সঙ্গে।আমার পারিশ্রমিক-সহ বাকি সব শর্ত মেনে নিয়েই তাঁরা রাজি হন।মিউজিশিয়ানদের কথা মাথায় রেখে অনুষ্ঠানের জন্য ৫০শতাংশ অ্যাডভান্স নিয়ে থাকি।এক্ষেত্রে শুধুমাত্র টোকেন হিসাবে ৫০০০ টাকা দিয়ে যান তাঁরা।” শিল্পী জানাচ্ছেন, এরপর আয়োজকদের তরফ থেকে জানানো হয় তাঁরা ট্রেনের টিকিট পাননি। তাই তিনি নিজেই গাড়ির ব্যবস্থা করেন মালদহে যাওয়ার জন্য।” আমার মেসোমশাই আমার সমস্ত অনুষ্ঠানের কথাবার্তা বলে থাকেন। তিনিই আবার যোগাযোগ করেন আয়োজকদের সঙ্গে। এমনকী আমি নিজেও ফোন করি, মেসেজ পাঠাই। কিন্তু কোনওরকম মেসেজ বা ফোনের জবাব দেন না আয়োজকরা।,” জানান ইমন। ওখানে গিয়ে শেষমেশ কী অবস্থায় পড়তে হয় এই ভেবে মালদহে না যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নেন তিনি।কিন্তু আয়োজকরা ধরেই নিয়েছিলেন তিনি আসবেন। ইমন বলেন, “আচমকা বন্ধুদের থেকে জানতে পারি আয়োজকদের তরফ থেকে ওই মঞ্চে ঘোষণা করা হয়, আমি নাকি ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে এবং তারপর বলতে শুরু করেন টাকা নিয়ে গান গাইতে আসেনি। এরপরই রীতিমতো বাধ্য হয়ে মধ্যরাতে ফেসবুক লাইভে আসি। ফেসবুকের লাইভ দেখার পর আমাকে অনেক সিনিয়ররা ফোন করেন এবং প্রত্যেকেই আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন।” ইমন আরও জানান, “ওই একই মঞ্চে অন্যদিন হাজির ছিলেন খরাজ মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান করলেও কনফারমেশন ছাড়াই ট্রেনে তুলে দেওয়া হয় তাঁর টিমকে। সারারাত বসে বসেই মালদহ থেকে কলকাতায় ফিরতে হয় খরাজদার মিউজিশিয়ানদের।”
[পোস্টারেই চমক নিয়ে হাজির মধুর ভান্ডারকরের ‘ইন্দু সরকার’]
এর আগেও বহুবার বহুভাবে প্রতারণার শিকার হতে হয়েছে শিল্পীদের।কিন্তু জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পীর সঙ্গে এহেন আচরণ সত্যিই লজ্জাজনক, আর তারই প্রতিবাদে সরব বাংলার অন্যান্য সংগীতশিল্পীরাও।