‘হেলিকপ্টার ইলা’র সেটে কাজলকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন ঋদ্ধি সেন। সেই অভিজ্ঞতা শুনলেন শুভঙ্কর চক্রবর্তী।
সেন্স অফ হিউমার:
শুটিংয়ের প্রথম দিকে স্বাভাবিক ভাবেই আমার একটু জড়তা ছিল। হার্ডকোর বলিউড ছবিতে মুখ্য চরিত্রে এই প্রথম অভিনয়। তাও আবার উলটো দিকে কাজল ম্যামের মতো স্টার। কিছু কিছু সময়ে চুপ করে যেতাম। টু ব্রেক দ্য আইস কাজল ম্যাম আমার সঙ্গে সেটে ঠাট্টা-ইয়ার্কি করতেন। শুধু আমার নয়, গোটা টিমের সঙ্গেই। টু রিল্যাক্স আওয়ার মুড। ওঁর সেন্স অফ হিউমার সাংঘাতিক। আর সেটা হেল্পও করত আমাদের এনার্জি ধরে রাখতে। ক্লাইম্যাক্স শুটটা ভীষণ হেকটিক ছিল। অনেক রাত অবধি কাজ চলেছিল সে দিন। সময় কম, চারদিকে চেঁচামেচি, অনেক শট নেওয়া বাকি। এ রকম অবস্থাতেও এমন কিছু বললেন কাজল ম্যাম যে সব্বাই হো হো করে হাসছি। দুম করে এনার্জি বেড়ে গেল সবার। এত চাপের মধ্যেও একটা মানুষ লোকজনকে হাসাতে পারছে। সেন্স অফ হিউমার না থাকলে ও রকম অবস্থায় এটা করা সম্ভব নয়।
আমি যা আমি তা:
কাজল কেন কাজল হতে পেরেছেন যদি কেউ জিজ্ঞেস করে, তা হলে বলব কারণ উনি ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে দেন না। বিশ্বাস করেন আমি যেমন, তেমনই থাকব। সব সময় নিজের শর্তে কাজ করেন। কখনও নিজেকে পালটে ফেলার চেষ্টা করেন না। কর্মক্ষেত্রে তো বটেই, ব্যক্তিগত জীবনেও শি অলওয়েজ ফলোস হার হার্ট। অনেকেই বলেন, “আমি আমার মনের কথা শুনি।” কিন্তু কাজল ম্যামকে এটা করতে দেখেছি। কাজল ম্যাম অনেকটা ‘ইলা’র মতো। আবার একটু আলাদাও। ট্রেলার রিলিজ অনুষ্ঠানে অজয় দেবগণ খুব ভাল বলেছেন কাজল ম্যাম সম্বন্ধে। বলেছেন, “কাজল খতম হি নহি হোতি, অওর ইলা শুরু হি রহতি হ্যায়।” একদম ঠিক বলেছেন অজয় স্যার। দুটো চরিত্র খুব সুন্দর মিশে যায়। তাই হয়তো ইন্ডাস্ট্রির মানুষ হয়েও তিনি একটু আলাদাই থেকেছেন।
[‘কলকাতার পার্টিতে ইমরান খান মানেই বিরিয়ানি আর সুন্দরীরা’]
ইম্প্রোভাইজেশনে এক্সপার্ট:
প্রদীপদা স্ক্রিপ্ট ওরিয়েন্টেড কাজ করতে পছন্দ করেন না। যা লেখা আছে তাই বলতে হবে, এমনটা নয়। অভিনেতা-অভিনেত্রীর নিজস্ব কাজের স্টাইলকেও প্রদীপদা প্রাধান্য দেন। তাই ইম্প্রোভাইজ করার জায়গাটা অনেক বেশি থাকে। এই ইম্প্রোভাইজেশনে কাজল ম্যাম হচ্ছেন এক্সপার্ট। স্পনটেনেইটিতে তুখড়। সিনে এমন এমন জিনিস করেন যে ওভারঅল সিনটা অন্য লেভেলে পৌঁছে যায়। আমিও এটা করতে খুব ভালবাসি। সেটে কাজল ম্যাম আর আমার কেমিস্ট্রি খুব ভাল ছিল। এমনও হয়েছে যে আগে থেকেই আমি বুঝতে পারছি যে উনি শটে কী করতে চলেছেন। উনিও বুঝতে পারছেন আমি কী করব।
ব্যালান্সড:
দীর্ঘ দিনের ফিল্ম কেরিয়ার। এত খ্যাতি। কিন্তু ছবি করেছেন মাত্র গোটা তিরিশেক। মা হওয়ার পরে ব্রেক নিয়ে নেন। তার ১৮ বছর পরে কামব্যাক। এটা দেখে বারবার মুগ্ধ হই যে একজন মানুষ কী দারুণ ব্যালান্স করে চলেছেন নিজের ব্যক্তিগত জীবন এবং কেরিয়ার। তিনি কিন্তু ফিল্ম কেরিয়ার ছেড়ে দেননি। নিজের পরিবারের জন্য যেমন অফুরন্ত সময় দেন, তেমনই সিনেমার জন্য। এটা কাজল ম্যামের থেকে শেখার।
কথা বলার টপিক শুধু ইন্ডাস্ট্রি নয়:
শুটিংয়ের ফাঁকে অনেক আড্ডা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই দেখেছি সেখানে বেশি কথা হয় ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে। তার অনেকটাই পিএনপিসি। কাজল ম্যাম কিন্তু এ রকম নন। আমাদের আড্ডার বিষয়গুলো কখনওই ইন্ডাস্ট্রি-কেন্দ্রিক হত না। কখনও কাজল ম্যাম আমার মা-বাবার কথা জিজ্ঞেস করেছেন, কখনও আমার প্রিয় গায়ককে নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। জোকস ক্র্যাক করতেন। ওঁর ছেলে-মেয়ের সম্বন্ধে বলেছেন। কিন্তু সিনেমার গল্প বা কার সঙ্গে কী হচ্ছে, এ সব নিয়ে উনি একবারও কথা বলেননি।
[‘অমর্ত্য-রাজনন্দিনী দু’জনেই লম্বা ইনিংস খেলবে’]